ইনসাইড পলিটিক্স

হারিসের মুক্তিতে তারেকের উচ্ছাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/03/2021


Thumbnail

একটি খুনের মামলায় দণ্ডিত হারিস আহমেদকে সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী মুক্তি দিয়েছে। অর্থাৎ তার দণ্ড মওকুফ করেছে। আর এই মুক্তির ঘটনাটি নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা আলোচনা হচ্ছে। তবে এই আলোচনায় সবচেয়ে খুশি হয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। হারিসের মুক্তির ঘটনা তারেককে আশান্বিত করেছে। তারেক উচ্ছসিত হয়েছেন এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, আল জাজিরার বহুল আলোচিত এবং বিতর্কত প্রতিবেদন " অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস মেন " প্রচারিত হবার পর হারিস আহমেদ আলােচনায় আসে। আল জাজিরার ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিলো যে, হারিস আহমেদ একজন মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল এবং দণ্ড মাথায় নিয়ে তিনি নাম বদল করে পলাতক অবস্থায় হাঙ্গেরিতে অবস্থান করছেন।  কিন্তু এরপর প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুসরণ করে হারিস আহমেদের দণ্ড মওকুফ করেছেন।  ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এই দণ্ড মওকুফ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়।

সাধারণ আইনজীবীরা মনে করেন যেকোনো দণ্ড মওকুফ বা দণ্ড স্থগিতের ক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই আদালতে আত্মসর্মপন করতে হয় এবং আদালতে আত্মসর্মপনের সাপেক্ষে দণ্ড মওকুফের আদেশ কার্যকর হয়। আইনজীবীরা আরো মনে করেন, একজন দণ্ডিত ব্যক্তি যদি পলাতক থাকেন তাহলে তার জন্য ফৌজদারি কার্যবিধি বা কোনো ধরনের দণ্ড মওকুফই গ্রহণযোগ‌্য নয়। কিন্তু হারিস আহমেদ দণ্ড মওকুফের পর দেখা যায় এই বিষয়টিতে আইনের যথেষ্ট ফাঁক ফোকর রয়েছে এবং ৪০১ ধারার যে দণ্ড মওকুফ সেখানে কোথাও আদালতে উপস্থিতি বা আত্মসর্মপনের বাধ্যবাধকতা নেই। আর এই কারণেই হারিস আহমেদের যে দণ্ড মওকুফ যেটা সরকার করেছে সেটা যথাযথ হয়েছে বলেই আইনজীবীরা মনে করছেন এবং এটির আইনগত কোনো ব্যত্যয় ঘটে নি।  আর এই ঘটনাটিই তারেক জিয়াকে উল্লসিত করেছে।

উল্লেখ্য, লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত।  মানি লন্ডারিং মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত। এই দণ্ড মাথায় নিয়েই লন্ডনে পলাতক জীবনযাপন করছেন তারেক জিয়া। যদিও তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে কিন্তু তারপরও ইন্টারপোলের রেড তালিকায় তার নাম নেই কেনো সে নিয়েও এক ধরনের বিস্ময় রয়েছে অপরাধ বিজ্ঞানীদের মধ্যে। তার নাম না থাকার পরও তারেকের আইনজীবীরা মনে করেন, যখনই তারেক দেশে ফিরবে তখনই তাকে এই দণ্ডকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে এবং আইনী লড়াইয়ে নামতে হবে। এজন্য তাকে জেলে যেতে হবে।

ইতিমধ্যে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যে আপিল করার সুযোগ, সেই সুযোগও তারেক জিয়া হারিয়েছেন। কাজেই বাংলাদেশে তারেক জিয়ার পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই তাকে জেলে যেতে হবে এমনটিই মনে করা হতো। কিন্তু হারিস আহমেদের এই দণ্ড মওকুফের ঘটনার পর বিএনপি এবং তারেক জিয়াদের মধ্যে উচ্ছাস দেখা যাচ্ছে।  তারা মনে করছেন যে, তারেক জিয়া যদি দেশেও না আসে এবং একটি সরকার যদি পরিবর্তিত হয় এবং তারা যদি বিএনপির অনুকূলে হয় তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা প্রয়োগ করে তারেক জিয়াকে সমস্ত দণ্ড থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব। এই দণ্ড মওকুফের জন্য তাকে আদালতে হাজিরা দেওয়া বা সাময়িক সময়ের জন্য হলেও জেলে যেতে হবে না। যেমনটি যেতে হয়নি হারিস আহমেদেকে। আর এটি বিএনপিকে উৎসাহিত করছে এবং এই উৎসাহ থেকে বিএনপি আল জাজিরার ইস্যু থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭