ইনসাইড টক

`ভারতের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের দেশে আছে`

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 09/06/2021


Thumbnail

স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, দেশের অনেক জায়গায় ভারতীয় ভেরিয়েন্ট পাওয়া যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে একটি শঙ্কার কারণ যে, এই ভেরিয়েন্ট সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারতের মতো একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের দেশে আছে। 

দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি, সীমান্তের জেলাগুলোর করোনা পরিস্থিতি, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য ডা. এম এ আজিজ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।

ডা. এম এ আজিজ বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এ সরকার যে লকডাউন এবং বিধিনিষেধ দেওয়া শুরু করেছিল তার ফলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসছিল। কিন্তু ভারতে যখন ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লো এবং তাদের অবস্থা মানবিক বিপর্যয়ের পথে তখন এটি আমাদের একটি শঙ্কার কারণ ছিল।  আসলেই বাস্তবে আমরা তাই দেখলাম। বাংলাদেশ যদিও সীমান্ত এলাকায় নজরদারী রাখছে কিংবা সেখানে লকডাউনের মত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে কিন্তু তারপরও যেহেতু পাশাপাশি দেশ, সেই দেশ থেকে বাংলাদেশে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট আসাটা কমবেশি স্বাভাবিক। দেখা গেছে হাজার হাজার মাইল দূরের দেশেও ভারতের এই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট চলে গেছে। সুতরাং আমাদের দেশে আসাটাই স্বাভাবিক।  তারপরও সরকার যথেষ্ট উদ্দ্যোগ নিয়েছে যাতে না আসে।  সেই প্রেক্ষাপটে সীমান্ত এলাকাগুলোতে বিভিন্ন জেলাগুলোতে এই ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্টের রোগী আমরা পেয়েছি এবং সেসব রোগী থেকে আরো ছাড়াচ্ছে। ফলে সেসব জায়গায় করােনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যাচ্ছে। 

তিনি বলেন, সরকার ইতিমধ্যে এইসব বিবেচনা করে সীমান্তবর্তী যে সমস্ত জেলাগুলো আছে সেগুলোর অনেকগুলোতে লাকডাউন দিয়েছে। অনেক উপজেলাতেও লকডাউন দেওয়া হয়েছে। সেখানকার হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন, হাইপোনেজাল ক্যানোলা এবং যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের সেভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং সেভাবে তারা কাজ করছে। এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও নজরদারি রাখতে বলেছে এবং জনগণকেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা লক্ষ্য করছি কিছু কিছু জেলায় সংক্রমণ কমে এসেছে। যেমন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। আবার কিছু কিছু জায়গায় বাড়ছেও।

তিনি বলেন, শঙ্কার কারণটা হলো বিভিন্ন জায়গায় জনগণ এখনো স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। যেহেতু গণপরিবহনগুলো এখনো চালু আছে, সীমান্তে যে সমস্ত উপদ্রুত এলাকা আছে গণপরিবহন চলাচলের সাথে কিছু কিছু যোগাযোগ হওয়ার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। দেশের অনেক জায়গায় ভারতীয় ভেরিয়েন্ট পাওয়াও যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে একটি শঙ্কার কারণ যে, এই ভেরিয়েন্ট সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারতের মতো একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের দেশে আছে। 

তিনি বলেন, আমি মনে করি, সরকার যে সমস্ত কর্মসূচি দিয়েছে, সেখানে সীমান্ত এলাকাগুলোতে আরও কঠিনভাবে নজরদারীতে আনতে হবে। লকডাউন কার্যকারী করতে হবে। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের ওপর প্রয়োজন বোধে আইনের প্রয়োগ করতে হবে।  যেহেতু আমরা মনে করি এই করোনা সংক্রমণের দুইটি বিষয়ই প্রধান জিনিষ। একটি হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আর অন্যটি হলো ভ্যাকসিনেশন। যেহেতু আমাদের ভ্যাকসিনেশ কার্মসূচি একটু ব্যাহত হলেও আবার ধারাবাহিকতায় আসছে, কিন্তু এই স্বাস্থ্য সচেতনতা জনগণের নিজেদের ব্যাপার। এটি হলো নাগরিক দায়িত্ববোধের ব্যাপার। 

তিনি বলেন, সরকার স্বাস্থ্যবিধি মানার ঘোষণা দিয়েছে সেহেতু জনগণের উচিৎ নাগরিক দায়িত্ব থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানা। যেহেতু তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, সেক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানানো। প্রয়োজনবোধে আইনের প্রয়োগ করা।  এই জায়গাটাতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে বলে আমি মনে করি। আর সারাদেশে গণপরিবহন এবং বিভিন্ন হাটবাজার, শপিংমলগুলােতে যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না তাদেরকেও মানানো ব্যবস্থা করতে হবে এবং কঠোর নজরদারিতে আনতে হবে। যেহেতু তারা স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তেই শপিংমল, গণপরিবহন ইত্যাদি খুলে দেওয়া হয়েছে সেহেতু তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিৎ এবং তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা সেটিও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর নজরদারিতে আনতে হবে। তাহলেই আসলে করোনার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭