ইনসাইড হেলথ

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/10/2017


Thumbnail

দেশের মানুষের মাঝে খাদ্য গ্রহণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আগের চেয়ে ভাত ও আটা অর্থাৎ শর্করা গ্রহণের হার কিছুটা কমেছে। তাছাড়া শাক-সবজি খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ছয় বছরে দ্বিগুণ হয়েছে ডিম গ্রহণের হার। তবে দেশে আমিষ বা প্রোটিন গ্রহণের হার কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সম্প্রতি প্রকাশিত খানা আয় ব্যয় জরিপ-২০১৬ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপ অনুযায়ী মোট খাদ্য গ্রহণের হার পূর্বের তুলনায় কিছুটা কমেছে। কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ বেড়েছে। ২০১০ সালে দৈনিক মাথাপিছু এক হাজার গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করা হলেও ২০১৬ সালে গ্রহণ করা হচ্ছে ৯৭৬ গ্রাম। চাল ও আটা গ্রহণের হার পূর্বের তুলনায় কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে ডাল, শাক-সব্জি, মাছ, মুরগরি মাংস ও ডিম খাওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে চাল ও আটা গ্রহণের পরিমান ছিল দৈনিক ৪১৬ দশমিক ০১ গ্রাম ও ২৬ দশমিক ০৯ গ্রাম। ২০১৬ সালে তা হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ৩৬৭ দশমিক ১৯ গ্রাম ও ১৯ দশমিক ৮৩ গ্রামে। এ হ্রাসের ফলে খাদ্য ক্যালরি গ্রহণের হারও কিছুটা কমেছে। ২০১০ সালে মোট  ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিল দৈনিক ২৩১৮ দশমিক ৩ কিলোক্যালরি যা ২০১৬ তে দাঁড়িয়েছে ২২১০ দশমিক ৪ কিলোক্যালরি। প্রোটিন গ্রহণের হার ২০১০ সালে ছিল ৬৬ দশমিক ২৬ গ্রাম, যা ২০১৬ সালে ৬৩ দশমিক ৮০ গ্রামে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) স্বাধীনতা পরবর্তী সময় হতে খানার আয়-ব্যয় নির্ধারণ জরিপ করে আসছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩-৭৪ সালে প্রথম এই জরিপ অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯৫-৯৬ সালের পর হতে প্রতি ৫ বছর অন্তর এই জরিপ অনুষ্ঠিত হয়। এ জরিপ হতে খানার আয়-ব্যয়, ভোগ, পুষ্টিমান, জীবনযাত্রারমান সম্পর্কিত তথ্য, দারিদ্র্য হার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। এবারের সর্বশেষ প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের এপ্রিল হতে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

এবারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিগত সময়ের তুলনায় মানুষের খাদ্যাভাষের মধ্যে মাছ গ্রহণের হার বেড়েছে। তাছাড়া কমেছে দুধ, চিনি গ্রহণের হার। গরু ও খাসির মাংস গ্রহণের হারও কমেছে। বাইরের খাবার গ্রহণের হার কিছুটা বেড়েছে। বিবিএস উল্লেখ করেছে, নন-ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণের হার বৃদ্ধি পাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো সংবাদ।

মাছ গ্রহণের হার ২০১০ সালে দৈনিক গড়ে ৪৯ দশমিক ৫০ গ্রাম থেকে ২০১৬ সালে ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম হয়েছে। দুধ ও দুধ গ্রহণের হার ৩৩ দশমিক ৭২ গ্রাম হতে কমে ২৭ দশমিক ৩১ গ্রাম হয়েছে। ফল গ্রহণ ৪৪ দশমিক ৭০ গ্রাম থেকে কমে ৩৫ দশমিক ৭৫ গ্রাম হয়েছে। চিনি গ্রহণের হার ৮ দশমিক ৪০ গ্রাম থেকে কমে ৬ দশমিক ৯০ গ্রাম হয়েছে। খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব উপাদানের বাইরে অন্যান্য খাবার আগে গড়ে ৭২ দশমিক ৭৮ গ্রাম খাওয়া হলেও এটি বেড়ে এখন ৮০ দশমিক ৬২ গ্রাম হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম বারের মতো খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় খাদ্যের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। যা উন্নয়নের একটি নির্দেশনা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে খাদ্য বাহির্ভূত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৩০ ভাগ যা ২০১০ সালে ছিলো ৪৫ দশমিক ১৯ ভাগ।

বিবিএস এর প্রতিবেদন অনুযায়ী পরিবারগুলোর জীবন মানেও কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করাগেছে। খানার বাসস্থানের দেয়ালের উপকরণ ইট/সিমেন্ট এর হার ২০১০ সালে ছিলো ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৫ ভাগ। টিন ও কাঠের দেয়ালের হার ২০১০ সালে ছিলো ৩৮ দশমিক ৪৬ ভাগ যা ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ১২ ভাগ। ২০১০ সালে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে এমন পরিবারের হার ছিলো ৫৫ দশমিক ২৬ ভাগ। ২০১৬ সালে বিদ্যুতের এই হার ৭৫ দশমিক ৯২ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিলো ৫৭ দশমিক ৯ ভাগ। ২০১৬ সালে এই হার হয়েছে ৬৫ দশমিক ৬ ভাগ। সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিতে উপকারভোগী ২০১০ সালে ২৪ দশমিক ৬ ভাগ হতে ২০১৬ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ২৮.৭ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০১০ সালে দেশে অক্ষম লোকের হার ছিলো ৯ দশমিক শুণ্য ৭ ভাগ যা ২০১৬ সালে হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ। ২০১০ সালে ৩২ শতাংশ মানুষ কোন না কোন উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করেছে, ২০১৬ সালে এ হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭০ ভাগ। ২০১০ সালে দেশে দুর্যোগ আক্রান্ত খানার পরিমাণ ছিল মোট খানার শুণ্য দশমিক ৮৪ ভাগ, যা ২০১৬ সালে দাঁড়ায় শুন্য দশমিক ৮৬ ভাগ।

 

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭