ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে তারেক পেগাসাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/07/2021


Thumbnail

পেগাসাস হলো এক ধরণের আধুনিক প্রযুক্তি, যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্যের ফোনে আড়িপাতা যায়। ইসরায়েলের একটি প্রতিষ্ঠান এই স্পাইওয়্যার প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে তা প্রকাশ্যে এবং গোপনে বিক্রি করছে। এই পেগাসাস ব্যবহার করে আরেকজনের ফোনের সব তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়, ওই ফোনের ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার এবং অন্যান্য সমস্ত যাবতীয় তথ্য, ফোন নাম্বার, কথোপকথনের বিবরণ, মেসেজের বিবরণ সংগ্রহ করা যায়। এটি একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র যার মাধ্যমে গোপনীয়তার সবকিছু উপড়ে ফেলা হয় এবং যেটি বাকস্বাধীনতা এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমেনেস্ট ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতা একযোগে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে যে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে এই পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে।

পেগাসাসের মতই বিএনপিতে কিছু ব্যক্তি আছে যারা বিএনপির অন্যান্য নেতাদের ভেতরে আড়ি পেতে থাকেন, তাদের ভেতরের খবরগুলো সংগ্রহ করেন, তারা প্রকাশ্যে কি বলছেন গোপনে কি আলোচনা করছে দুটোর পার্থক্য বের করেন। তারা কার সাথে যোগাযোগ করছেন এবং কোথা থেকে অর্থ পাচ্ছেন ইত্যাদি তথ্য খুঁজে বের করেন। এই সমস্ত বিএনপির ছোট এবং মাঝারি সারির নেতারা অন্য নেতাদের সঙ্গে মিশে তথ্য আদায় করেন। এদেরকে এখন নাম দেওয়া হয়েছে তারেকের পেগাসাস। এরা তারেকের এক ধরনের স্পাই হিসেবে কাজ করেন যারা বিএনপির ভিতর থেকে বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের গোপন তথ্য, ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিবরণ ইত্যাদি হাতিয়ে নেন এবং তারেককে পাঠিয়ে দেন। আর এই তথ্যগুলো পেয়েই তারেক আসলে বুঝতে পারেন যে, এই নেতা কতটুকু তার প্রতি অনুগত এই নেতার সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক কি পর্যায় রয়েছে এবং বিএনপির প্রতি তিনি কতটা নিষ্ঠাবান। এরকম কয়েকজন নেতা এখন বিএনপিতে আছেন যারা আসলে তারেকের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন যাদের প্রধান কাজ আন্দোলন করা নয়, সংগ্রাম করা নয়, রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামা নয়। বরং বিএনপির নেতাদের তথ্য সংগ্রহ করা এবং তাদের গোপন খবরগুলো তারেককে পৌঁছে দেওয়া। এরকম নেতাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন:

তাবিথ আউয়াল: তাবিথ আউয়াল কোন বড় মাপের নেতা নন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে তার পিতার বদলে তিনি মনোনয়ন পেয়ে আলোচনায় এসেছেন। এমনি একজন ক্রীড়া সংগঠক কিন্তু এখন তিনি তারেকের পেগাসাস হিসেবেই কাজ করছেন। তারেককে বিভিন্ন নেতাদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া, বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে সরকারের গোপন যোগাযোগের তথ্য পৌঁছে দেওয়াই তাবিথ আউয়ালের অন্যতম প্রধান কাজ।

ইশরাক হোসেন: গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ঢাকা দক্ষিণের মনোনয়ন পেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন ইশরাক হোসেন। কিন্তু ইশরাক হোসেনের মূল পরিচয় হলো তিনি বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সাথে সখ্য গড়ে তোলেন, বিভিন্ন নেতাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন, তাদের সাথে মন খুলে কথা বলেন এবং তাদের মনের খবরটা জানেন। এই মনের খবরটি তিনি লন্ডনে পাচার করে দেন।

রুমিন ফারহানা: রুমিন ফারহানা হঠাৎ গজিয়ে উঠা বিএনপির নেতা। বিএনপির নেতারাও তাকে হাইব্রিড বিএনপি বলে অভিহিত করেন। বিশেষ করে একটি মাত্র সংরক্ষিত আসনে রুমিন ফারহানার মনোনয়ন বিএনপির অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। সেই রুমিন ফারহানারও প্রধান কাজ হলো তথ্য সংগ্রহ করে তারেককে পাঠানো। তবে রুমিন ফারহানা শুধু বিএনপি নেতাদের তথ্যই পাঠান না, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন, তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেও তিনি লন্ডনে পাঠান।

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন: ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডাবল এজেন্ট হিসেবে বিএনপিতে পরিচিত। একদিকে তার সঙ্গে যেমন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সম্পর্ক রয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার আইনগত দিকগুলো যেমন তিনি দেখাশোনা করেন তেমনি তিনি বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের গোপন তথ্যগুলো সংগ্রহ করে লন্ডনে পাঠিয়ে দেন।

নিপুণ রায়: নিপুণ রায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ। কিন্তু তার নিজস্ব পরিচয় আছে। তারেকপন্থী আগ্রাসী নারী নেতা হিসেবে পরিচিত। তবে তার মূল বিষয়টি হলো তিনি সার্বক্ষণিকভাবে ঢাকা এবং জেলার রাজনৈতিক খবরাখবর বিশেষ করে বিএনপির কোন নেতা কি করছে ইত্যাদি খবর লন্ডনে পৌঁছে দেন মুহূর্তের মধ্যে। আর এইজন্যই তাকে একজন রাজনৈতিক কর্মীর চেয়ে তারেক জিয়ার এজেন্ট হিসেবে মনে করা হয়।

এরকম আরো কিছু স্পাই রয়েছে বিএনপিতে যাদের প্রধান কাজ হলো তারেককে তথ্য সরবরাহ করা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭