ইনসাইড টক

‘জরুরী ভিত্তিতে গার্মেন্টস কর্মীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা উচিৎ’


প্রকাশ: 01/08/2021


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেছেন, একদিকে ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেঙ্গু আর করোনা। আবার এইদিকে অর্থনীতির চাকাকেও তো সচল রাখা দরকার। মানুষের জীবিকাও চলছে না। আবার অনেকে বলে জীবনটা আগে বাঁচুক পরে জীবিকা। কিন্তু জীবনটা কি দিয়ে যাবে। তার জন্য তো জীবিকা লাগবে। ফুয়েল ছাড়া কি আর গাড়ি চলবে। জীবন-জীবিকা একটা সঙ্গে একটা ওতপ্রোতভাবে কিন্তু জড়িত। করোনায় যে গার্মেন্টস খুলে দিয়েছে, তাই আমার মনে হয় তাড়াতাড়ি জরুরী ভিত্তিতে সমস্ত গার্মেন্টস কর্মীদেরকে ভ্যাকসিন আগে দেয়া উচিত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। ভ্যাকসিন দিয়ে ভালোভাবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গার্মেন্টস খুলতে হবে। কারণ, লকডাউন তো কতদিন থাকবে, মানুষ তো লকডাউন মানেও না। সুতরাং আমার মনে হয় যে প্রশাসন বোধহয় জরুরী ভিত্তিতে যত তাড়াতাড়ি পারে সকল গার্মেন্টস কর্মীদের ভ্যাকসিন এর আওতায় এনে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দেশ দেয়া উচিৎ। কারণ, এই ঢিলাঢালা, হাফ লকডাউন, আধা লকডাউন, ফুল লকডাউন এগুলো দিয়ে কোন লাভ হয়না।

মহামারি করোনা সংক্রমণের পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপে যখন সারাদেশ বিপর্যস্ত তখন খুলে দেয়া হলো গার্মেন্টস কলকারখানা। চলমান পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস খোলা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, বিধিনিষেধ বাড়ানোর সুপারিশ করা হলো এটা সত্য তবে তার আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটা কথা মনে রাখতে হবে যে যারা গার্মেন্টস কর্মী, নিম্ন আয়ের লোক না খেয়ে থাকে, দিন আনে দিন খায় তাদের জন্য যতদিন পর্যন্ত লকডাউন থাকবে ততদিন যেন তাদের নূন্যতম চাহিদা পূরণ করা হয়। নাহলে এই লকডাউনে কিছু হবে না, মানুষ ঠিকই রাস্তায় বেরিয়ে যাবে। যারা রিকশা নিয়ে বের হচ্ছে তারা তো পেটের দায়েই বের হচ্ছে, এমনি বের হয়নি। সুতরাং, তারা লকডাউন বাড়াতে পারে কিন্তু তার আগে মনে রাখতে হবে যতদিন লকডাউন নিম্ন আয়ের লোকদের তাদের নূন্যতম চাহিদা চাল, ডাল থেকে যা যা, সব যেন পূরণ করা হয়। নাহলে এটি সফল হবে বলে মনে হয় না। কারণ, পেটের চাহিদা পূরণ না করে ডেঙ্গু মারতে গেলে তো মানুষই মেরে ফেলবে। তাহলে তো লাভ হবে না। এদিকে যেন তারা নজর রাখেন।

ডেঙ্গু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শত্রু তো আমরা চিনিই। এটা তো এডিস মশা। এটা মশা নিধনে ঘরে বাইরে পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রশাসন তো বাহিরে করবে কিন্তু আমার ঘর আমাকেই পরিষ্কার করতে হবে। মানুষের বাসায় তো সিটি কর্পোরেশন যাবে না। নিজের ঘরে যদি জমা পানি কোথাও থাকে বাথরুমে বালতির মধ্যে, গামলার মধ্যে, ফ্রিজের নিচে, এসির নিচে, অনেকের বারান্দায় আবার ফুলের গাছ আছে সেখানে জমা পানি অথবা ছাদের উপর বাগান করে অনেকে বা বাসার চতুর্দিকে অর্থাৎ যেখানে পানি থাকে সেখানেই ডিম পাড়ে। এগুলো পরিষ্কার করা তো আমার নিজের দায়িত্ব। আমারটা আমাকেই পরিষ্কার করতে হবে। আর ঘরের বাহিরে প্রশাসন সমন্বয়ের মাধ্যমে উত্তর, দক্ষিণ, রাজউক, ভূমি মন্ত্রণালয় যারা আছে সবাই যদি মশা নিধন কার্যক্রমে উদ্যোগ নিতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ তো কঠিন না।

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, করোনা তো অদৃশ্য শক্তি। এর থেকে বাঁচার দুটি উপায়। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং ভ্যাকসিন নিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানে মাস্ক পরিধান করা আর দূরত্ব বজায় রাখা। অনেকে মাস্ক পরে না। যারা মাস্ক পরে না, স্বাস্থ্যবিধি মানেনা তাদের যেন মাস্ক পরতে বাধ্য করা হয়। এজন্য প্রশাসনের নড়েচড়ে বসতে হবে। লকডাউন দিয়ে যদি মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে তো লকডাউন কার্যকর হবে না। এর থেকে বাঁচার উপায় স্বাস্থ্যবিধি এবং টিকাদান। জনগণকে সচেতন হবে এবং নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রশাসন তার দায়িত্ব পালন করবে। তাহলে আমরা সংক্রমণ কমাতে পারবো।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭