নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 10/10/2017
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী প্রমীলা দেবীর স্মৃতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদারবাড়িতে। এখানেই প্রমীলা দেবীকে দেখে মুগ্ধ হয়ে নজরুল লিখেছিলেন, তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়/সেকি মোর অপরাধ’।জমিদার বাড়ির পাশেই ছিল কবি পত্নী প্রমীলা দেবীরফুপুর বাড়ি।প্রমীলার বাবা বসন্ত সেনের ভাইয়ের ছেলে বীরেন সেন ছিল কবির বন্ধু। সেই সূত্র ধরেই নজরুল-প্রমীলার প্রেম এবং বিয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমিদার বাড়িটি নজরুল প্রমীলার বিশেষ স্মৃতি বিজরিত একটি বাড়ি।এই বাড়িতেই নজরুল-প্রমীলার প্রেমের সূত্রপাত। বাড়িটির বয়স৩০০ বছর ছাড়িয়েছে।সপ্তদশ শতকের শুরুতে পাচুসেন নামের পিতৃহীন দরিদ্র এক কিশোর তার সততা আর চেষ্টায় তামাকের ব্যবসাকরেঅর্জন করে বিপুল ধনসম্পদ। দরিদ্র পাচুসেন দিনাজপুরের জয়গঞ্জে জমিদারি কিনে হয়ে যান পঞ্চানন সেন।
জমিদার বাড়ির মূল ভবনের উত্তর দিকের ভবনগুলো নিয়ে হেমশংকর এস্টেট এবং দক্ষিণ দিকের ভবনগুলো নিয়ে ছিল জয়শংকর এস্টেট। প্রতিটি এস্টেটেরসামনে বর্গাকৃতির অট্টালিকার মাঝখানে আছে নাটমন্দির।পুর্বদিকেরলালদিঘী বাড়িটি ছিল জমিদারদের অন্দর মহল।অন্দর মহলের সামনে দুটি শানবাঁধানোঘাট, এর দক্ষিণ পাশের ভবনের নীচে আছে চোরা কুঠুরী যাকে এলাকার মানুষেরা বলে অন্ধকুপ। উত্তর ভবনের সামনে দাড়িয়ে আছে চার তলা বিশিষ্ট ৭৫ ফুটউচ্চতার নবরতœ মঠ।এর ১ম এবং ২য় তলার চারিদিকে আছে চারটি মঠ। তেওতা জমিদার বাড়িটি ৭ দশমিক ৩৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।
স্থানীয় কলেজ ছাত্র মারুফ হোসেন জানান, জমিদার বাড়িটি মানিকগঞ্জের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।বাড়ির ভবনের কিছু অংশ ধসেও পড়েছে। বাড়িটি একটিঝুঁকির মধ্যে আছে। তারপরও খালি নেই জমিদার বাড়ি।বাড়িটি এখন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতাধীন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বাড়িটির চারপাশ দিয়ে কাটা তারের বেঁড়াদিয়েছে।
একই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় তেওতা জমিদার বাড়িটি প্রায় ধ্বংসের উপক্রম হয়েছিল।
জমিদার বাড়িটিরঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য স্থানীয়রা বিভিন্ন কর্মসূচি, আন্দোলন সহ কবি ও তার সহধর্মীনীর জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে আসছিল।২০১৫ সালে কবিরজন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে। এর পরই তেওতা জমিদার বাড়িটির পুরাতন ভবন গুলোকে সংস্কার ওসার্বিক দায়িত্বভার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতায় নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাদল জানান, বাড়িটি দেখতে দেশ বিদেশ থেকে অনেক পর্যটকও আসে। তবে সরকারিভাবে একে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।
যমুনা নদীর কোল ঘেষা এই জমিদার বাড়িকে কেন্দ্র করেই এখানে হাইস্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ, পোস্ট অফিস, ভূমি অফিস, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা ওবাজার গড়ে উঠেছে।এলাকাবাসী মনে করেন সরকারিভাবে জমিদার বাড়িটির তদারকি করলে এটি তার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭