ইনসাইড পলিটিক্স

৭ মার্চকেও বিতর্কিত করতে চায় বিএনপি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 06/03/2021


Thumbnail

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকে ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর বিভিন্নভাবে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতির এক মহোৎসব চলছে বিভিন্ন সময়ে। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম-নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচারও নিষিদ্ধ ছিল। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী উচ্চারণ করা যেতো না, রাজাকার-আলবদরদের নাম নেওয়া যেত না। সেই পরিস্থিতি থেকে ১৯৯১-এর পর থেকে ধীরে ধীরে জাতির পিতা স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছিলেন। জনগণ জাতির পিতাকে স্মরণ রেখেছিল, জাতির পিতাকে হৃদয়ে ধারণ করেছিল। আর এ কারণেই বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতির যে অধ্যায়, সেই অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছে।

কিন্তু এখন বিএনপি নতুন করে ইতিহাস বিকৃতির ধারা শুরু করতে চাচ্ছে বলেই বিভিন্ন মহল ধারণা করছে। এর আগে ৭৫-এর পর বিএনপি গঠিত হবার পর জিয়াউর রহমানকে স্বঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। যদিও জিয়াউর রহমান ২৬ শে মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে যে বাণী দিয়েছিলেন সেটি ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার পুনঃউচ্চারণ মাত্র। সেই ঘোষণায় তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে। এছাড়া জিয়াউর রহমানের আগেও চট্টগ্রাম কালুরঘাট থেকে আওয়ামী লীগের নেতা হান্নান এই বাণীটি বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে পাঠ করেছিলেন। এখানেই শেষ হয়নি। ৭৫-এর পরবর্তীতে ইতিহাস বিকৃতিকারী বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার মূল যোদ্ধা এবং স্বাধীনতার মূল সৈনিক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল। বর্তমানে যখন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের ধারা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, তখন বিএনপি নতুন করে ৭ মার্চ উদযাপন করছে। এই ৭ মার্চ উদযাপনের ব্যাখ্যা কি তা এখন পর্যন্ত বিএনপি স্পষ্ট করেনি। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবরে জানা গেছে, আগামীকাল ৭ মার্চের যে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বিএনপি সেটি ইতিহাস বিকৃতির আরেকটি উৎসব হতে যাচ্ছে বলেই তথ্য পাওয়া গেছে। এখানে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলার চেষ্টা করবেন যে, ‘৭ মার্চ স্বাধীনতার কোন ঘোষণা ছিলনা। ৭ মার্চে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কোন দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়নি। বরং জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনা হয়েছিল।’ এরকম ইতিহাস বিকৃতির ধারায় ৭ মার্চকে খাটো করার জন্যই বিএনপি এই ৭ মার্চের উৎসবের নাটক করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে।

বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতিতে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখন দলটি অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছে। এরকম পরিস্থিতিতেও ৭ মার্চ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা পুনরাবৃত্তি করার যে উদ্যোগ তারা নিয়েছে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। এর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিএনপি যে আলোচনার আয়োজন করেছিল সেগুলো সবই ছিল ইতিহাস বিকৃতির বিভিন্ন ধাপ মাত্র। সেই ধারায় ৭ মার্চকে বিকৃত করার প্রক্রিয়া বিএনপি গ্রহণ করেছে কিনা সেটি হল বড় প্রশ্ন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭