ইনসাইড টক

`বড় পরিসরে টিকা কার্যক্রম শুরু হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা পেয়ে যাবে`

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/06/2021


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, সামনে যে টিকা আসার কথা রয়েছে এবং যখন বড় পরিসরে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে তখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষকরা বা ছাত্ররা টিকা পেয়ে যাবে। যদিও শিক্ষকদের প্রায়ই দেওয়া হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের টিকার রেজিষ্ট্রেশনও প্রায় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পন্ন করে ফেলেছে বলে আমার ধারণা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং শিক্ষা কার্যক্রমের নানা দিক নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। পাঠকদের জন্য ড. মীজানুর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর প্রধান বার্তা সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান

ড. মীজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকার রেজিষ্ট্রেশন হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই কাজগুলো সম্পন্ন করে রেখেছে। এখন টিকা আসলে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। বিশেষ করে সামনে যে টিকা আসার কথা রয়েছে এবং যখন বড় পরিসরে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে তখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষকরা বা ছাত্ররা টিকা পেয়ে যাবে। যদিও শিক্ষকদের প্রায়ই দেওয়া হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের টিকার রেজিষ্ট্রেশনও প্রায় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পন্ন করে ফেলেছে বলে আমার ধারণা। এখন বড় পরিসরে টিকা দেওয়া শুরু না হলে তো এটি করা সম্ভব হবে না। এখন ওই পরিমাণ টিকাও আমাদের হাতে নেই। আশা করা হচ্ছে এই মাসে যদি টিকা আসা শুরু হয় তখন টিকার সংকট কেটে যাবে। 

তিনি বলেন, ভারতেও সংক্রমণ যদি করে আসে, তাহলে আমার ধারণা টিকা রপ্তানীর যে নিষেধাজ্ঞা আছে সটি প্রত্যাহার করবে তাহলে আমাদের আগের যে কেনা সাড়ে তিন কোটি টিকা এটিও হয়ত আমরা পেয়ে যাবো। এমনটিই আশা করছি। এখন এটি টিকা আসার ওপরে নির্ভর করবে যে, কবে থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকার কার্যক্রম শুরু করা যায়। 

হল খোলা বা ক্লাস পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে আমি তো এখন দায়িত্বে নাই। আমি এ বিষয়ে সঠিক বলতে পারবো না যে কি মিটিং হয়েছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরীক্ষাগুলো অসমাপ্ত, আটকা পরে গেছে মাষ্টার্সের ফাইনাল, এগুলো কোনো না কোনোভাবে নেওয়া একটি ব্যবস্থা করাই উচিৎ। কারণ এরা অনেক পিছিয়ে গেছে। যদিও এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। এখন যেগুলো নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় চিন্তা করছে যে, পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া যায়। এগুলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আরও আট মাস আগে পরীক্ষা সম্পন্ন করে রেজাল্টও দিয়ে দিয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তো হল নেই সেহেতু ওই সমস্যাও নেই। 

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আগে আমি তো মনে করি যে, আমাদের যে উপজেলা এবং প্রত্যন্ত গ্রামগুলো আছে সেখানে করোনার সংক্রমণ অনেক কম। যদিও আমরা এমনিতেও একটি বৈষম্য তৈরি করে ফেলেছি।  ঢাকাসহ অন্যান্য বড় বড় শহরে অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। ছাত্ররাও যোগদান করছে সেই সব ক্লাসে। কিন্ডার গার্টেন স্কুলেও অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে।  সমস্যা হয়ে গেছে গ্রামে। গ্রামে তো এইসব নেটওয়ার্কও নাই আবার ডিভাইসও নাই। ফলে এই বৈষম্যটা তৈরি হয়ে গেছে। এই বৈষম্যটা নিরষণের জন্য হলেও অন্তত গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যেখানে করোনাও নাই সেখানে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা উচিৎ। এসব এলাকায় আগে শুরু করলে এখন যে গ্যাপটা হয়ে গেছে সেটা হতো না।  এটির নাম দেওয়া হয়েছে সাইবার গ্যাপ। তাই এই সাইবার গ্যাপ পূরণ করার জন্য হলেও অন্তত গ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা উচিৎ। 

তিনি বলেন, আমি পরামর্শ দিয়েছিলাম, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচটি ক্লাস।  এই পাঁচটি ক্লাস একদিনে আসবে না। সপ্তাহে পাঁচদিন পাঁচ শ্রেণীর ক্লাস হবে। আজকে যদি ওয়ান আসে তাহলে অন্য শ্রেণীর কেউ আসবে না।  ওয়ানের যারা আসবে তাদের স্কুলে যে কয়টি কক্ষ আছে সেই কয়টিতে সমান ভাগ করে বসাতে হবে এবং সব কয়জন শিক্ষক ওইদিন ওয়ানের ক্লাসই নিবেন ওই দিন। তাদেরকে এক সপ্তাহের কাজ দিয়ে দেওয়া হলো। আর গ্রামে যারা শিক্ষক আছেন তারা তো গ্রামেই থাকেন। ইচ্ছে করলে তারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়েও শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিতে পারেন।  এভাবেই প্রতিটি শ্রেণীভিত্তিত এক এক দিক এক এক শ্রেণীর ক্লাস নিতে হবে। আর প্রতিটি শিক্ষার্থীর অভিভাকদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখতে হবে। এভাবে আমাদের অন্তত শুরুটা করা উচিৎ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭