ইনসাইড থট

আওয়ামী নেতা-কর্মীরা ভাবুন আগামী ৪০ বছরের কথা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 23/06/2021


Thumbnail

দেশের পুরোনো রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ যখন দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে, তখন বেশি আলোচনায় আসবে দলের বর্তমান সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম । কারণ ৭২ বছরের মধ্যে তিনিই দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৪১ বছর ধরে এবং একটানা। আরো একটু বাড়িয়ে বললে বলা যায় বিগত এক দশকের মত এমন সুসময় খুব কমই ভোগ করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। একটানা একযুগ সরকারে থাকার কৃতিত্বও অজিত হয়েছে এই সময়ই। আর এসব কিছুরই সাফল্যের পালক হিসেবে যুক্ত হয়েছে শেখ হাসিনার জয়ের মুকুটে। শেখ হাসিনা দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের স্বস্থিতে রেখেছেন একযুগ। আপনারা সবাই মিলে স্বস্থি দিন দলের সভাপতিকে। ভাবুন আগামী ৪০ বছরের কথা। 

যদি ইতিবাচকভাবে দেখার চেষ্টা করি, তাহলে বলবো শেখ হাসিনাই তেমন একজন দলীয় প্রধান যিনি নবীন-প্রবীনের সমন্বয়ে দল গুছিয়েছেন। এমনকি ১৯৮১ সালে তিনি যখন দলের দায়িত্ব নেন, তার পাঁচ বছর পরে যিনি জন্ম নিয়েছে তাকেও তিনি নিজের সহযোদ্ধা হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রেখেছেন। আবার অতি প্রবীনদের সম্মান দিয়ে রেখেছেন দলের উপদেষ্টামন্ডলীতে। শেখ হাসিনাই চেষ্টা করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে একটি যৌক্তিক লক্ষণরেখা টানার। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে শেখ হাসিনা নিজেসহ মাত্র তিনজন মন্ত্রিসভার সদস্য। আবার চারজন যুগ্ম সম্পাদকের মধ্যে দুজন মন্ত্রী। আটজন সাংগঠনিক সম্পাদকের একজনও নেই মন্ত্রিসভায়। 

আবার যদি বাকা চোখে তাকিয়ে কেউ যদি বলে যে অনেক অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং মন্ত্রণালয় চালানোর দক্ষতা থাকা সত্বেও তাদেরকে সাইড লাইনে বসিয়ে রাখা ঠিক নয় । করোনা মোকাবেলায় যথেষ্ট অর্জন আছে, কিন্তু সমন্বয়হীনতা এবং দুর্নীতি বন্ধতো দুরের কথা বরাদ্দ করা টাকা খরচ না করার অদক্ষতাকেও তো আমলে নিতে হবে। দলের পদবাণিজ্য ও মনোনয়নবাণিজ্য থেকেও তো দলকে দুরে রাখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নেতারাই এসব কথা বলছেন। “ হাইব্রিড “  “ কাউয়া “ বা “ অনুপ্রবেশকারী” শব্দগুলো আমদানী করেছেন দলের বড় নেতারাই। আমপাবলিক শুধু জনপ্রিয় করেছে এগুলোকে সমর্থন করে।
 
দলের বয়স ৭২, দেশ স্বাধীনের নেতৃত্বদানকারী দল আবার গত ৫০ বছরের মধ্যে ২০ বছরের বেশি সময় সরকারের ছিল, আছে। তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশে একটানা ক্ষমতায় থাকার বিপদই বেশি। ভারতের কেন্দ্রে কংগ্রেস আর পশ্চিমবাংলায় সিপিএম আমাদের ঘরের কাছের উদাহরণ। সময় থাকতে সর্তক হওয়াই জ্ঞানের পরিচয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দাড়িয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বুক ফুলিয়েই কথা বলবে, মুজিব শতবর্ষ পালনের সময় তারা উদীপ্ত থাকবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্ষমতায় থাকলেই সুবিধাভোগী, চাটুকার আর সুযোগসন্ধানীর ভীড় বাড়ে। ২০০১ সালের অক্টোবরের পর সুধাসদনের চারপাশ কাছে থেকে দেখেছি। প্রায় একই রকম ছিল ১৯৯১ সালের ২৭ ফিব্রুয়ারির পর ৩২ ধানমন্ডির চারদিক। 

১৯৮১ সালের ১৭ মে নিঃস্ব-রিক্ত শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদেরকেই স্বজন ভেবে উজানে নৌকা ঠেলেছেন ২১ বছর। ২০০১ সালের পানিতে পরেও সাতড়ে পাড়ে উঠেছেন । সকল সমালোচনা, দেশ-বিদেশের ষড়যন্তের জাল ছিন্ন করে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে, ক্ষমতায় টিতে থাকার কৌশল কাজে লাগিয়ে “ শান্তি-স্বস্থির একযুগ “ দিয়েছে শেখ মুজিবের আদর্শের সৈনিকদেরকে। দলের বয়স ৭২ , সভাপতি হিসেবে চালিয়ে যাচ্ছেন ৪১ বছর, আওয়ামী লীগাররা প্রস্তুতি নিন কিভাবে চলবেন আরো ৪০ বছর। 

সবকিছুই কেন দেখতে হবে একজনকেই। দলে পদ পেতে এতো লবিং, মনোনয়ন পেতে, দিতে ” বাণিজ্য “ তো কম হয় না, তাহলে দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের এতা বেশি সংখ্যাক এমপি আর কখনও ছিল না, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র শত শত, হাজারো ইউপি চেয়ারম্যান, শুধু মার্কা চাই? বুক হাত দিয়ে বলেন দল ক্ষমতায় , জনসেবায় অসুবিধা কি ? প্রধানমন্ত্রী, সভাপতি পদ্মাসেতু দেখালেন সারাবিশ্বকে, দেশেকে নিয়ে গেলেন ইলেকট্রনিক ট্রেনের যুগে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে, ইউনিয়নে, পৌরসভায়, সিটি করপোরেশনে আপনারা জনপ্রিয় নন কেন ? গাজীপুরের মহাসড়ক র্দুভোগ আর রাজধানীর মহল্লার গলিতে উন্নয়নের র্কালভাটে আমাদের পা ভেঙ্গে যেতে হয় হাসপাতালে, সবকিছুর জন্যই তাকিয়ে থাকতে হবে শেখ হাসিনার জন্য। উনিতো ২০১৪, ২০১৮ দুদবার ঝুঁকি নিয়ে, সমালোচিত হয়ে জয়ী হয়েছেন। এবার আপনারা সবাই মিলে দায়িত্ব নেন যাতে, তার সরকারের আওয়ামী লীগের কোনো বদনাম না হয়। নাকি এজন্যও থাকবেন “ নেত্রীর নির্দেশের “ অপেক্ষায়?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭