ইনসাইড বাংলাদেশ

বনজের তদন্তে বাদীরাই আসামি হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/09/2021


Thumbnail

বনজ কুমার মজুমদার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের মহাপরিচালক। একজন দক্ষ তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এবং সৎ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। পিবিআইকে পুলিশের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন নিজ নেতৃত্ব এবং কর্মদক্ষতার গুনে। কিন্তু পিবিআই যে মামলাগুলো তদন্ত করেছে তার একটি বড় অংশই দেখা যাচ্ছে তদন্তে উল্টো ফল হয়। সততার সঙ্গে নিষ্ঠার সঙ্গে তদন্ত হয় জন্য অনেকেই বাদী এই তদন্তে বিভাগ আসামিতে পরিণত হয়। পিবিআই সাম্প্রতিক সময়ে যতগুলো তদন্ত করেছে তার অনেকগুলোতেই এরকম ঘটনা ঘটেছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে মিতু হত্যাকাণ্ড নিয়ে। পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু চট্টগ্রামে আততায়ীর হাতে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তার হত্যাকাণ্ডের পর তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। এই মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে বাবুল আক্তারকে পুলিশ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বাবুল আক্তার সাধারণ জীবনযাপন শুরু করেন। কিন্তু একপর্যায়ে এই মামলার তদন্ত দেওয়া হয়েছিল পিবিআইকে। পিবিআই এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় এবং এক পর্যায়ে মামলার বাদী হয়ে যান আসামি, এরপর নতুন করে মামলা দায়ের করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে আরেকটি মামলা নিয়ে পিবিআই আলোচনায় এসেছে। তাহলো মুনিয়ার মৃত্যুর মামলা। গত ১৯ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যুর পর তা বোন নুসরাত তানিয়া একটি আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা দায়ের করেছিলেন গুলশান থানায়। গুলশান থানা এই মামলার নানারকম তদন্ত শেষে এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্টের ভিত্তিতে আত্মহত্যার কোন প্ররোচনা ঘটেনি মর্মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন আদালতে। নুসরাত এই পুলিশ রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারাজি দরখাস্ত দেন এবং তার নারাজি দরখাস্তটি যখন আদালত খারিজ করে দেন তখন গত ৬ সেপ্টেম্বর তিনি আরেকটি মামলা দায়ের করেন ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। সেখানে তিনি নুসরাতকে হত্যা এবং ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য যে, একই অভিযোগে মুনিয়ার ভাই সবুজ একটি মামলা করেছিলেন সিএমএম আদালতে। যে মামলাটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা তদন্তের স্বার্থে স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু একই বিষয়ে একটি হত্যা মামলা থাকার পরও আবার নতুন করে কেন হত্যা মামলা নেয়া হলো সেটি একটি আইনগত বিতর্কের বিষয়। কিন্তু এই মামলা তদন্ত করতে যেয়ে পিবিআই অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছে। বিশেষ করে মুনিয়ার মৃত্যুর অন্যতম আলামত বলে মনে করা হচ্ছে গুলশানের ওই ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজ। কারণ একটি হত্যাকাণ্ড যদি ঘটে তাহলে অবশ্যই সেই হত্যাকাণ্ডের জন্য কিছু ব্যক্তিকে সশরীরে সেখানে যেতে হবে। বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘর থেকে বের হন নাই। কাজেই যদি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কাউকে না কাউকে গুলশানে তার ফ্ল্যাটে যেতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় যে, যারা মুনিয়ার ফ্ল্যাটে বা ওই বিল্ডিং এ গিয়েছিল তাদের মধ্যে অন্তত তিনজন নুসরাতের পরিচিত এবং নুসরাতের সাথে ঘনিষ্ঠ। এই তিনজনকেই পরবর্তীতে গুলশান থানায় নুসরাতের সঙ্গে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করতে দেখা গেছে। এই তিনজনকেই আবার নুসরাতের সঙ্গে সিএমএম আদালতে দেখা গেছে। একটি সূত্র বলছে যে, পিবিআই এই তিনটি সিসি ফুটেজ দেখে এই তিনজন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করবে। এরা যদি নুসরাতের লোক হয় তাহলে নুসরাতের পরিণতিও বাবুলের মত হবে। কারণ পিবিআইয়ের তদন্তে বাদী যদি অভিযুক্ত হন তাহলে তাকে আসামি করতে পিছপা হয়না এই এলিট তদন্তকারী সংস্থাটি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭