ইনসাইড ইকোনমি

চাহিদা ও জোগানই টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের নিয়ন্ত্রক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/10/2017


Thumbnail

আধুনিক টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এর সূত্রপাত হয় চার্লস ডাউ এর হাত ধরে ১৯০০ সালের দিকে । আর এই থিওরি সারা বিশ্বে ‘ডাউ থিওরি’ নামে পরিচিত। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল।

১. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এ শেয়ারের দাম পারিপার্শ্বিক সব কত্যের ওপর নির্ভর করে। একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা ভালো থাকলে এবং ভালো মুনাফা হলে ভালো ল্যভাংশ আশা করা যায়। আবার কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য-যেমন আয় বেড়ে যাওয়া, ব্যবসা সম্প্রসারণ হওয়া এবং রপ্তানি বেড়ে গেলেও মুনাফা বাড়ে। আর এসবের প্রভাব পড়ে সেই শেয়ারের দামের ওপর ।

২. শেয়ারের দাম কিছু প্রবণতা অনুসরন করে। অর্থাৎ,  একটি শেয়ারের দাম সাধারণত ঊর্ধ্বমুখী, নিন্মমুখী এবং সমান্তরাল ভাবে চলতে পারে।

৩. শেয়ার বাজারে দামের পুনরাবৃত্তি ঘটে। ফলে অতীত রেকর্ড দেখে ভবিষ্যতের দাম সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায় । টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মাধ্যমে বর্তমান দামের সাথে অতীতের দাম তুলনা করে একটি সম্ভাব্য ফলাফলও পাওয়া যায়।  

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে চাহিদা এবং যোগানই সব কিছ নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে শেয়ারের সংখ্যা এবং দাম  ( প্রাইস অ্যান্ড ভলিউম)  বলে দেবে বাজারের গতি কেমন হবে। কোম্পানির মৌলভিত্তি যেমন-পণ্য বিক্রি, উৎপাদন ব্যয়, লাভ-লোকসান, ঋণ, পুঁজি ইত্যাদি বিশ্লেষণ করলেই মোটামুটি স্টকের দাম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

বাজার একটা ছন্দ (Pattern) মেনে চলে। এই ছন্দ ঠিক থাকলেই বাজার স্বাভাবিক গতিতে চলে।  আর ছন্দ পতন হলেই উল্টোটি ঘটে। মূলত স্বল্প মেয়াদী (কমপক্ষে ৩ মাস) বিনিয়োগের জন্য টেকনিক্যাল অ্যনালাইসিসই ভালো। তবে এক্ষেত্রে শেয়ারবাজারে চাহিদা এবং যোগানের (ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই) বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শেয়ার কেনার আগে একজন বিনিয়োগকারীকে ওই কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা ও যোগান সম্পর্কে জানতে হবে।  সেই সাথে আরো কতগুলো বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন:

১. শেয়ার লেনদেনের সংখ্যা বিশ্লেষণ (Analysis of trading volume) অর্থাৎ কোনো কোম্পানির শেয়ার কতবার হাতবদল হয়েছে

২.দামের ধরণ (Price action) এবং

৩. দামের বিস্তৃতি (Price spreads) মানে ১ মাস বা ১ বছরের দামের ওঠানামা

সেই সাথে শেয়ারের ডিমান্ড সম্পর্কেও খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে বাজারের গতি প্রকৃতি সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া যাবে। ধরা যাক একটি শেয়ারের দাম বাড়ছে কিন্তু ভলিউম সেভাবে বাড়েনি। আবার দামের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমার মধ্যে পার্থক্য খুবই কম। তাহলে বুঝতে হবে এই শেয়ারের ডিমান্ড কম। আর এ ধরণের শেয়ারের দাম কিছু দিনের মধ্যেই কমতে থাকে। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের  মাধ্যমে শেয়ারের গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ফলে শেয়ার বেচাকেনার সময় সম্পর্কেও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। তাই আগে মৌলভিত্তি বিশ্লেষণ করে করে ভালো কোম্পানি নির্বাচন করতে হবে। এর পর টেকনিকাল অ্যানালাইসিস ব্যাবহার করে ঠিক সময়ে বেচাকেনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এতে বিনিয়োগের সময় বাঁচবে। টেকনিকাল অ্যানালাইসিস অনুযায়ী বাই সিগনাল পেলে কেনার আগে দেখতে হবে বাজারে হঠাৎ ডিমান্ড বেড়ে যাওয়া যেন কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি দ্বারা সমর্থিত হয়। সেভাবেই অ্যানালাইসিস করে সেল সিগন্যাল পেলে বিক্রিও করতে হবে। মার্কেট সেন্টিমেন্ট নির্ভর, তাই চাহিদা এবং যোগান পরিস্থিতিও মুহূর্তেই বদলে যেতে পারে।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭