ইনসাইড টক

‘বাংলাদেশ ভুল কৌশলের কারণে টিকা পাচ্ছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/06/2021


Thumbnail

ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি এন্ড রাইটস (এফডিএসআর) এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, পৃথিবীতে টিকা আছে। সমস্ত ফর্মালিটিস শেষ করলে দ্রুততম সময়ে কিছু টিকা পাওয়া যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ যে পথে টিকার জন্য এগুচ্ছে সেটি আমার কাছে মনে হয়েছে যে খুব কার্যকরী পথ না। এর ফলে যেটি হচ্ছে তা হলো আমরা সময় নষ্ট করছি। সময় যত নষ্ট হবে ততই টিকা প্রাপ্তি আমাদের জন্য দেরি হবে। কারণ, সারা পৃথিবীতেই এই টিকার এখন প্রয়োজন দেখা দিয়েছে এবং যে যেভাবে পারছে টিকা সংগ্রহের একটি প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ভুল কৌশলের কারণে টিকা পাচ্ছে না। বাংলাদেশ চাইলেই এখনো খুব স্বল্প সময়ে টিকা নিতে পারে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস টিকার সংকট, টিকা উৎসের সন্ধান, ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি সহ সার্বিক বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন। পাঠকদের জন্য ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন

অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, এখন প্রশ্ন হলো আপনি কোন টিকা নিবেন। অনেকগুলো টিকা আছে। আমাদের এখন এই সুযোগ নেই যে আমরা বলব এই টিকা ছাড়া অন্য টিকা নেব না। এখন মার্কেটে যতগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত করোনার টিকা আছে প্রত্যেকটি টিকাই ন্যূনতম মানসম্পন্ন। প্রত্যেকটি টিকাই করোনায় একটি মোটামুটি নিরাপত্তা প্রদান করে। সুতরাং আমাদের এখন যে টিকাগুলো অনুমোদন প্রাপ্ত সেগুলো নেয়া উচিৎ। যেমন চায়নায় সিনোফার্মা টিকা আমরা কিনতে চাচ্ছি। কিন্তু চায়নার সিনোভ্যাক টিকাও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিয়েছে জরুরী ভিত্তিতে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের তো আরও আগে থেকেই বোঝা উচিৎ ছিল যে সিনোভ্যাক অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। আমরা যদি আগে থেকে সিনোভ্যাক কেনার প্রচেষ্টা করতাম তাহলে সিনোভ্যাক পেয়ে যেতাম। তারও আগে সিনোভ্যাক ট্রায়াল দিতে এসেছিল বাংলাদেশে। সেখানে আমরা বিলম্ব করে, টালবাহানা করে প্রথম সুযোগ হারিয়েছি। কারণ, টিকার ব্যবস্থাপনায় আমাদের যথেষ্ট দক্ষতার অভাব ছিল। কেবলমাত্র এই বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একেক সময় একেক রকম মন্তব্য দেখা গেছে।

টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যদি সঠিক কৌশলে আগায় এই মূহুর্তে বেশকিছু টিকা তারা দ্রুততম সময়ে সংগ্রহ করতে পারবে। টিকা উৎপাদনের সাথে একটা বাণিজ্যও জড়িত। তাই টিকার জন্য সরকারের উচিৎ বেসরকারি কোন একটি খাতকে নিযুক্ত করা এবং টিকা চুক্তির একটি অংশ হিসেবে সরকার থাকতে পারে। সেই সাথে আমাদের একাধিক উৎসের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আমরা যদি একটি উৎসের উপর আবারও নির্ভর করি তাহলে আবারও একটি অনিশ্চয়তা থাকবে। এই মূহুর্তে দেশের বাহিরে আমরা যারা আছি, আমারাও সরকারকে কোথায় টিকা পাবে সেই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি। পৃথিবীর বড় বড় দেশে আমরা আছি, আমাদের দূতাবাস আছে -এই সূত্রগুলো মিলিয়ে যদি সরকার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, ইতিমধ্যে আমরা অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছি। আমাদের প্রয়োজনীয় যে টিকা দরকার তার জন্য সঠিক যায়গাগুলোতে অর্থাৎ যারা টিকা উৎপাদন করছে এবং এর সাথে বাণিজ্যিকভাবে জড়িত সেটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের কাছে অনেকেই বলে যে বাংলাদেশে টিকা লাগবে কিনা। কিন্তু আমরা তো বাংলাদেশের অফিসিয়াল কেউ না। তাই বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে তাহলে আমরাও সাহায্য করতে পারি। কিন্তু যেভাবে বর্তমানে তারা এগিয়ে যাচ্ছে তাতে কিছুদিন পরপর আশার বাণী এবং হতাশার বানীর দুটোই শুনবো এবং সময় নষ্ট হবে।

বাংলাদেশে করোনার টিকা উৎপাদন করা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন বলেন, আমাদের দেশে সফলতার সাথে বিভিন্ন টিকা উৎপাদন করা হচ্ছে। করোনার টিকা এমনও হতে পারে যে আমাদের নিয়মিত নিতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে আর কতদিন আমরা অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকবো। তাই যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭