ইনসাইড বাংলাদেশ

এই গাড়ি আসছে, গাড়ি আসছে…

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/10/2017


Thumbnail

রিকশা চালক খলিল মিয়া অল্প টাকায় মাছ কিনতে এসেছিলেন কারওয়ান বাজারের পাশেই রেললাইনে বসা মাছ বাজারে। ছয় বছরের ছেলেও এসেছিল বাবার সঙ্গে। বড় একটা রুই মাছ পছন্দ করে তাঁর ছেলে। একবার পকেটের দিকে আরেকবার ছেলের মায়াবী মুখের দিকে তাকায় খলিল। এত টাকা দিয়ে মাছ কিনলে বাকি বাজার করবে কি দিয়ে? ছেলের আবদার ফেলতে পারলেন না খলিল মাছটি কিনেই ফেললেন। অনেক দিন পর এত বড় মাছ কিনেছিলেন বউছেলে নিয়ে এক একত্রে বসে খাবে বলে! কিন্তু মাছ খাওয়া হলো না খলিলের।

ট্রেন আসছিল, ছুটাছুটি করছিল সবাই। বাজারের ব্যাগ হাতে ছেলেকে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার সময় খলিলের পা আটকে যায় রেললাইনে। আর ততক্ষণে ট্রেন কেড়ে নেয় খলিলের প্রাণ। সবার চোখের সামনেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয় খলিলকে। ঘটনাটি যদিও কাল্পনিক। কিন্তু রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ঠিক পাশেই রেললাইনেরে উপর যে মাছের বাজার বসেছে, সেখানে এমন দুর্ঘটনা ঘটবে না তার নিশ্চয়তা কে দিবে?

দীর্ঘদিন ধরেই বসছে এই মাছের বাজার। বেচা বিক্রি চলে হরদম।পাশেই কারওয়ান বাজার থাকলেও কম দামে মাছে কিনার আশায় এখানে ভিড় জমায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। ভোর থেকেই শুরু হয়ে বাজার চলে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

শুধু কারওয়ান বাজারের পাশেই নয় রাজধানীর মালিবাগ, নাখালপাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মতো এরকম শত শত বাজার বসতে দেখা যায়। যার ফলে প্রতিনিয়তই রেললাইনে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বেড়েই চলছে। মাঝে মাঝেই এসব জায়গা থকে দুর্ঘটনার সংবাদ শোনা যায়। প্রত্যেকটি বাজারই যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

কিছুক্ষণ পর পর ট্রেন আসলেই শুরু হয় দৌড়- ঝাপ। এটা কোনো প্রতিযোগিতার দৌড়-ঝাপ নয়, জীবন বাচাঁনোর দৌড়- ঝাঁপ। ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গেই সবাই গাড়ি আসছে, গাড়ি আসছে চিৎকার করতে শুরু করে। এভাবেই জীবন মরনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।

অভিযোগ উঠেছে কিছু কুচক্রী মহল রেললাইনে বাজার বসিয়ে তাঁদের স্বার্থ উদ্ধার করছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনিখেলছে। কিন্তু  দেখার  কেউ নেই  এইসব।

রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রেললাইন ঘিরেই গড়ে উঠেছে শত শত ছোট ছোট ঘর। সেখানেই বসবাস করছে হাজার হাজার বস্তিবাসী। এখানকার চিত্র আরওভয়াবহ। প্রত্যেকটি ঘরই যেন এক একটা মাদকের কারখানা। এখানে এসে মাদকসেবীরা বিভিন্ন ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য খাচ্ছে। সারা দিন কম বেশিমাদক দ্রব্য বেচাকেনা হলেও সন্ধ্যার দিকে বেড়ে যায় বেচাবিক্রি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে এসব মাদকের ব্যবসা। আর এই সুযোগে নেশায় জড়িয়ে পড়ছে  যুবসমাজ। ধ্বংসের দিকে দাবিত তাদের সুন্দর ভবিষ্যত।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭