টেক ইনসাইড

প্রযুক্তিতে বিলীন শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/10/2017


Thumbnail

একসময় বাংলাদেশের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ ছিল না। হারিকেন বা কুপি জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতো। একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে কম আলো জয় করে পড়াশুনা করেছে তারা। কিন্তু এখন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে কিন্তু তাঁর প্রয়োগ নেই। অনলাইন জগতে অনেক প্রয়োজনীয় পড়াশুনার বই খুবই সহজে পাওয়া যায়। কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই সেদিকে কোনো নজর নেই। তাই এতো সুবিধা পাওয়ার পরেও পরীক্ষার আগে তাঁদের খোঁজ করতে হয় প্রশ্নের।

ফেসবুক, ইন্সট্রাগ্রাম, টুইটার সহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছুদিন পর পরই নতুন কোনো ঘটনা বা উদ্ভাবন সাড়া ফেলছে। কিন্তু এই সাড়া শিক্ষার্থীদের কোনো সহায়তা করছে না, উল্টো তাঁদের ফেলে দিচ্ছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতে। অনেক সময় তাঁদের পড়তে হচ্ছে বড় বিপদে। অনলাইনে ব্লু হোয়েলের মতো গেমের ফাঁদ আছে হাজার হাজার।

স্মার্টফোনের দাম কমে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অনলাইন জগতে ভয়াবহতার শুরু হয়েছে। স্মার্টফোনের পাশাপাশি কম মুল্যে সিম, ইন্টারনেট সুবিধা হাতে আসায় এখন যে কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। কিন্তু এই ইন্টারনেট ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহারই বেশি হচ্ছে। কারণ এক জরিপে দেখা যায় দেশের অনেক শিক্ষার্থীই ইন্টারনেটে প্রবেশ করে পর্ন সার্চ করছে। আবার অনেকে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন সাইবার ক্রাইমে।

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফেসবুক। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সবাই ফেসবুক স্টার হতে চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে নিজের বা নিজেদের বন্ধুদের ছবি পোস্ট করছে। তাই হাতে বই থাকলেও তাঁদের চিন্তা থাকছে ছবিতে কয়টা লাইক ও কমেন্ট পড়ল। ফেসবুকের বিভিন্ন অপশন যেমন: লাইভ চ্যাট, ভিডিও চ্যাট, গ্রুপ চ্যাট, ফেসবুক লাইভসহ আরও বিভিন্ন অপশন তাঁরা সারা দিনরাত ব্যবহার করছে । তাই তাঁদের পড়াশুনার সময় কখন? যদিও পড়াশুনা না করেও প্রশ্ন পেয়ে তাঁরা অনলাইনে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

গতবছর একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে এসএসসি পাশ করা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে কিছু সহজ প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু এতো সহজ প্রশ্নের উত্তরও তাঁদের জানা নেই। শুধু পড়াশোনাই নয় অনলাইনের কারণে কাছের বন্ধু দূরের হয়ে যাচ্ছে আর দূরের বন্ধু কাছের। কারণ আগে একই ক্লাসের বন্ধুরা একসঙ্গে আড্ডা দিলে প্রাণখুলে আড্ডা দিত। এখন একসঙ্গে বসা হলেও সবাই নিজের নিজের ফোন নিয়ে ব্যস্ত।

ফেসবুক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন মোহের সৃষ্টি করেছে যার কোন শেষ নেই। কারণ ফেসবুকেই হিরো আলম, ক্ল্যাশ অফ ক্লেইন, সারাহাহ, ব্লু হোয়েলের মতো বিভিন্ন কিছু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তাই একজন শিক্ষার্থী ঘুমাবে কখন? আর ঘুম না হলে পরের দিন পড়াশুনাই বা কিভাবে করবে?

আগে একটা সময় শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতো। কিন্তু অনলাইন জগতে প্রবেশ করার পর বিকালেও শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে না। পড়ে থাকে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। খেলাধুলা না করায় তারা হয়ে পড়ছে শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে দুর্বল। তাদের মেধার বিকাশও হচ্ছে না।

তরুণ সমাজ তথা আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। তাই সামান্য একটা অনলাইন গেম খেলে শিক্ষার্থীরা মরনকে বেছে নেবে এটা কোনো সময়ই গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য অভিভাবকদেরই শিক্ষার্থীদের অনলাইনের নেতিবাচক ও ইতিবাচক দিক বোঝাতে হবে। একটা নির্দিষ্ট বয়সের আগে পর্যন্ত তাদের স্মার্টফোন, ল্যাপটপসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে যেন নজরদারি হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতে পারে অনলাইন জগতের এই নেতিবাচক ব্যবহার।

বাংলা ইনসাইডার/এসএম/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭