ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচন প্রশ্নে প্রকাশ্য বিরোধে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/11/2017


Thumbnail

নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য কর্মীদের বিভ্রান্ত করছে। একদিকে বিএনপির নেতৃবৃন্দের একাংশ বলছে, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। কর্মীদের ওই সব নেতৃবৃন্দ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। অন্য অংশ আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কর্মীদের বলেছেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গত ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পর আদালতে জবানবন্দি আকারে তিনদিন এবং রোহিঙ্গা ত্রাণশিবিরে একদিন বক্তব্য রেখেছেন বেগম জিয়া। কিন্তু এসব কোনো বক্তব্যেই বেগম জিয়া নির্বাচন সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেননি। বেগম জিয়া দেশের ফেরার পর, দলের স্থায়ী কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বেগম জিয়া সহায়ক সরকার না বরং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারই বিএনপির দাবি বলে উল্লেখ করেন।

বিএনপিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।’ তাঁর এই বক্তব্য বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। যেকোনো পরিস্থিতি বলতে ব্যারিস্টার মওদুদ কি বোঝাতে চেয়েছেন? এ প্রশ্ন উঠেছে সহায়ক সরকারের দাবিতে অনঢ় বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এরা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না। তারা দাবি করেন, এটাই বিএনপির আসল অবস্থান।

কিন্তু বিএনপির সম্ভাব্য সব প্রার্থীরাই তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় কাজ শুরু করেছেন। নিজেরা জনসংযোগ করেছেন। নির্বাচনপন্থীরা কর্মীদের নির্বাচনী মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। যেমন গত শুক্রবার ব্যারিস্টার মওদুদ কর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। একইভাবে সিনিয়র নেতাদের বড় একটি অংশ কর্মীদের নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছেন।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ব্যারিস্টার মওদুদ এবং দলের মহাসচিবের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বেগম জিয়া। বেগম জিয়া নির্বাচন সম্পর্কে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তাঁর এবং তাঁর ছেলের মামলার পরিণতি দেখতে চান। বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এখনই দল নির্বাচন মুখী হয়ে গেলে আন্দোলন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাঁদের মতে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করা হবে অত্মহত্যার শামিল। কিন্তু ১১ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির মধ্যে নির্বাচন মুখী প্রবণতা বাড়ছে। বিশেষ করে, কর্মীরা তাগাদা দিচ্ছে। কর্মীরা নেতৃবৃন্দকে প্রতিনিয়তই বলছে, মাঠের অবস্থা ভালো। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হলে বিএনপি ভালো সুযোগ হাতছাড়া করবে। সম্ভবত এজনই ব্যারিস্টার মওদুদ নির্বাচনী সংকেত দিয়েছেন। কিন্তু মওদুদ আহমেদের বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বেগম জিয়াপন্থী হিসেবে পরিচিত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সহায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।’

নির্বাচন যতই এগিয়ে আসবে, বিএনপিতে বিভক্তি ততই প্রকাশ্য হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন শুরু হয়েছে, তাঁর কিছু ঝলক মাত্র।   


বাংলা ইনসাইডার/ডেজএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭