ইনসাইড হেলথ

সন্তান অবসাদে ভুগছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 09/11/2017


Thumbnail

আপনার আদরের চঞ্চল সন্তানটি হঠাৎ করে চুপচাপ হয়ে গেছে? আগের মত চঞ্চলতা, উচ্ছাস আর দুরন্তপনা সব হারিয়ে গেছে নিমেষে? পড়ালেখায় মন নেই, স্কুলেও সহপাঠীদের সঙ্গে ঝগড়া করছে? সারাদিন থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্মার্টফোনে মুখ গুজে থাকছে?

সন্তানের এসব লক্ষণ থাকলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে। আপনার সন্তান খুব সম্ভবত অবসাদে ভুগছে। আর এ অবসাদগ্রস্ততা তাকে ব্লু হোয়েলের মত বিপজ্জনক অনলাইন গেমে আগ্রহী করে তুলতে পারে।

অবসাদ বা বিষন্নতার কথা শুনলে মনে হতে পারে এতো বয়স্কদের ব্যাপার। কিন্তু মনোবিদরা বলছেন অন্য কথা। অবসাদ আশঙ্কা শিশুদের মধ্যেই বরং বেশি। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমান সময়ে প্রতি বিশ জন শিশুর একজন অবসাদে ভুগছে। শিশুদের অবসাদের সমস্যা সচরাচর দেখা যাচ্ছে। শিশুরা খুব ভঙ্গুর মনের অধিকারী হয়ে থাকে। আর পরিস্থিতির চাপে তারা অবসাদে আক্রান্ত হতে পারে, এমনকি পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার মত বিষয়ও তাদের অবসাদগ্রস্ত করতে পারে। আর অবসাদের কারণে ক্ষতিকর অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পরতে পারে তারা। ব্লু হোয়েলের মতো ক্ষতিকর গেমে আসক্তিকে অবসাদের গভীর পর্যায় বলা যেতে পারে।

একটু সচেতন হলেই অভিভাবক ও শিক্ষকরা শিশু মনে অবসাদের উপস্থিতি ধরে ফেলতে পারেন। স্বাভাবিক প্রাণোচ্ছল শিশু যদি হঠাৎ গুটিয়ে যেতে থাকে নিজের খোলসে, তাহলে সতর্ক হোন। দৃষ্টি রাখুন, খোঁজ নিন সে সহপাঠীদের সঙ্গে ঝগড়া বা মারপিটে জড়িয়ে পড়ছে কিনা। যে পিতা মাতা দুজনেই কর্মজীবী তাদের সতর্ক হতে হবে বেশি, কিন্তু সন্তানকে সারদিন নজরবন্দী করারও প্রয়োজন নেই।

নজর রাখতে হবে বাচ্চাটির ঘুমানোর প্যাটার্নের দিকেও। বেশি রাত জেগে মুঠোফোনে তাকিয়ে থাকা, বা মাঝরাতে উঠে মোবাইলে ব্যাস্ত হয়ে পড়া, কোন অনলাইন গেমে তার আসক্তির লক্ষণ হতে পারে। সন্তানের মাঝে এসব অবসাদের লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে আপনাকে।

আর অবসাদের লক্ষণ দেখতে পেলে বাবা-মাকে প্রথমেই বাচ্চাদের ওপর চাপের বোঝা কমাতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে পড়ালেখা বা স্কুলের চাপে তার জীবন থেকে আনন্দ যেন বাদ না পড়ে যায়। ‘তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না’, ‘তোমাকে একশতে একশ পেতেই হবে’, ‘তুমি যথেষ্ঠ পরিশ্রমী নও’ এধরনের কথা বাচ্চাদের ওপর পর্বতসম চাপ তৈরি করতে পারে, তাই সতর্ক হোন। প্রতিনিয়ত তার কমতির কথাগুলো তাকে শুনিয়ে গেলে, তারা নিজেদের মধ্যে গুটিয়ে যেতে পারে। এখানেই জায়গা করে নেয় ব্লু হোয়েলের মত অনলাইন গেম। এসব অনলাইন গেমে বাচ্চারা একটি নকল পরিপূর্ণতা বোধ বা ‘আমি পেরেছি’ ধাচের মেকি সন্তুষ্টি পায়।

কোনো শিশু অনলাইন জগৎ বা ইলেকট্রনিক্সে আসক্ত হয়ে পড়লে সেটি একবারে একধাপে বন্ধ করতে যাওয়া উচিৎ নয়। তাকে ধীরে ধীরে, সময় নিয়ে কাউন্সেলিং আর গাইডেন্সের মাধ্যমে এ কাজটি করতে হবে। নইলে তার মধ্যে পারিবার-সমাজ জীবন থেকে বিচ্ছিন্নতাবোধ জন্ম নিতে পারে। তাই কৌশলি হোন। বিভিন্ন ক্ষতিকর ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করতে কম্পিউটার বা মোবাইলে এড ব্লকার, কনটেন্ট ব্লকার অ্যাপ ব্যাবহার করুন। রাউটারে বিভিন্ন অনলাইন গেমের ওয়েবসাইটও ব্লক করতে পারেন আপনি।

আপনাকে এবং আপনার সন্তানকে বুঝতে হবে অনলাইন জগত, কম্পিউটারের জগতটি একপেশে। আড্ডা বা সামাজিক মেলামেশার মত এখানে ধারণা বা জানা-বোঝা তৈরির সুযোগটি কম। তাই শিশুদের ভালো বন্ধু বেছে নেয়া, বন্ধুত্ব তৈরি করা এবং সামজিক জীবনে উৎসাহিত করতে হবে।


বাংলা ইনসাইডার/কেএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭