নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 03/08/2021
মুজিববিরোধী তৎপরতা চালানো সম্পর্কিত অসংখ্য তথ্য ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। মার্কিন সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলজে তাঁর “বাংলাদেশ: দি আনফিনিসড রেভলিউশন” নামক গ্রন্থে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে খন্দকার মোশতাক এবং মুজিব হত্যাকারী সামরিক অফিসারদের যোগাযোগ সম্পর্কে বহু তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে। এ ছাড়াও জুলফিকার আলী ভুট্টোর জীবনী-লেখক স্ট্যানলি উলপার্ট তাঁর “জুলফি ভুট্টো অব পাকিস্তান: হিজ লাইফ অ্যান্ড টাইমস” বইতীমন কিছু তথ্য উল্লেখ করেছেন যা থেকে মুজিববিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়। উলপার্ট উল্লেখ করেছেন যে, ভুট্টো মুজিববিরোধী কয়েকটি দলকে তাঁর গোপন স্বেচ্ছাধীন তহবিল (Discretionary funds) থেকে অর্থসাহায্য অব্যাহত রেখেছিলেন। আগস্ট মাস (১৯৭৫) শেষ হবার আগেই ভুট্টো তাঁর বিনিয়োগের ফল লাভ করেন। ঐ বইতে আরও কিছু তথ্য আছে যেগুলো থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে, শেখ মুজিবের সরকারকে উৎখাতই শুধু নয় সংবিধানের পরিবর্তন করে “ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ” নাম গ্রহণে বাধ্য করতে মওলানা নিয়াজি নামে এক ব্যক্তিকে ভুট্টো সৌদি আরব ও আমিরাত-এ পাঠিয়েছিলেন।
বাংলাদেশেবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বহু দৃষ্টান্তের মধ্যে তোয়াহা এবং তাঁর দলের ভূমিকা ছোট করে দেখার উপায় নেই। স্বাধীনতা লাভের পরও তোয়াহা তাঁর পার্টির নামের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ’ লিখতে অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর পার্টি নামের আগে ’পূর্ব বাংলা’ বাদ দিয়ে শুধু সাম্যবাদী (মার্কিস্ট-লেনিনিস্ট) নামে পরিচিত হয়। তোয়াহার ‘বৃহত্তর বাংলা’ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বেইজিং ১৯৭২ সালে এক কূটনৈতিক সান্ধ্য-অনুষ্ঠানে জনৈক উচ্চপদস্থ চীনা কর্মকর্তা বলেছিলেন, চীন বৃহত্তর বাংলা পরিকল্পনা সমর্থন করবে।
সাম্যবাদী দলের ১৯৮৫ সালের ৭ নভেম্বর প্রচারিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দলের সভাপতি তোয়াহা ৭ নভেম্বরের তাৎপর্য সম্পর্কে বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ৭ নভেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনে দুটি সুদূরপ্রসারী তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ১৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের মাতৃভূমি সম্প্রসারণবাদীদের কবলমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনার মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ১৯৭১ সালে ১৩ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ববঙ্গে পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের হত্যাযজ্ঞে সাহায্যদানের জন্য গঠিত ‘শান্তি কমিটি’র সক্রিয় সদস্য সিলেটের মাহমুদ আলী (পূর্ব পাকিস্তান গণতান্ত্রিক দলের সেক্রেটারি জেনারেল) এবং ঢাকার ‘পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকা’র মালিক হামিদুল হোক চৌধুরী জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল বের করেছিলেন। এই মিছিল মুক্তিযুদ্ধ তথা বাংলাদেশবিরোধী ছিল। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন খাজা খয়েরউদ্দিন, গোলাম আযম, শফিকুল ইসলাম, পীর মোহসিনউদ্দিন (দুদু মিয়া), সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিয়া), মাহমুদ আলী, আবদুল জব্বার খদ্দর এবং এ.টি সাদী প্রমুখ। বাংলাদেশ এবং মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে এরা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছিলেন।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭