নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 25/04/2021
ফুল তার সৌন্দর্য দিয়ে মানুষকে কাছে টানে। যেমন- কাছে টানে প্রেয়সীর গোপন অভিসার। কৃষ্ণচূড়া, লাল টগবগে এক ফুল। প্রখর রোদে পোড়া প্রকৃতি যেন নিজেও তার প্রাণ ফিরে পায় কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটার মাঝে। পথচারীর পথচলাও কিছুটা থেমে যায় এই ফুলের দিকে চেয়ে। উষ্ণ আবহাওয়ায় দৃষ্টি ও মনকে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিতে কৃষ্ণচূড়া ফুলের কোনো জুড়ি নেই। এই কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে কবি কাজী নজরুল ইসলাম পর্যন্ত মুগ্ধ হয়েছিলেন। প্রেমে পরেছিলেন এই ফুলের। তাই তিনি লিখেছিলেন,
‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-
আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’
তার এই মনোমুগ্ধকর গানে আমরা উপলব্ধি করি কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। গ্রীষ্মজুড়ে এই গাছে ফোটে অজস্র ধারায় ফুল। প্রকৃতির এই রুক্ষ-শুষ্ক মৌসুমে কৃষ্ণচূড়া আসে মানব মনকে শীতল পরশ বোলাতে, ক্লান্তি দূর করে নব উদ্যমে জাগিয়ে তুলতে। রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার রঙের সাথে প্রেমের এই যে সমন্বয় তা আর কিছুতেই নেই।
রূপ-রঙ নিয়ে লাল কৃষ্ণচূড়া চোখের সামনে যখন ফুটে থাকে, তখন অনবদ্য এই ফুলের মাধুর্য অবলোকন করে, আমরা প্রত্যেকেই আনমনে শিল্পী কিশোর কুমারের গান গেয়ে দেই- ‘এই সেই কৃষ্ণচূড়া, যার তলে দাঁড়িয়ে, চোখে চোখ হাতে হাত, কথা যেত হারিয়ে।’ হারিয়ে যেতে চাওয়া একটা অভিলাষ মাত্র। তবে কৃষ্ণচূড়া ফুলের কাছে হতাশার যেন লেশমাত্র স্থান নেই, কেবলই প্রফুল্লতা।
টকটকে লাল অথবা গাঢ় কমলা লাল ছোপে ভরা কৃষ্ণচূড়া আমাদের মন রাঙিয়ে দেয়। গ্রীষ্মের খরতাপে শরীর মন যখন ক্লান্ত, তখন ক্লান্ত-শ্রান্ত মনকে হঠাৎ বৃষ্টির মতো জুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে একটি মাত্র গুচ্ছ ফুলের বৃক্ষ- কৃষ্ণচূড়া।
কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ যার পত্র-পল্লব এবং আগুনলাল ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। এর আদিনিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে। উষ্ণ ও শুকনো আবহাওয়া এ ফুলের উপযোগী। হংকং, ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ আরও অনেক দেশেই কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে। তবে ফুল ফোটার সময়কাল একই নয়, ভিন্ন ভিন্ন দেশে এটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আবির্ভূত হয়। ভিনদেশি হওয়ার পরও কৃষ্ণচূড়া আমাদের দেশি ফুলের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে। শাখা পল্লবে ছড়ানো চার পত্রবিশিষ্ট এ ফুল উজ্জ্বল লাল, কমলা বা এদের সংমিশ্রণে হয়। উষ্ণ আবহাওয়ার উপযুক্ত এ বৃক্ষ নিজস্ব সৌন্দর্যে অতুলনীয়।
এক রাজকবি কৃষ্ণের মাথার চূড়ার বর্ণনা করতে গিয়ে রক্তবর্ণ এই ফুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। সেই থেকে কৃষ্ণচূড়া বলেই ডাকা হয়। অন্য দিকে কৃষ্ণের প্রেয়সী রাধাকে উপলক্ষ করে রাধাচূড়া নামকরণ করা হয়। সময়ের বিবর্তনে সেই কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়ার সৌন্দর্য ও সাদৃশ্য ভারতীয় উপমহাদেশে তরুণ তরুণীর কাছে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭