ইনসাইড আর্টিকেল

অমরত্বের হাতছানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/09/2017


Thumbnail

প্রতিটি মানুষই অমরত্ব চায়। বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, যারা দেশ ও জাতির জন্য সারা জীবন কাজ করে গেছে, তারা চান দেশ ও জাতির কাছে তাদের কাজের জন্য যেন তারা অমর হয়ে থাকেন। যেমন আব্রাহাম লিংকন। ১৮৬৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার অবসান ঘটিয়ে ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামীদের একজন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী। অহিংসনীতি ও ভালবাসা দিয়েই বিশ্বমানবের মন জয় করেছেন তিনি।  অহিংস আন্দোলনের নেতা হিসেবেও তিনি অমর হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায়। তেমনি অমর হয়ে আছেন জর্জ ওয়াশিংটনও।

‘আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায়, এই মানুষই হিমালয়। তাই আমার হিমালয় দেখা হয়ে গেলো’-এভাবেই হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করে কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিস্ট বিপ্লবের কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর সমগ্র জীবনব্যাপী একটিই সাধনা করেছেন, আর তা হচ্ছে বাংলা ও বাঙালির মুক্তির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। ইতিহাসের পাতায় তিনি অমর হয় আছেন বাঙালি জাতির অনন্য নেতা হিসেবে। আজ তাঁর কন্যা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাঙালি জাতির জন্য এমন অনেক কাজ করেছেন যেজন্য তিনি আলচিত এবং প্রশংশিত। আর এসব কাজের জন্য বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় তিনি অমর হয়ে থাকবেন। ১০ কারণে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন:

১। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার: ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা গণহত্যা, নারী নিপীড়ন, লুটপাট এবং অগ্নি সংযোগের সঙ্গে জড়িত ছিল গুরুত্ব সহকারে তাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং বিচার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে শাস্তি দেয়া দরকার ছিল। প্রথম দিকে কিছুসংখ্যক ব্যক্তিকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গ্রেফতার ও আটক রাখার পর বিভিন্ন কারণবশত তাদের সবাইকেই ছেড়ে দেয়া হয়। তাদের অনেকেই অনেক প্রভাবশালী পর্যায়ে রয়েছেন, অনেকে দেশের বাইরে যেয়ে খুঁটি  গেড়েছেন। কেউ ভাবতেও পারেনি দেশের মাটিতে তাদের বিচার হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা তা করে দেখিয়েছেন।

২। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: পাহাড়সম বাধা দূর করে এবং নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার করেছেন। এ জন্য বাঙালি জাতি তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

৩। পার্বত্য শান্তি চুক্তি: ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংঘাতের। আজ ওই দিনকে স্মরণ করলে, স্মরণে আশে প্রধানমন্ত্রীর নাম।

৪। সোশ্যাল সেফটি নেট: ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো বয়স্ক/বিধবা ভাতার মতো কর্মসূচি নিয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ শুরু করে, যা সরকারের পরবর্তী মেয়াদগুলোতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতার মত অনেকে সুবিধাই যুক্ত করে সোশ্যাল সেফটি নেট বাস্তবায়ন করে সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৫। নারীর ক্ষমতায়ন: আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকারও নারী। সেনাবাহিনী, পুলিশ, সচিব, বিচারপতিসহ বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ে এখন নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমাদের এই রক্ষণশীল সমাজে নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে অনেকেই বিস্মিত হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে এবং নারীর যথাযথ মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছেন বলেই আজ নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে।

৬। হত্যা ক্যু: বার বার হত্যা ক্যু, আর্মির হাতে ক্ষমতা যাওয়ায় একধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আশার পর এই সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান করেন। তিনি সংবিধানের ৭ এর ‘ক’ উল্লেখ করেন “প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে।’

৭। রাজনীতিতে ভাংচুর, হরতাল বন্ধ: বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকেই রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছিল একটি প্রধান সমস্যা। তখনকার রাজনীতি ছিল জ্বালাও-পোড়াও, ভাংচুর, হরতালের রাজনীতি। এতে মানুষ যেমন প্রাণ হারাত তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হত দেশের অর্থনীতি। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর এই জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি বন্ধ করে দেন তিনি। আজ দেশে হরতাল একটি বিলুপ্ত শব্দ।

৮। জনগণের ক্ষমতায়ন: বিশ্বের কোনো রাষ্ট্র নেতার নিজস্ব কোন দর্শন নেই, কিন্তু শেখ হাসিনার বিশ্বশান্তির দর্শন ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ ২০১২ সালে জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। এই দর্শনে বৈষম্য হ্রাস এবং অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

৯। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমুদ্রজয়: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত এবং মিয়ানমারের সমুদ্র সীমা বিরোধ ছিল দীর্ঘদিনের। শেখ হাসিনা সামরিক পন্থায় না গিয়ে আন্তজার্তিক আদালতের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই বিরোধ নিস্পত্তি করেন।

১০। ৩৬ বছর ধরে নেতৃত্ব: তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক দলেকে গণতান্ত্রিকভাবে টানা ৩৬ বছর ধরে সুষ্ঠুভাবে নেতৃত্বে দেওয়া অনেক বড় একটা বিষয়। আর এ জন্য বাঙালি জাতির মনে প্রানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজীবন অমর হয়ে থাকবেন।


বাংলা ইনসাইডার/আরএস/জেডএ




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭