নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 04/08/2021
বাংলাদেশের শোবিজের তারকাদের আরেকটা ধাক্কা এলো। চিত্রনায়িকা পরীমনি আজ আটক হলেন। র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হলো। এর আগে যখন পরীমনি বোট ক্লাব বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তখনই তার বাসায় মাদকের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং পরীমনি বলেছিলেন যে, তিনি শো-পিস হিসেবে এগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য বাসায় রেখেছেন। কিন্তু আজ বিকেল চারটা থেকে র্যাবের একটি দল পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে এবং অভিযান পরিচালনা করার পর বিপুল পরিমাণ মাদক সহ তাকে আটক করে। এই আটকের মধ্য দিয়ে পরীমনির বিতর্ক নতুন মোড় নিলো।
উল্লেখ্য যে, ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়িকা পরীমনি এক ধরনের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন। তার ভেতরে একটা ডেমকেয়ার ভাব ছিল। কিন্তু গত জুন মাসে বোট ক্লাবের একটি ঘটনায় তিনি আলোচনার কেন্দ্রে আসেন। বোট ক্লাবের একটি ঘটনার পর তিনি ফেসবুক লাইভে এ ঘটনার বিচার চান। তিনি অভিযোগ করেন যে সেখানে তাকে জোর করে মদ খাওয়ানো হয়েছে এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এরপর তিনি সাভার থানায় গিয়ে বোট ক্লাবের সভাপতি এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা এবং হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। এরপর বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন সহ কয়েকজনকে পুলিশ উত্তরার একটি বাসা থেকে আটক আটক করেন। কিন্তু তাদেরকে আটকের পরপরই দৃশ্যপট পাল্টে যায় এবং পরীমনির সম্পর্কে নতুন তথ্য বের হতে থাকে।
প্রথমে অল কমিউনিটি ক্লাব থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয় এবং সেই সংবাদ সম্মেলনে অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি বলেন যে, পরীমনি তার ক্লাবে এসেছিলেন এবং ভাংচুর সহ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছিলেন। এই ঘটনার পর একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে পরীমনির উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কাহিনী এবং একের পর এক এসব ঘটনার জবাবেও পরীমনি বেপরোয়া আচরণ করতে থাকে এবং প্রত্যেকটি ঘটনাকে তিনি তিরস্কার এবং অসম্মানসূচক ভাবে খণ্ডন করার চেষ্টা করতে থাকেন। গণমাধ্যমে তার বাসায় মাদক রাখার ছবিও প্রকাশিত হয়েছিল।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, র্যাব কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে আটক করেছে। প্রথমত, সাম্প্রতিক সময়ে যে র্যাবের অভিযান চলছে যে অভিযানে পিয়াসা-মৌ আটক হয়েছে সেই ঘটনাগুলো সঙ্গে পরীমনির একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, পরীমনি বোট ক্লাবের ঘটনার পর থেকেই র্যাব-গোয়েন্দা এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গোয়েন্দারা পরীমনিকে অনুসরণ করেছিল এবং তার জীবনযাপন, আয়ের উৎস ইত্যাদি সম্বন্ধে খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পরীমনির বাসায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তৃতীয়ত, সাম্প্রতিক সময়ে শোবিজের নাম ব্যবহার করে তারকাদের যে মাদক ব্যবসা এবং অবৈধ সম্পদ সে নিয়ে বেশকিছু অভিযান হচ্ছে। সেই অভিযানের ধারাবাহিকতায় এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
তবে পিয়াসা বা মৌ এর সঙ্গে পরীমনির সম্পর্ক কি ছিল সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। একাধিক সূত্র বলছে যে, পিয়াসার একটি চেইন ছিল এবং শোবিজের বিভিন্ন নামীদামী তারকাদের সঙ্গে তিনি ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সখ্যতা করিয়ে দিতেন এবং অর্থ আদায় করতেন। বিশেষ করে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সন্তানরা ছিল পিয়াসা-মৌ চক্রের টার্গেট। এখন প্রশ্ন হলো যে, চক্রের সঙ্গে পরীমনির সম্পর্ক ছিল কিনা সেটি এখন একটি তদন্তের বিষয়, তবে সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে যে, পরীমনিকে আটকের পর তাকে আদালতে হাজির করা হবে এবং নিশ্চয়ই তাকে রিমান্ডে আনা হবে। রিমান্ডের মাধ্যমে হয়তো পরীমনির এই সব উচ্ছৃঙ্খল জীবন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭