ইনসাইড ইকোনমি

‘আঙ্কেল দাম বেশি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/10/2017


Thumbnail

রাহাদের বয়স আট কি নয়। বাবার সঙ্গে বাজার করতে এসেছে। বেশ খুব খুশি মনেই বাজার করছে রাহাদ।বাজার সম্পর্কে খুব ধারণা নেই তার।বাজার করতে তোমার কেমন লাগছে? ভালো। আচ্ছা জিনিসপত্রের দাম কেমন? ‘আঙ্কেল দাম বেশি! এতটুকু ছোট রাহাদই যখন টের পাচ্ছে জিনিসপত্রের দাম বেশি, তাহলে দ্রব্র্যমূল্যের আগুনে পরিবারের কর্তা বা তার বাবার অবস্থা কী তা বুঝতে বাকি থাকে না কারও।

কেবল রাহাদের বাবাই নন সব পরিবারের কর্তাদেরই গায়ে লাগছে এই আগুন। বাজার করতে এসে হিসাব নিকাশ মিলাতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষ। শুধু নিম্ন আয়ের মানুষই নন, বাজার করতে এসে  দীর্ঘশ্বাস ফেলছে সব ধরনের ক্রেতাই।

আবারও ঝাঁঝ বেড়েছে পেঁয়াজের। প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে এই দর।

পেঁয়াজের দাম বাড়তির কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জামাল বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম গত এক সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলছে, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকার কারণে দাম বেড়েছে’।

পেঁয়াজের দাম বাড়লেও কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। কয়েকদিন আগেও কাঁচা মরিচের দাম এক লাঁফে বেড়ে ২৪০ টাকায় ওঠে। বিক্রি হলেও এখন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, ‘ভারত থেকে কাঁচামরিচের আমদানি বেশি হওয়ায় দাম কমেছে’।

বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কারওয়ান বাজার, কাঁঠালবাগান ও আশে পাশের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

বাজারে শীতের আগাম সবজি ফুল কপি ও পাতা  কপি পাওয়া যাচ্ছে। আকাশচুম্বী দামে  বিক্রি  হচ্ছে।  প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।

কাঁঠালবাগান বাজারের সবজি বিক্রেতা সাগর বলেন, চাহিদার তুলনায় এ সময়ে সবজির সরবরাহ এমনিতেই কম থাকে। এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম থাকায় পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে।

বাজারে প্রতি কেজি ডায়মন্ড আলু ৩০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, পটল ৫৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা , করল্লা ৪০ টাকা, চালকুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা এবং প্রতি পিস লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া  ৮০ থেকে ১২০  টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজার স্থির রয়েছে। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজির ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, মাঝারিমানের চাল ৫০ টাকা, মোটা চাল ৪৫ খেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। কেজি প্রতি ছোলা ৮৫ টাকা, দেশি মুগ ১৩০ টাকা,ভারতীয় মুগ ১২০ টাকা, মাষকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা৪৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৫০০ টাকা, এলাচ ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

২ সপ্তাহ আগের বাড়তি দামেই ভোজ্যতেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে  ব্র্যান্ডভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০ থেকে ৫৪০ টাকা, লিটার বোতল ১০৭ টাকা থেকে বেড়ে ১০৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অবশ্য টিসিবির প্রতিবেদনের সঙ্গে বাজারের দামে কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে। টিসিবির মূল্য তালিকায় ব্র্যান্ডভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫১০ টাকা থেকে ৫৩০ টাকা। প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০২ থেকে ১০৭ টাকা।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির বাজার চড়া থাকলেও মাছের বাজার সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। ক্রেতারা জানান  অন্যান্য জিনিস পত্রের দামের তুলনায় মাছের দাম কিছুটা কম। আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, কাতলা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চাষের কৈ ১৫০ থেকে১৮০ টাকা এবং পাঙ্গাস  ৮০ থেকে ১০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৮০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা এবং ছাগলের  মাংস ৬৫০ টাকায়বিক্রি হচ্ছে।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএ/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭