ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনা বাজার?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 29/09/2017


Thumbnail

যদি চীনা পণ্য আমদানির ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক বসিয়ে দেন তাহলে তিনি বাণিজ্য যু্দ্ধ করছেন। সৌভাগ্যবশত, ট্রাম্প এ বিষয়ে কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন। কারণ উত্তর কোরিয়াকে দমাতে চীনকে প্রয়োজন তাঁর। কিন্তু এখানেই গল্পের শেষ নয়। চীনা শিল্প নিয়ে উত্তেজনা এ মুহূর্তে বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থাপনার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি গত সপ্তাহে চীনকে নজিরবিহীন হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছে। যাকে বর্তমান বাণিজ্য নীতি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এমনকি চীনের বৈশ্বিক বাজার দখল নিয়ে চিন্তিত ইউরোপীয় ইউনিয়নও। শুধু তাই নয়, চীনের অর্থনীতি আধুনিকীকরণ এ হুমকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

চীনকে নিয়ে চিন্তার প্রধান কারণ হচ্ছে, বিশ্বের সকল কোম্পানিকে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে শুধুমাত্র দেশটির কারণে। চীন প্রথম দেশ নয় যেখানে শিল্পায়ন হয়েছে। কিন্তু চীন খুব দ্রুত বিশ্ববাজার ধরে ফেলেছে যা অন্য কোনো দেশ পারেনি। কয়েক দশক আগেও চীনে শিল্প বলতে ছিল জিপার, মোজা ও সিগারেট লাইটার। বর্তমানে দেশটি সারাবিশ্বে নতুন নতুন প্রযুক্তির অগ্রদূত হিসেবে কাজ করছে।

চীনের এই অর্জন বিশ্বকে আরও বেশি চিন্তিত করে তুলেছে। কারণ ভবিষ্যতে বিশ্ব অর্থনীতিকে এমন একটি শক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে যাচ্ছে যারা আসলে অসদুপায় অবলম্বন করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। দিন দিন প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র হারাচ্ছে এবং চাকরির বাজারে বিশাল সংকট তৈরি হচ্ছে। যার ফলে সেখানে ব্রেক্সিট ও ট্রাম্পের মতো নেতার উত্থান হয়েছে।

সন্দেহাতীতভাবে, চীন বাজার ধরে রাখতে নিজেদের মুদ্রার বিনিময় হার কম রেখেছে। এতে রপ্তানীকারকরা বাণিজ্যে লাভ করছে। এই সস্তা মুদ্রা চীনা সরকার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংস্থাঢ ঢালছে। আর তাদের সাইবার-স্পাই তথ্য চুরি করছে। গণতান্ত্রিক দেশ না হয়েও চীন সামনে আগাতে এই রাষ্ট্রশাসিত সংস্থা দিয়ে চুরি ও জোচ্চুরি করছে। চীনা প্রতিযোগিতার তিনটি মাত্রা রয়েছে। অবৈধ, তীব্র ও অন্যায্য। প্রত্যেকেরই ভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন।

২০১৪ সালে পাঁচ চীনা সেনাসদস্যর বিরুদ্ধে মার্কিন পরমাণু, সৌর ও ধাতুর কোম্পানিতে হ্যাক করার অভিযোগ আসে। এভাবেই চীন অবৈধ পথ অনুসরণ করে। তবে আশার কথা চীন এ ধরনের অপরাধ করা কমিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, তীব্র কিন্তু বৈধ প্রতিযোগিতা। চীনা কোম্পানি প্রমাণ করেছে তারা খুব ভালো পণ্য কম দামে দিতে পারে। চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগ দেয়ার ১৫ বছর পর ভোক্তারা টেলিভিশন ৯০ শতাংশ কম দামে পেয়েছে। চীনের বিশ্বে রপ্তানী ১৪ শতাংশ বেড়েছে। চীন প্রযুক্তি খাতে নতুন খ্যাতি অর্জন করেছে। যদি তথ্যকে তেল হিসেবে ধরা হয় তবে চীনে এর প্রচুর পরিমাণের মজুদ রয়েছে। যদিও তাদের কোনো গোপনীয়তা নীতি নেই। শেষটি হলো অন্যায্য প্রতিযোগিতা যা নিয়ম ভাঙছে না কিন্তু মেনে নেয়া কঠিন। চীনে কোনো বাইরের কোনো কোম্পানি বাজার তৈরি করতে চাইলে এর বিনিময়ে সরকার তাদের প্রযুক্তি দাবি করে। চীনের আকর্ষণীয় খাতে বিনিয়োগ করতে দেয়া হয় না। কিন্তু বাইরের দেশে একই খাতের কোম্পানিকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ দিয়ে থাকে।

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনের এই আধিপত্য দমাতে চায় তবে এ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এর প্রতিকার হিসেবে আন্তর্জাতিক আদালত বা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাহায্য নিতে পারে তারা। প্রত্যেকটি কোম্পানিকে নিজেদের সাইবার চোরের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। সরকার ও কোম্পানি উভয়কে চেষ্টা করতে হবে শিক্ষা ও গবেষণা খাত উন্নত করতে। চীনকে বাধ্য করতে হবে যেন তারা বাইরের দেশের কোম্পানিকে অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রবেশ করতে দেয়। ইউরোপীয় ও মার্কিন সরকারকেও তাদের দেশে চীনা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় যাচাই-বাছাই করতে হবে। তাহলেই হুমকি মোকাবেলা সম্ভব হবে।


বাংলা ইনসাইডার/আরএইচবি




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭