কালার ইনসাইড

এফডিসি কি সময়োপযোগী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/10/2017


Thumbnail

এফডিসিতে এখন কী হয়? সিনেমার শুটিং তো নেই বললেই চলে। এই নির্বাচন সেই নির্বাচন করে কেটে গেল বেশ কিছুদিন। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞাও কম হলো না। এগুলো সবই খবরে আসে। কিন্তু এফডিসির প্রকৃত অবস্থা কি কারও চোখে পড়ে? ক্রমশ দূর্বল হয়ে যাচ্ছে এফডিসি নামক এ প্রতিষ্ঠান।

সময়ের সঙ্গে যেমন এখানকার কোনো যন্ত্রপাতি খাপ খাচ্ছে না। তেমনি এখানকার টেকনেশিয়ানদেরও রয়েছে আধুনিক টেকনোলজিতে অদক্ষতা। ভালো সাউন্ড, কালার কারেকশন, ডিজিটাল ক্যামেরা ওয়ার্ক এমনকি মেকআপম্যান পর্যন্ত ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে। আর এটা সময়ের চাহিদা মেটাতেই। এ সময়কার যত ঝকেঝকে গান কিংবা সিনেমা দেখছেন তার টেকনেশিয়ান কিংবা পোস্ট প্রডাকশন সিংহভাগ হয়েছে ভারতে। এগুলো চাইলেও কেউ আটকে রাখতে পারবে না। নানা রকম নিয়মের ছলাকলা চলতে থাকবে। কিন্তু নির্মাতারা ভালো কিছু পাওয়ার ক্ষুধায় দেশের বাহিরে যেতে বাধ্য হবেন। দেশে এরকম সুবিধা থাকলে নিশ্চয়ই খরচ বাড়িয়ে তারা দেশের বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করতেন না।

আকাশ সংস্কৃতির এ যুগে দর্শকের রুচির পরিবর্তন চলে হলিউড বলিউডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। সেখানে এফডিসির এমন কলিযুগের টেকনোলজি কে গ্রহণ করবে! ফলশ্রুতিতে দর্শক ক্রমাগত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেল বাংলাদেশের সিনেমা থেকে। একটা সময়ে যেখানে বছরে ১৫০ টির বেশি সিনেমা নির্মাণ হতো প্রতি বছর, সেখানে এখন গুনে পঞ্চাটাও হয় না। আর ভালমানের হিসেবে তো তা আরও নগন্য।

সরকার বাজেট দিয়ে যেসব সুবিধা দিয়ে থাকেন। তা ব্যবহার করার মতও দক্ষ লোক নেই। ভালো মানের ক্যামেরা এফডিসিতে পড়ে আছে। তা অপারেট করার দক্ষ লোক নেই। এফডিসির নামে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও দেখা যাচ্ছে না কোনো উন্নয়ন। নেই কোন সেন্ট্রাল সার্ভার। প্রেক্ষাগৃহগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য নেই টিম। যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ। এমনটি ঝর্ণা স্পট এক সময় যেখানে নিয়মিত শুটিং জট লেগেই থাকত এখন সেখানে ফাঁকা পড়ে থাকতেই দেখা যায়। নেই উন্নত মানের ক্যান্টিন। সব ফ্লোরের মেকাপ রুমগুলোও ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর টয়লেটগুলোর অবস্থা তো আরও নাজুক।

সাত একরের বেশি জায়গাজুড়ে দাঁড়িয়ে আছে এফডিসির ভবনগুলো। শুটিংয়ের জন্য রয়েছে ৯টি ফ্লোর এবং ১৪টি মেকাপ রুম। এর মধ্যে মাত্র দুটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রয়েছে দুটি ডাবিং থিয়েটার। কিন্তু থেকেও যেন কিছু নেই। এমনকি এফডিসিতে নেই উন্নত মানের লাইটও। ডিজিটাল সিনেমার কালার কারেকশন নেই। ফ্লোরগুলো তো অনেক দিন থেকেই অগোছালো। ডাবিং রুমের করুন অবস্থা। সবকিছু মিলিয়ে পরিত্যক্ত এক এফডিসি যেন! যতদিন না এর পরিবর্তন না হবে ততদিন মৃতপ্রায় হয়েই বেঁচে থাকতে হবে এফডিসিকে। অবার এমন সমস্যার সমাধান না করে চলে রাজনীতি। এফডিসি যেন এখন রাজনৈতিক কোনো প্রতিষ্ঠান। দলাদলি ,রেষারেষি চলছে হরদম। ব্যস্ত অভিনয় শিল্পী কেউ এফডিসিতে আসে না বললেই চলে।

গত সপ্তাহের শেষের দিকে এফডিসির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আমির হোসেন। এফডিসির প্রায় ৩০০ লোকবলকে নিয়ে ডেকেছিলেন এক সভা। সেখানে কর্মচারিরা নানা সমস্যা তার সামনে তুলে ধরেন। গ্রুপিংয়ের কথাও তারা তুলে ধরেন। এখন দেখার বিষয় নতুন এমডি কতটা নতুন করতে পারেন সমস্যায় জর্জরিত এফডিসিকে।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ/জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭