ইনসাইড বাংলাদেশ

৩৬ বছরেও পূর্ণাঙ্গ চালু হয়নি পটুয়াখালী বিসিক শিল্পনগরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/10/2017


Thumbnail

প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩৬ বছরেও পটুয়াখালী বিসিক শিল্প নগরীতে গড়ে উঠেনি তেমন কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান। ৯১টি প্লটের সবই বরাদ্দ রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামে। এর মধ্যে নামমাত্র চালু হয়েছে ১১টি ক্ষুদ্র শিল্প। বিসিক প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে বিভিন্ন নামে কয়েকটি শিল্প কারখানার জন্য ভবন নির্মাণ হলেও সেগুলো আর চালু হয়নি। কয়েকটি সিমিত পরিসরে চালু হলেও কিছু দিন পরে তাও বন্ধ হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮১ সালে পটুয়াখালী শহরের ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে মাঝগ্রাম এলাকায় ১০ দশমিক ৪৯ একর জমিতে বিসিক শিল্প নগরী স্থাপিত হয়। সে সময় এ নগরীর ব্যয় ধরা হয়েছিল এক কোটি ১৮ লাখ টাকা। অধিগ্রহণকৃত ভূমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, পাম্প হাউস স্থাপন, পাকা রাস্তা ও বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের জন্য এ অর্থ ব্যয় করা হয়।

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তদের অদক্ষতা, অবহেলা, সঠিক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ না দেওয়া,বিসিক সর্ম্পকে স্থানীয় উদ্দোক্তাদের ধারণা না থাকার কারণেই মূলত পটুয়াখালী শিল্পনগরী সঠিক ভাবে বিকশিত হতে পারেনি। নির্মাণের দীর্ঘ ৩৬ বছরে মাত্র ১১টি ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- হাসান মেটাল, সুগন্ধা অ্যালুমিনিয়াম, রিজিয়া ফ্লওয়ার মিল, পিজি কুক, কাজি সূচনা প্লাস্টিক, শাহিন পাইপ, চয়নিকামোটরস, কাজি রোলিং পলিথিন, খান অটো ফ্লাওয়ার, লাকি সু। নামমাত্র এসব প্রতিষ্ঠান চালু থাকলেও ২/৩টি ছাড়া সবকটি শিল্পই চলছে সিমীত পরিসরে।  

এ ব্যপারে পটুয়াখালী  বিসিক শিল্প কর্মকর্তা মো. খাইরুল বাশার বলেন, মূলত প্রচরের অভাব, বিসিক সম্পর্কে ধারণা না থাকা এবং উদ্যোক্তাদের অনাগ্রহের কারণে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হচ্ছে না এ নগরী। বর্তমানে এখানে সবধরনের সুবিধা রয়েছে।

বিসিক শিল্পনগরীর চালু ক্ষুদ্রশিল্প সুগন্ধা অ্যালুমিনিয়ামের ম্যনেজার স্বপন কুমার সরকার জানান, তাদের সিলভারের হাড়ি-পাতিল তৈরির এ কারখানাটি প্রায় ৩বছর আগে চালু হয়। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীতেও একই ধরনের কারখানা রয়েছে। এখানে সিলভারের হাড়ি, পাতিল, কড়াই, কলস সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরী হয়। কিন্তু স্থানীয়ভাবে চাহিদা না থাকার কারণে কারখানার উৎপাদন প্রায়ই বন্ধ রাখতে হয়। ২০জন কারিগরের সব সময় কাজের ব্যবস্থা থাকলেও মাএ ৬/৭জন দিয়ে কাজ করানো হয়। তার পরও উৎপাদিত মাল বিক্রি না হওয়ায় বর্তমানে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কয়েকজন ক্ষুদ্র উদ্দোক্তাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান বাজারজাতকরনের সমস্যা, যোগাযোগ সমস্যা, প্রয়োজনের সময় ব্যাংক লোন না পাওয়া এবং প্রকৃত উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ না দেওয়ার কারণেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী মের্সাস পানামা লিমিটেডের চেয়ারম্যান নাসরিন মোজাম্মেল বলেন, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে পটুয়াখালীতে বিসিক শিল্প নগরী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি।

বিসিকের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তাদের দূর্র্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি আর অদক্ষতার কারণে পটুয়াখালীর সম্ভাবনাময় এ প্রতিষ্ঠানটি মূখ থুবড়ে পড়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য জেলার ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের নিয়ে তাদের আলোচনায় বসা উচিত। যেসব প্লট বরাদ্দের দীর্ঘদিন পরও চালু করেনি তাঁদের প্লট বাতিল করে নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে তা বরাদ্দ দিতে হবে। নতুন উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দের পর শিল্প চালুর একটা সময় বেঁধে দিতে হবে। তাহলেই পটুয়াখালী বিসিক প্রাণ ফিরে পাবে এবং এর মাধ্যমে এখানে কয়েক হাজার লোকের লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭