নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 24/07/2021
ড. ইউনূস আরেকটি সাফল্যের তিলক মাথায় পরলেন। অলিম্পিক লরেল হিসেবে সম্মানিত হলেন। গতকাল জাপানের রাজধানী টোকিওতে অলিম্পিকের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে তাকে অলিম্পিক লরেল প্রদান করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি সম্মানিত হয়েছেন, স্বীকৃত হয়েছেন। ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি সামাজিক ব্যবসা নামে একটি নূতন কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। বিভিন্ন দেশে সামাজিক ব্যবসার বিস্তার এবং বিকাশ ঘটিয়ে ঘটিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিদেশে প্রায়ই তাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। বিদেশে অতিথি হিসেবেও তিনি সম্মানিত হন, বক্তব্য রাখেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। বাংলাদেশের মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন মানুষ বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছেন এবং সম্মানিত হয়েছেন তাদের মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের অনেক মানুষই অনেক ভালো ভালো কাজ করলেও আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত হননা। তারা সম্মানিত হতে হয়তো পছন্দ করেন না, নীরবে-নিভৃতে দেশের জন্য জনগণের জন্য কাজ করতে পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিরল ব্যতিক্রম। তিনি দেশের কাজের চেয়ে বিদেশে বিভিন্ন বক্তব্য বিবৃতির মাধ্যমে পুরস্কার নেওয়ার ক্ষেত্রেই বেশি পারঙ্গম এবং অলিম্পিক লরেল প্রাপ্তি তার একটি বড় উদাহরণ। বাংলাদেশে যখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সম্মাননা গ্রহণ করলেন তখন বাংলাদেশ করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করছে, প্রতিদিন ২০০ এর কাছাকাছি মৃত্যু, আক্রান্তের হার ৩০ শতাংশের উপর। এরকম একটি বাস্তবতায় বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে টিকা প্রাপ্তি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টিকার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে উপহার হিসেবে বিভিন্ন টিকা সংগ্রহ করছে। প্রবাসী বাঙালিরাও টিকা প্রাপ্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে এবং বিভিন্ন জায়গায় দেন-দরবার করে টিকা পাচ্ছে। টিকা প্রাপ্তি ছাড়াও বাংলাদেশের একটি বড় ইস্যু হলো জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানানো, জনগণকে সচেতন করা, মাস্ক যেন পরিধান করে সে ব্যাপারে জনগণকে সজাগ করা। এই সমস্ত বিষয়গুলোতে প্রত্যেকটি মানুষের ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে ড. ইউনূসের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানুষের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু গত দেড় বছরে বাংলাদেশের করোনা মোকাবেলায় ড. মুহম্মদ ইউনূসকে আমরা কোনো কর্মকাণ্ডে দেখিনি। না তিনি বাংলাদেশের টিকা প্রাপ্তির জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেন-দরবার করছেন, না তিনি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা যেন মাস্ক পরে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেশের মানুষের ব্যাপারে এত অনীহা কেন সে নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কোন সময় বাংলাদেশের কোন সঙ্কটে তিনি থাকেন না। কিন্তু করোনা একটি আন্তর্জাতিক এবং বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ইতিমধ্যে বলেছেন যে, বিশ্বের ১০টি ৭৫ ভাগ টিকা ভোগ করছে। এরকম পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মত ব্যক্তি যিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যদি দেশের জন্য যদি এই ছোট্ট অবদানটুকু রাখতেন, তাহলে নিশ্চয়ই তার অলিম্পিক লরেল প্রাপ্তি আরও মহিমান্বিত হত। কিন্তু দেশের মানুষকে দূরে রেখে, উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় বড় পুরস্কার লাভ করে কি লাভ হবে? এতে কি ড. ইউনূস মহিমান্বিত হবেন?
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭