প্রকাশ: 24/07/2021
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ২০ তারিখে গ্লোবাল সিকিউরিটি এক্সপার্টদের নিয়ে আমরা একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার করেছি। কারণ, গত আফগান যুদ্ধের সময় ৮ হাজারের ওপর এখান থেকে তালেবানরা গিয়েছে শুধু ওখানে জিহাদ করতে। এখন আবার সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটছে সেখানেও কয়েক হাজার ইতিমধ্যে চলে গেছে বাংলাদেশ থেকে। আমি তালেবান কমান্ডার ইউনূসের ইন্টারভিউ করেছিলাম। সে তখন বলেছিল যে, আমরা ছিলাম অনেকে কিন্তু ৫ হাজার ফেরত এসেছে। ফেরত এসে তারা এখানে ট্রেইন্ড করিয়েছে। তারাই তো পরবর্তীকালে এসব ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা সাউথ এশিয়ার সিকিউরিটিই একটি বিরাট রকমের চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াবে। আমাদের এখানে পাকিস্তানের এক্সপার্টরা থাকবে, আফগান থাকবে, ভারত, বাংলাদেশ এবং ন্যাটোও আমরা রাখছি। সবাইকে নিয়ে একটা আলোচনা হবে।
আফগানিস্তানে আবারও তালেবানদের উত্থান, বাংলাদেশের হেফাজতের সাথে তালেবানদের সম্পর্ক ইত্যাদি সহ সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন শাহরিয়ার কবির।
শাহরিয়ার কবির বলেছেন, হেফাজতের বেশির ভাগ নেতাই যারা নেতৃত্বে আছেন তারা সবাই আফগান ফেরত। হরকাতুল জিহাদের যারা আছে, এখন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এরা সবাই। মুফতি এজহার থেকে শুরু করে এরা অনেক বই লিখেছে যারা, জিহাদীদের যে বইগুলো সেখানে প্রচুর লেখা আছে আফগানের। আমেরিকার একটা পলিসি যে সেখানে তারা ভালো তালেবান, খারাপ তালেবান বাছাই করছে এবং তালেবানদের সঙ্গে মিটিং করছে। তালেবানরা তাদের নিশ্চিত করছে যে আগের মত হবে না। কিন্তু তালেবানদের পলিসি কোনো চেঞ্জ হয়নি। এখন সরকারের পলিসি মেকারদের বলা হয়েছে যে হেফাজত এবং জামায়াত এক নয়। হেফাজত বেসিক্যালি জামায়াত বিরোধী। হেফাজতিরা মওদুদীর বিরুদ্ধে। কতগুলো পুরনো কাগজ থেকে তারা এগুলো বলে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২০১৪ সালেই বলেছি, শফীর লেখা কোট করেছি যে, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের মতপার্থক্য আছে কিন্তু কিন্তু বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা জামায়াতের সঙ্গে একসাথে কাজ করতে পারি। মতপার্থক্য, জামায়াত মনে করে যে তারা ডেমোক্রেটি মিন্ট ব্যবহার করতে পারে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। আর এরা মনে করে যে, না ডেমোক্রেটি মিন্টের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। খেলাফত করতে হবে, জিহাদ করতে হবে। কিন্তু ক্ষমতায় গেলে যে বাংলাদেশ হবে শরীয়া স্টেট এটার ব্যাপারে তো ওদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। শাহরিয়ার কবিরের গলা কাটোতে হবে এ নিয়ে জামায়াত-হেফাজতের মধ্যে কোন বিরোধ নাই। তসলিমা নাসরিন মুর্তাদ, কাফের -তার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। শরীয়া স্টেট কায়েম হবে, বাংলাদেশ শরীয়া ল অনুযায়ী চলবে এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। মানব সৃষ্ট সংবিধান, মানব সৃষ্ট আইন তারা মানে না। এসময় নিয়ে জামায়াত-হেফাজত বা অন্যান্য মিলিট্যান্টদের মধ্যে মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। হেফাজতের ১৩ দফার কোনটিই নতুন না। প্রত্যেকটি জামাতের পুরনো দফা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাবুনগরীর বৈঠক প্রসঙ্গে শাহরিয়ার কবির বলেছেন, আমরা এর সমালোচনা করেছি। স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী বানচাল করতে চেয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার দৃষ্টতা দেখিয়েছে। এটা হেফাজতকে বোঝানোর জন্য কিছু গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বুঝানো হয়েছে যে, তোমাদের প্রশ্রয় দিয়েছে বলে তোমরা এতদূর যেতে পার না। হেফাজত এখন বলছে যে, সরি বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। ওটা আমরা না। আমাদের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ছিল। ওদেরকে আমরা বাদ দিয়ে দিয়েছি। আমরা নতুনভাবে শুরু করতে চাই। আর এখন আমাদের আলেম-ওলামাদের হ্যারেস করা চলবে না। এগুলো যারা বোঝাচ্ছে এবং সরকারও সেটা বুঝছেন। না হলে বাবুনগরী কি করে জেলের বাইরে থাকে। বাবুনগরীকে কিন্তু বাইরে রেখেছে তারা নেগোশিয়েট করার জন্য।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাংলাদেশ। ন্যাটো আমেরিকা যদি উইড্রো করে তাহলে এখনি জাতিসংঘকে ডিক্লেয়ার করতে হবে। আফগানিস্তানকে আমরা এইভাবে হায়নাদের মধ্যে ছেড়ে দিতে পারি না। তারা যেরকম সরকার চাচ্ছে সেরকম সরকার পাবে তারা। কিন্তু আমরা তো এফেক্টেড হচ্ছে তাদের দ্বারা। কারণ, জিহাদীদের কোনো বাউন্ডারির প্রতি সম্মান নেই। তারা ভৌগলিক বাউন্ডারিও মানেনা, রাজনৈতিক বাউন্ডারিও মানেনা। কিন্তু সারা পৃথিবীতে তাদের জিহাদের জায়গা। আফগানিস্তানে জিহাদ হলে কি আমেরিকা নিরাপদ থাকবে? ইউরোপ নিরাপদ থাকবে? পাকিস্তান তালেবানাইজড হয়ে যাবে এবং পাকিস্তান আরও স্ট্রং হবে জিহাদ উৎপাদনের ক্ষেত্রে। আমি যেটা বলি, পাকিস্তান হচ্ছে ওয়ান অফ দা লার্জেস্ট জিহাদ ম্যানুফেকচারিং কান্ট্রি, জিহাদ এক্সপোর্ট কান্ট্রি। সবচেয়ে বড় জিহাদ এক্সপোর্টিং কান্ট্রি হচ্ছে পাকিস্তান।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭