ইনসাইড ইকোনমি

বিদ্যুতের গড় দাম ৮ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 02/10/2017


Thumbnail

দেশে বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা-কোম্পানিগুলোর মধ্যে ব্যবস্থাপনাগত বিবেচনায় অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে রয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। কিন্তু অতি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প গ্রহণের কারণে এর আর্থিক ও ব্যবস্থাপনাগত শক্তি ভেঙ্গে যেতে পারে। আবার শেয়ার বাজারে কোম্পানিটির বিনিয়োগে সরকারি কর্মকর্তারা লাভবান হলেও ডেসকোর কোনো লাভ হচ্ছে না, আর গ্রাহকদের ক্ষতি হচ্ছে। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ কেনার প্রবৃদ্ধির হার ‘অস্বাভাবিক বেশী’ দেখিয়ে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য বাড়ানোর আবেদন করেছে ডেসকো।

আজ সোমবার রাজধানীর টিসিবি মিলনায়তনে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে ডেসকোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি চলাকালে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী, ভোক্তা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসির বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্যে এ তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এ শুনানির আয়োজন করে।

বিদ্যমান পাইকারি ও সঞ্চালন মূল্যহার বিবেচনায় ডেসকো প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খুচরা মূল্য গড়ে ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। কোম্পানিটি বলছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে প্রতি কিলেওয়াট বিদ্যুৎ বিতরনে ৭ টাকা ৭২ পয়সা খরচ হলেও বিক্রয়মূল্য ৭ টাকা ২০ পয়সা। ঘাটতি ৫২ পয়সা। তবে ইউনিট প্রতি অন্যান্য আয় ৩২ পয়সা। ফলে প্রকৃত ঘাটতির পরিমাণ ২০ পয়সা বাড়ানোর আবেদন করে ঢাকার উত্তরাঞ্চল এবং গাজীপুরের একাংশে বিদ্যুৎ বিতরনকারী কোম্পানিটি। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সংস্থাটি নতুন বেতন কাঠামোর কারণে ব্যয়বৃদ্ধি, উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, পরিচালন খরচ বৃদ্ধি এবং পাইকারি মূল্যের আনুপাতিক হারে খুচরা মূল্যের বৃদ্ধি না পাওয়ার বিষয়গুলোকে তুলে ধরেছে।

তবে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বলে, বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্য ৭ টাকা ১৯ পয়সা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এটি দাড়াবে ৭ টাকা ২৭ পয়সা। অর্থাৎ ঘাটতি ৮ পয়সা। এ ঘাটতি দূর করে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৭ টাকা ২৭ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে কারিগরি কমিটি।
এদিকে কৃষি ছাড়া সব ধরনের গ্রাহকের বিদ্যুৎ সেবার জন্য সার্ভিস চার্জ ও ডিমান্ড চার্জও বৃদ্ধির সুপারিশ করে ডেসকো। এর সঙ্গে একমত পোষণ করে কারিগরি কমিটি। তবে এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিতরণকারি সব কোম্পানির জন্য একক হার অনুসরণের সুপারিশ করা হয়। সংগ্রহকৃত রাজস্বের অর্থ চলতি হিসাবের পরিবর্তে বিশেষ ডিপোজিট হিসাবে স্থানান্তরের সুপারিশও করে কমিটি।

শুনানিতে অংশ নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, গত অর্থবছরে ডেসকোর বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ ছিল। এটি ইতিবাচক। কিন্তু চলতি ২০১৭-১৮ বছরে এটি ২১ শতাংশ প্রাক্কলন করেছে। প্রকৌশলগত বিবেচনায় এটি অবাস্তব। বাস্তবতাবর্জিত প্রাক্কলন করে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির আবেদন করা দু:খজনক। তবে বিইআরসি এ প্রাক্কলন গ্রহণ করেনি।

তিনি বলেন, অন্য বিতরনকারী সংগঠনগুলোর চেয়ে ডেসকোতে সিস্টেম লস কম। কিন্তু উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগ্রহণের মাধ্যমে অহেতুক খরচ বাড়ানো হচ্ছে। এ দায় গ্রাহকদের উপর পড়ছে। আবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির বিনিয়োগে শুধু সরকারি কর্মকর্তারা লাভবান হচ্ছেন। কোম্পানি বা গ্রাহকদের লাভ নেই। ওই অর্থ উন্নয়ন প্রকল্পে সরাসরি বিনিয়োগ করার বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে।
গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান ও সাবেক বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম। শুনানিতে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য রহমান মুরশেদ, মাহমুদউল হক ভুইয়া, আব্দুল আজিজ খান ও মিজানুর রহমান। ডেসকোর পক্ষে বক্তব্য রাখেন কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শাহিদ সারওয়ার।

বাংলাইনসাইডার/এসএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭