ইনসাইড আর্টিকেল

নয়নাভিরাম শালবন বৌদ্ধ বিহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/09/2017


Thumbnail

ত্রিপুরার রাজারা একসময় গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপনের কেন্দ্র হিসেবে গোড়াপত্তন করেছিলেন কুমিল্লার। কুমিল্লার বুক জুড়ে রয়েছে অসংখ্য আদি নিদর্শন। প্রাচীন সভ্যতার নীরব সাক্ষী কুমিল্লা । যার অবস্থান ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাঝামাঝি। প্রকৃতির হাতে গড়া ভূমি কুমিল্লার নানা দর্শনীয় স্থানের মধ্যে শালবন বৌদ্ধ বিহার অন্যতম।



প্রাকৃতিক শোভায় নন্দিত কুমিল্লা জেলার ময়নামতি শালবন বিহার। শালবন বিহার কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৬ কি.মি দক্ষিন-পশ্চিমে ও লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানের পূর্ব দিকে অবস্থিত।

পূর্বে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি ‘রাজার বাড়ি’ নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু খননের পর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ উন্মোচিত হওয়ায় একে ‘শালবন বিহার’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। যার আসল নাম ছিল ‘ভবদেব মহাবিহার’। ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিহারটির আশপাশে একসময় শাল-গজারির ঘন বন ছিল বলেই বিহারটির নামকরণ হয়েছে শালবন বিহার নামে।



খ্রিস্টীয় সাত শতকের মধ্যভাগ হতে আট শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দেব বংশের শাসকগণ এই অঞ্চল শাসন করেন। দেব বংশের শাসনামলে চতুর্থ রাজা ভবদেব কর্তৃক এই ‘মহা বিহার’ নির্মিত হয়।

বিহারের চারদিকের দেয়াল পাঁচ মিটার পুরু। বিহারে ঢোকা বা বের হওয়ার মাত্র একটাই পথ। এ পথ বা দরজাটি উত্তর ব্লকের ঠিক মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে।



প্রতিটি কক্ষের মাঝে ১.৫ মিটার চওড়া দেয়াল রয়েছে। বিহার অঙ্গনের ঠিক মাঝে কেন্দ্রীয় মন্দির। বিহারের মাঝামাঝি এই মন্দিরটি ক্রুশ আকৃতির। বিহারে সর্বমোট ১৫৫টি কক্ষ আছে। এই কক্ষগুলোতে বৌদ্ধভিক্ষুরা থাকতেন। সেখানে তারা বিদ্যাশিক্ষা ও ধর্মচর্চা করতেন।

শালবন বৌদ্ধ বিহারের মূল ফটকের পূর্বপাশে খননের ফলে একটি প্রাচীন কূপের কাঠামো উন্মোচিত হয়। সেই সময়কার বৌদ্ধ শাসকশ্রেণি ও ভিক্ষুগণ এই কূপ থেকে পানি আহরণ করে যাবতীয় প্রয়োজন মেটাতেন বলে ধারণা পাওয়া যায়। কূপটির সময়কাল আনুমানিক সাত হতে আট শতক।



মন্দির ও মন্দিরের আশে-পাশে কয়েক দফা প্রত্নতাত্তিক খননের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পোড়ামাটির ফলক, ব্রোঞ্জের মূর্তি, নকশাকৃত ইট ও মুদ্রাসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রত্নতত্ত পাওয়া গিয়েছে। খননের মাধ্যমে যে বিপুল পরিমান প্রত্নতত্ত পাওয়া গিয়েছে তা পার্শবর্তী জাদুঘরে সঞ্চিত রয়েছে।

শালবন বিহার সপ্তাহে সাত দিনই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শুধুমাত্র বছরের দুই ঈদের দিন বিহারটি বন্ধ থাকে। সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা সরকারি ছুটির দিনগুলিতে এখানে থাকে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা।



ঢাকা থেকে শালবন বৌদ্ধ বিহার বাসে যেতে হলে নামতে হবে কোর্টবাড়ি চৌরাস্তায়। সেখান থেকে সিএনজি বা অটো যোগে সোজা বৌদ্ধ বিহারে পৌছে যাবেন। সি,এন,জি/অটো ভাড়া জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭