নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 11/04/2021
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজ মিডিয়ায় জানিয়েছেন আসন্ন লকডাউনে আক্রান্তের পরিসংখ্যান বিবেচনা করে এলাকাভিত্তিক বিভাজন বা জোনিং হবে। গত বছর এই ‘জোনিং’ শব্দটি বহুল ব্যবহৃত হয়েছিল কিন্তু এর ফলে কী উপকার হয়েছে তার কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। দেখা গেল কিছু বিশেষজ্ঞ পেপার লেখা হয়েছে, ইন্টারনেটে সেগুলো পাওয়া যায়, অনুৎপাদনশীল একাডেমিক কাজে হয়তো কেউ কেউ সেসব তথ্য ব্যবহারও করেন। পত্র-পত্রিকায় ও টেলিভিশনে ওইসব জোনের বিব্রত মানুষজনের ছবি দেখা ছাড়া এতে দেশের মানুষের কি উপকার হয়েছে তা আমরা জানি না।
করোনা সংক্রমণের বর্তমান পর্যায়ে এসে এই জোনিং আর কোন কাজে আসবে না এটা মহামারী শাস্ত্র ও স্বাস্থ্য কমিউনিকেশনের সাথে সম্পৃক্ত যে কেউ বলবেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৫দিনের সময় দিয়ে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা এসেছে। যে কারণে সংক্রমণ এলাকা থেকে অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশন ঘটেছে অর্থাৎ অনেকেই স্থান বা বাসা ছেড়ে অধিকতর নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। সংক্রমণ বাড়ছে কিন্তু এমন নয় যে, কোন বিশেষ ভৌগোলিক এলাকায় তার প্রবণতা বা উৎপত্তির ঝুঁকি বেশি। পুরো দেশই এখন অধিকতর সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে আছে এবং আমাদের বিশেষজ্ঞ গবেষকগণ প্রাণান্ত উদ্যোগে এই ভাইরাসের গতি প্রকৃতি বুঝবার চেষ্টা করছেন। গবেষণায় এই দেশে বিশেষ একটা টাকা পয়সা খরচ করা হয় না ফলে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষকগণ যে হাত গুটিয়ে বসে আছেন তা বোঝাই যাচ্ছে আর সেসব ক্ষেত্রে মিডিয়ায় এসে পান্ডিত্য ঝাড়ছেন কতিপয় অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমনকি পতঙ্গ-বিশারদও যাদের বর্তমান ভাইরাস প্রকৃতির সাথে কোন একাডেমিক সংযোগই নেই। দেশে এপিডেমিওলজি বা মহামারী শাস্ত্র, জৈব পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করেন এমন অনেক গবেষক আছেন যাদের টেলিভিশনে দেখা যায় না, শুনেছি তাঁদের নাকি ডাকাই হয় না বা তাঁদের কাছে কেউ যায় না কারণ একদল ‘গবেষক’ সবজান্তা হয়ে সব দখল করে বসে আছেন।
সেই ভূতের ওপর ভর করে আইইডিসিআর আবার নতুন হিসাব দিল ঢাকা শহরের কোন এলাকা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে বেশি! আর সেই সংবাদ ঘটা করে ছেপেছে ডেইলি স্টার। মার্চের ২৭ থেকে এপ্রিলের ২ তারিখ পর্যন্ত ডেটা নিয়ে একটা হিসাব করে আইইডিসিআর ঢাকার কয়েকটি এলাকায় ৩০% আর অপর কিছু এলাকা ২০% ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে যে পরিসংখ্যান বাজারজাত করেছে তার উপর ভিত্তি করে যদি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয় এই জোনিং-এর কথা বলে থাকেন তো সেটা ভুল হবে। কারণ ইতোমধ্যে অনেক আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যত্র চলে গেছেন ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অনেক মানুষ নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছেন যে কারণে সরকার ‘সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন’ দেবার কথা যুক্তিসঙ্গত কারণেই বলেছে।
ফলে জোনিং চিন্তা বাদ দিতে হবে। এতে রাজাবাজারের মতো কোন কোন এলাকার মানুষকে বিব্রত বা অপদস্ত করা হবে। তার চেয়ে দেশব্যাপী সকল অনুশাসন মানিয়ে কঠোর লকডাউনের কোন বিকল্প নেই। শুধু ভাবতে হবে কেমন করে সবাই ঠিকমতো সেবা পাবে তা স্বাস্থ্যের হোক বা পরিবারের জন্যে জরুরী বাজার সদাই বা শিশুদের সমস্যা মোকাবেলার জন্যে হোক। ব্যবস্থাপকের নজর দিতে হবে ব্যবস্থাপনায় আর গবেষকদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে মোকাবেলার কৌশল। কিন্তু এমন কৌশল নয় যে সরলমনে সরকার সব বিশ্বাস করে শুধু অর্থের জোগান দেবে আর কাজের কাজ কিছু হবে না।
রেজা সেলিম, উন্নয়নকর্মী
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭