ইনসাইড সাইন্স

অনলাইন গেমস নাকি মৃত্যুফাঁদ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/09/2017


Thumbnail

১৪তলা বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে লাফিয়ে ১৫ বছরের স্কুল ছাত্রীর আত্নহত্যা। ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়েছে আরেক কিশোর। একই সঙ্গে সবার সামনে ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দেয় দুই বোন। পৃথক পৃথক ঘটনাগুলোকে জুড়ে রেখেছে একটি অনলাইন গেম। যার নাম ‘ব্লু হোয়েল’। গেমটির প্রতিটি ধাপ সাজানো কুৎসিত কিছু চ্যালেঞ্জ দিয়ে। কুৎসিত বলার কারণ চ্যালেঞ্জগুলো গেমারদের আত্মনির্যাতনমূলক কাজের নির্দেশ দেয়। যার চুড়ান্ত ধাপ আত্মহত্যায় গিয়ে শেষ হয়।

২০১৩ সালে শুরু হওয়া ব্লু হোয়েল গেমটির উদ্ভাবক ফিলিপ বোডিকিন একজন রুশ কিশোর। মনোবিজ্ঞানের এই ছাত্রের মতে, যাদের কাছে জীবন অর্থহীন তাদের মৃত্যুর মাধ্যমে সে সমাজকে পরিষ্কার করছে। মনোবিজ্ঞানীরদের মতে, পরিবার থেকে ভালবাসা বঞ্চিত মেয়েরাই ফিলিপের কথায় প্রভাবিত হয়েছে। প্রায় ১৬ তরুণীর মৃত্যুর পর ২০১৭ সালের মে মাসে ফিলিপ গ্রেপ্তার হলেও এই গেম আজও চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক গ্রুপ।

ছাড়া ছাড়া ভাবে এই গেমের মর্মান্তিক পরিণতির কথা হয়তো অনেকেই শুনেছেন। ৫০ দিনের এই গোমটিতে চলে গেমারদের ব্রেন ওয়াশ। তাদের জীবন কত মূল্যহীন তাই তাদের বোঝানো হয়। প্রতিদিন একটি করে চ্যালেঞ্জ। প্রতিটি চ্যালেঞ্জের ভিডিও করে নির্দিষ্ট সাইটে আপলোড করতে হয়। প্রথমে ছোট খাট চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সাহসী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি করা হয়। এরপর শুরু হয় আত্মনির্যাতনমূলক চ্যালেঞ্জ। কখনো নিজ শরীরে একাধিক সূচ বিঁধানো তো কখনো নিজের হাতকে রক্তাক্ত করা। তবে শেষের চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করা মানেই আত্মহত্যা।

ভারতের এক সাত বছরের কিশোরী ‘ব্লু হোয়েল’ বানান জিজ্ঞেস করায় আঁতকে উঠেছিল তাঁর খালা। স্কুলের কোনো বন্ধু তাকে গেমটি ইন্সটল করতে বলে। সময়মত জানার ফলে শিশুটিকে এই গেম খেলা থেকে বিরত রাখা গিয়েছিল।

সম্প্রতি মস্কোর এক স্কুল শিক্ষক ছাত্রীর আত্মহত্যার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ছাত্রী জানায় ব্লু হোয়েল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর থেকে আত্মহত্যার নির্দেশ পায় সে। প্রথমে আত্মহত্যার পরিকল্পনা থাকলেও পরে ওই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যায়।

মস্কো, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের একাধিক কিশোর কিশোরীকে এই মরণকূপ গেমটির পরিচালনার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনো গেমটি ইন্সটল হচ্ছে একাধিক দেশে। স্বেচ্ছায় গ্রহণ করছে মৃত্যু স্বাদ। ইতিমধ্যে ১০০’র বেশি আত্মহত্যার কথা জানা গেছে। আরো অনেকে হয়তো সেই দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।

গেম বলেই নিশ্চিন্ত হবেন না

সন্তান গেম নিয়ে ব্যাস্ত থাকছে তা ভেবেই খুশি হবেন না। সন্তান কোন গেম খেলছে, কী শিখছে তা থেকে, তার মানসিকতার ওপর কেমন প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে ভাবুন। ভাবতে হবে, কারণ অনলাইনে হাজারো গেমের মধ্যে ব্লু হোয়েলের মতো গেমও কিন্তু আছে। কোনো বাবা-মা সন্তানকে এমন গেম খেলতে দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন। যত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে তত ভালো্ সন্তানকে বোঝাতে হবে। জীবনের ইতিবাচক বিষয়গুলো জানাতে হবে। তাকে স্বাভাকি জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।

বাংলা ইনসাইডার/এমএ/জেডএ




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭