ইনসাইড থট

ধর্মভীরু বাংলাদেশে হেফাজতের ধর্মীয় অপরাজনীতিকে অবহেলা করা ক্ষতিকর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/04/2021


Thumbnail

গত ২৬ ও ২৭ মার্চ ২০২১, শুক্র ও শনিবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও পবিত্র জুমা’র দিনে ‘হেফাজতের তাণ্ডব‘ স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতি দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে অবলোকন করেছে। পরবর্তিতে এই নিয়ে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বিস্তারিত লেখালেখি হয়েছে। বাংলা ইনসাইডারে প্রকাশিত ‘ঈদের পর হেফাজতের দুর্বার আন্দোলন’ শীর্ষক সংবাদ এর প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতের ব্যানারে বিএনপি-জামায়াত ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সরকার উৎখাতের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালীন স্বাধীনতা বিরোধীদের এই আস্ফালন আমাদের স্বাধীনতার চেতনায় আঘাত করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশে ওরা প্রকাশ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে আঘাত করার ধরন দেখে মনে হয়েছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে আমাদের রক্তে কেনা স্বাধীনতাকে অপমানিত করার হোলি খেলায় ওরা মেতে উঠেছিল এবং স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে ‘ওরা’ বঙ্গবন্ধুকেই শাস্তি দেওয়ার মনের খায়েশ এর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।

বাংলাদেশ ধর্মভীরু দেশ। শুধুমাত্র ধর্মীয় দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান মিলে পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। এই ধর্মীয় অপরাজনীতির যাঁতাকল থেকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মালম্বীদের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের কাল রাতে ১৯৭১ এর পরাজিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ভূলন্ঠিত করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। রাজাকারদের দোসর জিয়াউর রহমান, গোলাম আযম, শাহ আজিজ সহ অসংখ্য রাজাকারকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির মূল ধারায় প্রতিষ্ঠিত করে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয় দুটি ধারার, স্বাধীনতার পক্ষের ও স্বাধীনতার বিপক্ষের।

১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে এসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ করে নেতৃত্ব দিতে থাকেন।

এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ আজ অনুন্নত দেশের মাত্রা ছাড়িয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাভুক্ত হয়েছে। তাই দেখে দিশেহারা স্বাধীনতা বিরোধীরা।

আমরা ছাত্র ছাত্ররাজনীতি জীবনে রাজনীতির চর্চা করেছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পতাকাতলে ভিড়ানোর জন্য নিজেদের আচরণ, ব্যবহার, কথাবার্তা দিয়ে নবাগত ছাত্রদের আকৃষ্ট করতাম। পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বানী শুনাতাম, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে লেখা বই পড়ানোর ব্যবস্থা করতাম। পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ধর্মীয় অপরাজনীতিও দেখেছি। শিবিরের নেতাকর্মীরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরে গ্রামের সহজ সরল ধর্মপ্রাণ প্রভাবশালী পরিবারে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতো। পরবর্তিতে এই বৈবাহিক সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এটা ছিল রাজনৈতিক অপকূটকৌশল, ধর্মকে ব্যবহার করে অপরাজনীতি। আমরা বিরোধীদলীয় রাজনীতি করার সময়ে বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারণাকালে শুনেছি, স্বাধীনতাবিরোধীরা বলেছে, আওয়ামী লীগ হিন্দুদের সংগঠন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশ হিন্দুদের দেশ হয়ে যাবে, মসজিদে আজান বন্ধ হয়ে যাবে ইত্যাদি, ইত্যাদি। এটাও ছিল তাদের রাজনৈতিক অপকূটকৌশল। 

২০১০ সালে মাদ্রাসা ছাত্রদের সমর্থন নিয়ে হেফাজতে ইসলাম নামক সংগঠনের সৃষ্টি হয়েছিল। গত ২৬ ও ২৭ মার্চ সংঘটিত তান্ডবের ন্যায় ২০১৩ সালের ৫ মে এই একই হেফাজতের ব্যানারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল।

আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ সাধারণত মাদ্রাসা ছাত্রদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে, মাদ্রাসা ছাত্রদের প্রতি একটু আলাদা স্নেহ, ভালোবাসা থাকে। এই স্নেহ, ভালবাসা একান্তই মানবিক ও ধর্মীয় বিবেচনায় করা হয়ে থাকে। মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের খাবারের জন্য চাল সরবরাহ করা, মাদ্রাসা ফান্ডে নগদ অর্থ প্রদান, বিভিন্ন উৎসবে মাদ্রাসা ছাত্রদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া, ইত্যাদি কাজগুলো সমাজের সকল স্তরের মানুষ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই করে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি লক্ষনীয় হলো মাদ্রাসা শিক্ষকদের সহায়তায় মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বিএনপি-জামাতের স্থানীয় নেতারা বেশি বেশি আগ্রহী হচ্ছে। এমনকি নির্বাচনের মত ঘটনাও ঘটছে। এটা সমাজে শক্তি বৃদ্ধি করার বিএনপি-জামাতের কূটকৌশল মাত্র।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন ধর্মপ্রাণ বাঙালি নারীর প্রতীক। বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা ছাত্রদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে একান্ত মানবিক কারণে এবং ধর্মীয় বিবেচনায় কওমি মাদ্রাসার ডিগ্রিকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। অথচ ধর্মীয় অপরাজনীতির ধারকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই উদার মানবতা ও ধর্মীয় অনুভূতির অপব্যবহার করছে।

করোনা সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ আছে। অথচ একই সরকারের অধীনে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও মাদ্রাসা ছাত্রাবাসগুলো যথারীতি খোলা রয়েছে। তবে কি করোনা মাদ্রাসা ছাত্রদের সংক্রমিত করবে না? ধর্মের প্রতি ভীরুতা থেকেই সরকার এই অসংগত, অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। 

অথচ ধর্মীয় অপরাজনীতির ধারকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি অপব্যবহার করে ওরা অপরাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে। আজকে জারা হেফাজতের নেতা, ঐ সকল নেতাদের সকলেই কোন না কোন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বা কর্মকর্তা। মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। আমাদের সমাজে মসজিদের আয়ব্যয় হিসাব থাকলেও মাদ্রাসা ছাত্রদের জন্য প্রাপ্ত সাহায্যের ও আদায়কৃত দানের হিসাবের বালাই নেই। মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে সমাজের লেবাসধারী ধর্মীয় নেতারা এবং চুপসে যাওয়া বিএনপি-জামাতের নেতারা অত্যন্ত সুকৌশলে করোনাকালীন সময়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দীর্ঘ ১৩ বৎসর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিলেও, স্বাধীনতা বিরোধীদের কূটকৌশল থেমে নেই। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মূলধারার রাজনীতিতে স্বাধীনতাবিরোধীদের যে অনুপ্রবেশ শুরু হয়ছিল তা আজও চলমান। আমরা লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব পর্যায় পর্যন্ত স্বাধীনতাবিরোধীরা অনুপ্রবেশ করছে। আমাদের সিনিয়র নেতাদের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে হাইব্রিডরা আওয়ামী লীগ এর মধ্যে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে স্বাধীনতা বিরোধীদের বাধাহীনভাবে দলের এর বিভিন্ন পদ-পদবীতে অধিষ্ঠিত করছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আওয়ামীলীগের প্রাণশক্তি তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠন। ১/১১ পর সংস্কারবাদীদের খপ্পর থেকে আওয়ামী লীগকে রক্ষা করেছিল এই তৃণমূল। সেই তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকরা আজ দিশেহারা। তৃণমূলের পদ-পদবী আজ সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াত ও সুবিধাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে। আওয়ামী লীগের কর্মীগড়ার পাঠশালা বাংলাদেশ ছাত্রলীগে রাজনৈতিক চর্চা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। কর্মী সংগ্রহের অংগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহও একই ধারায় প্রবাহিত। সুযোগ বুঝে সুবিধাবাদী চরিত্রের বিএনপি-জামাতের লেবাসধারী লোকগুলো সুকৌশলে সকল সংগঠনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। সংগঠনে ওদের প্রভাব এতো বেশি হয়েছে যে, বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী জনৈক হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য ঢাকা মহানগরীর একটি সংগঠনের ৪৩ জন নেতা উপস্থিত হয়েছিলেন। অথচ একই সপ্তাহে মহানগর শাখার ঐ সংগঠনের বর্ধিত সভায় ৪৩ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন না। 

রাজনৈতিক কূটকৌশলের অংশ হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততা রয়েছে, আত্মীয়তার সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন অনেক ছাত্রনেতা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে। ঐ সকল শিবির সম্পৃক্ত আত্মীয়তার কারণে এই আওয়ামী লীগ আমলে শিবিরের নেতাকর্মীরা সরকারের, দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে।

ইতিমধ্যে শিবিরের সাবেক ছাত্রনেতারা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়ে নিজ নিজ বলয় সৃষ্টি করছে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, একই সংগঠনের সভাপতি গ্রুপের পোস্টার-ফেষ্টুনে সাধারণ সম্পাদকের ছবি দিতেও কার্পণ্য করে। এমনকি কোন এলাকায় সভাপতি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিলেও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কেহ সভাপতির সাথে দেখা পর্যন্ত করে না। এখানে রাজনৈতিক আদর্শের কোন বালাই নেই। 

শিবির সম্পৃক্ত নেতারা সমাজের অর্থবিত্তশালী ব্যক্তিদের পদ-পদবী দিয়ে সমাজ ও সংগঠনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করছে। ফলে রাজনৈতিক অঙ্গন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে উঠা নেতাদের নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পরছে, তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের নিয়ন্ত্রনে চলে যাচ্ছে। 

ফলশ্রুতিতে, নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী, রাজধানীর দোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সরকারী সিদ্ধান্তের বিরোধিতাকারী হেফাজতের সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ন্যাক্কারজনক আপোষকামীতা করতে দেখা গেছে। এবিষয়ে গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন ভার্সনে বানী ইয়াসমিন হাসি লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননাকারীদের বিরূদ্ধে রাজধানীর দোলাইরপাড়ে  মহাসমাবেশ ছিল গত ৫ ডিসেম্বর। ঐ সমাবেশটা আয়োজন করতে বেশ বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো আয়োজকদের। বাধাটা কে দিয়েছিলো জানেন? আওয়ামী লীগের এক শীর্ষনেতা। প্রোগ্রামের আগের রাতে এবং প্রোগ্রামের দিন সকালে জনে জনে ফোন করে প্রোগ্রামে যেতে মানা করা হয়েছিলো। ‘বর্তমান সরকার, প্রশাসন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অংগ সংগঠনে সরাসরি হেফাজতমনস্ক এবং পৃষ্ঠপোষকতাকারীর সংখ্যা নেহায়েত কম না। ছায়ার সাথে যুদ্ধ করার আগে নিজের ঘর কালসাপ মুক্ত করা উচিত।

নেতা বানানোর সময় পকেটের লোক খোঁজেন! কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত যে বিভক্তি সেটার দাম বেশ চড়া মূল্যেই চুকাতে হবে।.......,,‘
এমনি অসংখ্য অভিযোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিতভাবে জমা দেওয়া সত্ত্বেও বিষয়সমূহ গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছে। সকলেই মহাব্যস্ত। সরকার বিরোধী বা স্বাধীনতা বিরোধীদের দমনে প্রশাসনের পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করা জরুরি। প্রশাসনের মধ্যেও স্থবিরতা বিরাজ করছে। সচিবালয়ে কর্মরত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের জনৈক সাবেক সভাপতি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,‘ বিগত বছরসমূহে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের‘ যে সকল নেতাকর্মী বিসিএস এ উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্যাডারের যোগদান করেছিলেন, উনারা কোথায় আছেন‘?‘ সচিবালয়ে কান পাতলেই শোনা যায়, প্রশাসনের নীতিনির্ধারকগণ প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নীরব, চুপচাপ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারে বিএনপি-জামাত ঘরানার কর্মকর্তারাই চুপচাপ নীরবে থেকে সুকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবীসমূহ কব্জা করে নিচ্ছে। ফলে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির ঘরানার কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবী বিহীন পরে আছে, বা পদোন্নতির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করাতে পারছেন না।

বিরাজমান এমন পরিস্থিতিতে হেফাজতের ঘোষণা অনুযায়ী ঈদের পরের আন্দোলনের হুমকিকে হেলা করার সুযোগ নাই। কারণ সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে আছে। আওয়ামী লীগ এর তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপি-জামায়াতের লেবাসধারী স্বাধীনতা বিরোধীরা যেভাবে শিকড় গেড়ে বসেছে, এ ব্যাপারে নড়চড়ে বসতে হবে। সংগঠন ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। যোগ্য ব্যক্তি সংগঠনের উপযুক্ত পদে আসীন করে সংগঠনকে দ্রুত তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গোছানো জরুরি প্রয়োজন। হাইব্রিড আওয়ামী লীগার এর দীর্ঘ তালিকা প্রস্তুত হয়েছে জানি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েও কেন, কোন কার্যকর ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে না, এটাও রহস্যময়। দ্রুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার বিরোধী এই সূক্ষ ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে তৃণমূল পর্যায়ে দৃষ্টি দিতে হবে। ধর্মীয় লেবাস ধারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে মুক্ত রাজনৈতিক চর্চা শুরু করতে হবে। ধর্মীয় অপরাজনীতির বিষয়টি অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই, সময় নষ্ট করার সময়ও হাতে নেই।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭