ইনসাইড বাংলাদেশ

জোটেও পিছিয়েছে বিএনপি-জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/10/2017


Thumbnail

১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চারটি সংসদ নির্বাচনের তিনটিতেই জিতেছিল আওয়ামী লীগ। বাকি একবার মাত্র ২০০১ সালে জিতেছিল জামায়াত।

যদিও হালের জোটের দৃষ্টিতে অংক কষলে অর্থ্যাৎ বিএনপি - জামায়াতের ভোট যোগ করে এবং আওয়ামী লীগ - জাতীয় পার্টির ভোট যোগ করে, দুই জোটের ভোটের যোগফলে ফলাফল হয় উল্টো। অর্থ্যাৎ বিএনপি-জামায়াত জোট জিতে তিনবার, আর আওয়ামী লীগ জিতে মাত্র একবার ২০০৮ সালে।

তবে ২০০৮ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের এই হার হয়েছে প্রতিবার নির্বাচনে ক্রমান্বয়ে তাদের ভোটের হার কমার মাধ্যমেই। জোট ধারণা থেকে দেখলে ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট আওয়ামী লীগ – জাতীয় পার্টি জোট থেকে ১৪.৭৫, ৭.৫২ ও ৫.৫৯ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছিল। অর্থ্যাৎ ক্রমান্বয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোট কমেছে। আর তা কমতে কমতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগ থেকে ৭.৩৮ শতাংশ ভোট কম পায়। অর্থ্যাৎ বিএনপি-জামায়াতের ভোট আগে আলাদাভাবে আওয়ামী লীগের চেয়ে কম হলেও,  শেষে তা জোটগতভাবেও কমেছে।

এখানে জাতীয় পার্টির ভোট বরাবরই খুব কম। তাই পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, বিএনপি-জামায়াত জোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ভোট ও তরুণ নতুন ভোটের প্রায় পুরোটা নৌকায় ভিড়েছে এই আসনে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে যশোর-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ। নৌকা মার্কা নিয়ে তিনি পেয়েছিলেন এক লাখ ৫৪ হাজার আটশত ৭৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াতের প্রার্থী আবু সাইদ মো:  শাহাদাৎ হুসাইন। দাঁড়িপাল্লা মার্কা নিয়ে তিনি পেয়েছিলেন এক লাখ ৩৩ হাজার দুইশত ৪৪ ভোট। শতাংশের হিসাবে তা যথাক্রমে ৫২.৮৮ ও ৪৫.৫০ ভাগ।

২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন চারদলীয় জোট থেকে জামায়াতের প্রার্থী আবু সাইদ মো:  শাহাদাৎ হুসাইন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন এক লাখ ৩৭ হাজার সাতশত ১৭ ভোট। আর দ্বিতীয় হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম। তিনি পেয়েছিলেন এক লাখ ২০ হাজার আটশত ৯৯ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী পেয়েছিলেন দুই হাজার ৯৫ ভোট। শতাংশের হিসাবে তা যথাক্রমে ৫২.২৫, ৪৫.৮৭ ও ০.৭৯ ভাগ। তবে তৃতীয় হয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিউর রহমান। তিনি ভোট পেয়েছিলেন দুই হাজার একশত দুই ভোট।

১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জিতেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম। তিনি পেয়েছিলেন ৮৬ হাজার সাতশত ৫২ ভোট। দ্বিতীয় হয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী মো: ইসহাক। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৫৮ হাজার চারশত পাঁচ ভোট। আর তৃতীয় হয়েছিলেন জামায়াতের মো: শাহাদাত হোসেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৪৮ হাজার তিনশত ৯৩ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী পেয়েছিলেন চার হাজার সাতশত ৭৪ ভোট। শতাংশের হিসাবে তা যথাক্রমে ৪২.৭০, ২৮.৭৫, ২৩.৮২ ও ২.৩৫ ভাগ।

১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম। তিনি পেয়েছিলেন ৬২ হাজার তিনশত ৭৩ ভোট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জামায়াতের প্রার্থী মকবুল হোসেন পেয়েছিলেন ৪৬ হাজার আটশত ৫৪ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিএনপির মো: ইসহাক পেয়েছিলেন ৪০ হাজার আটশত ৫৪ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী পেয়েছিলেন এক হাজার ছয়শত ৪১ ভোট।  শতাংশের হিসাবে তা যথাক্রমে ৩৭.৭৯, ২৮.৩৮, ২৪.৭৫ ও ০.৯৯ ভাগ।

প্রসঙ্গত, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে নৌকা মার্কার টিকিট প্রত্যাশী আছেন অন্তত আটজন। তাঁরা হলেন, বর্তমানে দলীয় এমপি মনিরুল ইসলাম, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী রফিকুল ইসলাম, মেজর জেনারেল (অব.) ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম হাবিব, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী রায়হান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসানুল হক এবং জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী।

আর ধানের শীষ মার্কার টিকিট প্রত্যাশা করছেন অন্তত ছয়জন প্রার্থী। তাঁরা হলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নি, চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা কাজী মুনিরুল হুদা ও মোহাম্মদ ইসহাক।

তাছাড়া জামায়াত নেতা আবু সাঈদ বর্তমানে আত্মগোপনে আছেন। তাই তিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা তা এখনও স্বচ্ছ নয়।

জাতীয় সংসদের ৮৬ যশোর-২ নির্বাচনী এলাকা গঠিত চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে।

এখানকার মোট ভোটার ৩ লাখ ৯১ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫২ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার।

বাংলা ইনসাইডার/এমএএম



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭