নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 12/04/2021
করোনায় আক্রান্ত বেগম জিয়া কেমন আছেন এই প্রশ্ন অনেকের। বিএনপি নেতাকর্মীরা উৎকণ্ঠার সময় কাটাচ্ছেন। বেগম জিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত ভালো আছেন। শুধু তিনি নয়, তার সঙ্গে যে আর নয় জন গৃহকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন তারাও ভালো আছেন। বেগম খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন এখন পর্যন্ত ভালো আছে। যদিও তার উচ্চ ডায়াবেটিস আছে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার প্রেশার এখন পর্যন্ত ঠিকঠাক আছে। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার জ্বর, গলাব্যথা বা অন্য কোনো উপসর্গ নেই।
চিকিৎসকরা বলছেন যে, নতুন ধরনের যে করোনা সংক্রমণ সেটি একটু ভিন্ন প্রকৃতির। প্রথম দফায় বাংলাদেশে যে করোনা ধরা পড়েছিল সেটিতে প্রথমদিকেই লক্ষণগুলো স্পষ্ট হতো এবং ৭ দিন পর আস্তে আস্তে আক্রান্ত রোগী ভালো হয়ে থাকতেন, ১৪ দিনের মাথায় তিনি সুস্থ হতেন। কিন্তু এবারের যে করোনার ধরন সেটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। চিকিৎসকরা বলছেন এটি দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন। প্রথম চার-পাঁচদিন আক্রান্ত ব্যক্তির তেমন কোনো লক্ষণ ধরা পড়েনা। পঞ্চম বা সপ্তম দিন থেকে তার অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে এবং ১৪ দিনের পর যখন তিনি করোনা থেকে মুক্ত হন তখন পোস্ট কোভিড সিম্পটমে তিনি আক্রান্ত হন এবং হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের করোনার যে উচ্চ মৃত্যু তার প্রধান কারণ হলো শেষদিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি।
তবে করোনার চিকিৎসা করেন এমন চিকিৎসা বলছেন করোনার মোকাবেলায় একজন মানুষের মানসিক দৃঢ়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর বেগম জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন, মানসিকভাবে বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত সবল আছেন এবং তার মানসিক শক্তি এখনও অটুট রয়েছে। তিনি মোটেও নার্ভাস হননি। বরং তিনি স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলছেন। দুইজন নার্স সেখানে নিযুক্ত করা হয়েছে যারা বেগম জিয়ার সার্বিক দেখাশোনা করছেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা ঠিকঠাকভাবে দেখছেন। বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিএনপির চিকিৎসকদের একটি বিশেষ টিম গঠিত হয়েছে এবং তারা একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। তারা প্রথম লক্ষ্য রাখছেন যে বেগম খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট হয় কিনা এবং তার অক্সিজেন প্রবাহ ৯০-এর নিচে নামে কিনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেগম খালেদা জিয়ার একজন চিকিৎসক বলেছেন, যদি বেগম খালেদা জিয়ার অক্সিজেন প্রবাহ কম হয় সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে। বাড়িতে অক্সিজেন দেয়ার কোনো চিন্তা-ভাবনা তাদের মধ্যে নাই। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার তাপমাত্রা বা অন্যান্য উপসর্গগুলো যদি ধরা পড়ে তাহলে তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। তবে এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়ার চিন্তা ভাবনা নেই। তবে বেগম জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন যে, হাসপাতালে নেয়া হবে কি হবেনা সেটির অপেক্ষা না করে ইতিমধ্যেই দুটি বেসরকারি হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য কেবিন বুক করে রাখা হয়েছে এবং তার যেন সঠিক চিকিৎসা হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আবার লন্ডন থেকে ডা. জোবায়দা পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন। গতকাল এবং আজও তিনি ভিডিও কলের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং বিভিন্ন বিষয়গুলো নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। জানা গেছে যে, ডা. জোবায়দা খালেদা জিয়াকে ঔষধ নির্ভর চিকিৎসা না নিয়ে ন্যাচারাল ট্রিটমেন্টের উপর আগে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছেন। এজন্য তিনি তাকে নিয়মিত গরম পানির ভাপ দেয়া, হাঁটাচলা করা, ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া ইত্যাদি টিপস দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে চিকিৎসকের উদ্বেগের প্রধান কারণ হল যে তিনি একাধিক রোগে আক্রান্ত এবং অত্যন্ত বয়স্ক। এ ধরনের ব্যক্তিরা করোনায় আক্রান্ত হলে হঠাৎ করেই ঝুঁকিতে পড়েন। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় তার মধ্যে তেমন কোনো ঝুঁকি দেখা যায়নি।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭