ইনসাইড ইকোনমি

দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী বিদেশী বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/09/2021


Thumbnail

বাংলাদেশের বাজারে গাড়ি তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিশ্বের নামিদামি সব প্রতিষ্ঠান। এ খবরটি বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনায়। যদিও এ খবরে অবাক হওয়ার কিছু নেই তবে নিঃসন্দেহে এটি আমাদের জন্য ভালো খবর। মধ্যম আয়ের এ দেশে অর্থনীতির বাজার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ফলে স্বভাবতই বড় হচ্ছে গাড়ির বাজার। লাভজনক ব্যবসার হাতছানি ও সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ থেকেই অটোমোবাইল প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে গাড়ি নির্মাণ কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা। 

জানা যায়, বাংলাদেশে গাড়ি নির্মাণ কারখানা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে মিতসুবিশি। জাপানি গাড়ি নির্মাতা সংস্থাটি এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ইস্পাত শিল্প করপোরেশনের (বিএসইসি) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সমঝোতার আওতায় বিএসইসি ও মিতসুবিশি বাংলাদেশে মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরির জন্য একটি যৌথ উদ্যোগের কোম্পানি স্থাপনের সুযোগ সম্পর্কে সমীক্ষা পরিচালনা করবে। আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে যৌথ উদ্যোগে কারখানা স্থাপনের উপায়ও। এ ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের মধ্যে জাপানি সংস্থাটির সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে ‘বাংলা কার’ ব্র্যান্ড চালুরও প্রত্যাশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাইয়ের পক্ষ থেকেও দেশে যাত্রীবাহী গাড়ি তৈরির ঘোষণা এসেছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণার কথা জানান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশে হুন্দাই এর যাত্রীবাহী গাড়ি তৈরি হবে। এ লক্ষ্যে হুন্দাই ও ফেয়ার টেকনোলজি যৌথভাবে বাংলাদেশে হুন্দাই যাত্রীবাহী যানবাহন উৎপাদন কারখানা গড়ে তুলছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে এ কারখানা স্থাপন করা হবে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে গাড়ি তৈরির এ উদ্যোগ অপার সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশের সামনে। হাজার হাজার যুবকের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি কমবে রফতানি-নির্ভরতা। স্বল্প দামে গাড়ি পাবে দেশের মানুষ। তবে দেশে অটোমোবাইল শিল্প বিস্তৃতির জোয়ারের শুরুতেই আমাদের বৈশ্বিক প্রবণতার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। জোর দিতে হবে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের দিকে। প্রচলিত জ্বালানি তেলচালিত ইঞ্জিনের গাড়ি উৎপাদনের পথে হাঁটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আমাদের এখন উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সময় এসেছে। ৫/১০ বছর নয়, বরং আগামী ৫০ থেকে ১০০ বছরের অগ্রযাত্রাকে মাথায় নিয়ে এগোতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নেয়া উদ্যোগও ত্বরান্বিত হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় অন্যতম বাংলাদেশ। সুতরাং আমাদের এমন উদ্যোগে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে বৈশ্বিক দাতাগোষ্ঠীও।

এদিকে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত করতে চায় তারা। এজন্য ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা’ তৈরি করা হচ্ছে। এতে পর্যায়ক্রমে পুরনো গাড়ি (রিকন্ডিশন্ড কার) আমদানি বন্ধ করে স্থানীয় উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। যদিও এখনো পুরনো গাড়ির দখলে দেশের গাড়ির বাজারটির সিংহভাগ। খাতসংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, দেশে বিক্রি হওয়া মোট গাড়ির ৮০ শতাংশই পুরনো। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারটি ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। বিপরীতে বাড়ছে নতুন গাড়ি বিক্রি। বর্তমানে স্বল্প পরিসরে বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদনের কার্যক্রমও চলছে দেশে। চট্টগ্রামে চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির কাজ করছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এই গাড়ি তৈরি হলে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির দামও কমবে এবং ব্যবহার বাড়বে বলে আশা করছেন এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭