ইনসাইড টক

`সরকারকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যবস্থা করতে হবে`

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/05/2021


Thumbnail

বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেছেন, কাগজ কলমে লকডাউন হলে হবে না, বাস্তবে কি হয় সেটা দেখে তারপর বলা যাবে। আপাতত যেভাবে লকডাউন এ পর্যন্ত দেখেছি, তাতে লকডাউন যে শক্ত হবে, এই ব্যপারে অন্তত আশাবাদী না। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং সরকারকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

টিকার দ্বিতীয় ডোজ, চলমান করোনা পরিস্থিতি, লকডাউনে ঈদে বাড়ি যাওয়া এবং ভারতীয় ভেরিয়েন্টের বিভিন্ন দিক নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন  অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।

যারা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম পাওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে তারা কি চীনের সিনোফার্মের টিকা দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে নিতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, এইটা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো স্টাডিতে ফাইনাল করে নি। কনক্লুসিভ কোনো এভিডিন্স নেই যে একটার টিকা দেওয়ার পরে অন্য টিকা দেওয়া যাবে। একটা প্রমাণ আছে যে, যদি একই টাইপ এর ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়, তাতে যে নরমাল রিয়েকশন যেটা হয়, যেমন, জ্বর, বমি ইত্যাদি তার থেকে ৩০ শতাংশ বেশি রিয়েকশন হয় অন্য ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দিলে। 

তিনি বলেন, তবে এই স্টাডিতে এটাও বলা আছে, এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজ যদি অন্য কোম্পানীর টা দেওয়া হয় তাহলে শরীরের ভাইরাস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বেশি বাড়ে। একই টাইপের ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার থেকে অন্য টাইপের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হলে ইমিডিয়েট কিছু রিয়েকশন ছাড়া (যেটা কোনোটাই সিরিয়াস না), শরীরের ভাইরাস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বেশি বাড়ে।

বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের তৈরি বঙ্গভ্যাক্স টিকার নৈতিক অনুমোদনের বিষয়ে আপনারা কোনো চিন্তাভাবনা করছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই বিষয়ে সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। সুতরাং সেখান থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা আসবে এবং সরকার নির্দেশনা দিলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে এ বিষয়ে আমরা এখনো কোনো নির্দেশনা পাই নি। 

ঈদে মানুষের যেভাবে বাসায় যাওয়া, তাতে করে ঈদের পরে কি পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে দেশ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বৈজ্ঞানিক হিসেবে বুঝি যে, যেভাবে লোকজন স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাড়িয়ে গেছে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে, এমনকি ঈদের নামাজেও স্বাস্থ্যবিধি ঠিক মতো মানা হয় নি। আবার অনেকে এখন ভারতে চিকিৎসা করে দেশে ফিরছে। তাদের অনেকের শরীরেই ভারতের ভেরিয়েন্টটি পাওয়া যাচ্ছে। তাতে বৈজ্ঞানিকভাবে মনে হয়, ঈদের দুই সপ্তাহ পরে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের অনেক মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি আছে। এই ধরনের অনেক ফ্যাক্টর আছে। তবে সাধারণ অবস্থায় মনে হচ্ছে যদি স্বাস্থ্যবিধি খুব কঠিনভাবে মেনে চলা হয়, তাহলে এই ভারতীয় ভেরিয়েন্টটা থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারবো। এখনকার মতো হলে হবে না, মানে লকডাউন আছে, আবার সবই চলছে, এরকমভাবে যদি লকডাউন চলে তাহলে যে সংক্রমণ বাড়বে এতে কোনো সন্দেহ নেই। 

আগামী সাতদিন সরকারের কঠোর লকডাউনের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার বলছে যে আর এক সপ্তাহ। কিন্তু এই দেশের নাগরিকরা সরকারের কঠোর আর নরম লকডাইনের কোনো পার্থক্য তো দেখতে পাই না। কারণ কাগজ কলমে লকডাউন হলে হবে না, বাস্তবে কি হয় সেটা দেখে তারপর বলা যাবে। আপাতত যেভাবে লকডাউন এ পর্যন্ত দেখেছি, তাতে লকডাউন যে শক্ত হবে, এই ব্যপারে অন্তত আশাবাদী না। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং সরকারকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭