ইনসাইড পলিটিক্স

কেমন সাধারণ সম্পাদক চায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 03/05/2021


Thumbnail

করোনার মধ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অখন্ড অবসর। আর এই অখন্ড অবসরে আত্মসমালোচনা এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন গুজব-গুঞ্জন নিয়ে মুখরোচক আলোচনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। আওয়ামী লীগ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের এখন মূল আলোচনার বিষয় হলো তাদের সাধারণ সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে ছোট ভাইয়ের সমালোচনা। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সাধারণ সম্পাদক কি করছেন, হেফাজতের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক কেমন হবে, কিভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করা যায়, আওয়ামী লীগের ভেতরে অনুপ্রবেশকারীরা কিভাবে শক্তিশালী হচ্ছে ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই করোনাকালে রাজনীতির আড্ডায় ঝড় তোলে। 

এর মধ্যেই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় বিষয় এসে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর ভূমিকা। গত কিছু দিন ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে সরাসরি আক্রমণ করছেন তার ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান কাদের মির্জা। আর এই প্রেক্ষাপটেই আওয়ামী লীগের মধ্যে আত্মবিশ্লেষণ, আত্মঅন্বেষণ চলছে। তারা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনেক সীমাবদ্ধতা তুলে ধরছেন ওবায়দুল কাদেরের। শুধু সীমাবদ্ধতাই নয়, তারা মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তৃণমূল যেটি প্রত্যাশা করে সেটি তিনি পূরণ করতে পারেন নি। আগামী দিনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের তৃণমূলের চাহিদা কি, আকাঙ্খা কি এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কথা বলার পর তারা পাঁচটি যোগ্যতার অপরিহার্যতার কথা বলেছে। এরকম পাঁচ যোগ্যতাসম্পন্ন যে কেউ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলে তৃণমূলের কোনো আপত্তি থাকবে না। যোগ্যতা গুলোর মধ্যে রয়েছে,

১. তৃণমূল থেকে উঠে আসা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তৃণমূল চায় এমন একজন ব্যক্তিকে যিনি তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগ বা অন্য অঙ্গ সংগঠন থেকে আওয়ামী লীগের আসা এবং ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে একজন রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হওয়া ব্যক্তিকেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেখতে চায় তৃণমূল। তারা উড়ে এসে জুড়ে বসা কাউকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চায় না।

২. কর্মীবান্ধব: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সব সময় কর্মীবান্ধব সাধারণ সম্পাদক চান। যারা বিগত দিনের ওবায়দুল কাদের এর আগে, সৈয়দ আশরাফ একজন ভালো সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু তিনি কর্মীবান্ধব ছিলেন না। তিনি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতেন না। এরকম সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের তৃণমূল চায় না। তারা চায় এমন একজন সাধারন সম্পাদক যার কাছে কর্মীরা যেতে পারবে, নিঃসংকোচে কথা বলবে এবং তাদের সব সমস্যার কথা বলবে। 

৩. দলবাজি, গ্রুপিং করবে না: আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা সাধারণ সম্পাদক, দুই একটা ব্যতিক্রম বাদে অধিকাংশ সাধারণ সম্পাদকই দলবাজি গ্রুপিং করতেন। সাধারণ সম্পাদকের নিজস্ব গ্রুপকে সংহত করতে চাইতেন। তৃণমূল মনে করে দলবাজি, গ্রুপিং করা হলো শেখ হাসিনার হাতকে দুর্বল করা। আর এ কারণেই তারা এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চায় যিনি শেখ হাসিনার প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্য দেখাবেন এবং দলবাজি গ্রুপিং করবেন না। 

৪. দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করবেন: একজন পরিশ্রমি কর্মঠ সাধারণ সম্পাদক চায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল। তিনি সার্বক্ষণিকভাবে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য তৎপড়তা করবেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিগুলোকে ঠিক করা, কর্মসূচির মধ্যে দলকে রাখা এবং দলের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কাজ করবে।

৫. জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা: আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতাসীন দল এবং দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, এই রকম রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদককে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আওয়ামী লীগ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন যে, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যেমন কর্মীবান্ধব না হলেও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। সেরকম একজন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য বিশেষ করে সৎ এবং যোগ্য নেতা হিসেবে জনগণের কাছে পরিচিত ব্যক্তিই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তারা দেখতে চান। এরকম সব গুণ সম্পন্ন ব্যক্তি কি আওয়ামী লীগে আছে কিনা জানতে চাইলে তৃণমূল মনে করছে, আওয়ামী লীগের ভেতর এরকম যোগ্যতাসম্পন্ন বহু নেতাই আছেন। শুধু দরকার তাদেরকে সুযোগ দেওয়া।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭