ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্বজুড়ে ই-কমার্স ব্যবসায়ের কিছু মজার গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/09/2021


Thumbnail

বিশ্বজুড়ে উদ্যোক্তারা এখন তাদের ব্যবসায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বেশ ভালো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। তবে পয়সা কামানোর প্রধান সূত্র কিন্তু একটাই। কাজ যা করবার সেটা টাকাকেই করতে দিতে হবে এবং টাকা থেকে টাকা তৈরি করার আরও নতুন নতুন উপায় খুঁজতে হবে। ইন্টারনেটের যুগে কাজটা আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। আসুন, আজ এমনই কিছু ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সফলতার গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হওয়া যাক। 

রবার্ট নাভা
অনলাইন উদ্যোক্তাদের একটি বড় সুবিধে হচ্ছে, অতীতে তারা কী করেছেন, তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে, বর্তমান সিদ্ধান্তটি কার্যকর করবার জন্য কতটা সামনে এগোনো যায়। ১১-২৭ বছর পর্যন্ত রবার্ট নাভা তার বেশিরভাগ সময়ই কাটিয়েছিল সংশোধনাগারে। নানা ধরণের অপরাধের জন্য তাকে কারাবাস বরণ করতে হয়েছিল। এদের মধ্যে মাদক দ্রব্যের চোরাচালান ছিল অন্যতম। 
২০০৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের জেল থেকে বের হবার পর তার মাঝে এমন একটি স্পৃহা দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে, যার মাধ্যমে সে চায় অতীতের সকল কৃত ভুল ধুয়েমুছে সাফ করে নতুনভাবে যেন জীবন শুরু করা যায়। তবে এজন্য তাকে বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হতে হয়েছে। অনেকবার ব্যর্থতার পর অবশেষে নাভা প্রতিষ্ঠা করতে পারে ন্যাশনাল পার্ক ডিপো নামের একটি অনলাইন ব্যবসা, যেটি আউটডোর গিয়ার কেনবার জন্য এখন ক্রেতাদের অন্যতম ভরসার জায়গায় উপনীত হয়েছে। 

মর্গান নিউম্যান এবং ক্যাসি এলস্যাস 
পণ্য নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে যখন উদ্যোক্তরা আটকে যায়, তখন তাদেরকে তিনটি বিষয়ের কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো মেনে ঠিকভাবে কাজ করতে পারলেই তারা সফলতার মুখ দেখতে পারবে বলে আশা করা যায়। 
প্রথম ধাপ, ভোক্তাদের সমস্যাগুলো ঠিক কোথায় হচ্ছে, সেটি দেখতে হবে। 
দ্বিতীয় ধাপ, একটি সমাধান বের করতে হবে, যা সহজ। 
তৃতীয় ধাপ, প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে ভালো একটি পণ্য বাজারে আনতে হবে। 
মর্গান নিউম্যান এবং ক্যাসি এলস্যাস এটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন যে একটি পণ্য বিক্রির চিন্তাভাবনা করতে খুব বেশি মাথা খাটানো লাগে না। মধু এবং চিলি ফ্লেকের সাহায্যে তারা তাদের পণ্য তৈরি করলো, নাম দিলো মিক্সডমেইড। মাত্র ১০ মাসের মধ্যেই ১ লক্ষ ৭০ হাজার ডলার ঘরে তুলে ফেলল দুজন। 
তবে এখানেই দুজন কিন্তু থেমে রইলো না। খুঁজতে শুরু করলো আরও ভিন্ন স্বাদের পণ্য এনে কেমন করে ভোক্তাদের স্বাদতেষ্টা মেটানো যায়। 
বর্তমানে নিউম্যান এবং এলসার একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার নাম বুশউইক কিচেন। 

এন্ডি ডান 
পরিকল্পনাহীন কোনো চিন্তাভাবনা কখনও কখনও আমাদের বিপদে ফেলে। তাই ধীরেসুস্থে, নিশ্চিতভাবে এগোনোটা বেশি প্রয়োজন। এতে সাফল্যের হার অনেক বেড়ে যায়। 
এন্ডি ডান তার অনলাইন স্টোর বনোবোসের মাধ্যমে এই কঠিন সত্যটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিল। 
দ্রুত উন্নতির জন্য এন্ডি তার প্রতিষ্ঠানের সব পণ্য ৬০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করতে শুরু করেছিল এবং ওয়েবসাইটে নিউজলেটার দিয়ে ভর্তি করে ফেলেছিল। 
চিন্তাটা বেশ ভালোই ছিল, কিন্তু তাদের ওয়েবসাইট ক্রমবর্ধমান বিজ্ঞাপনের ট্রাফিক আর নিতে পারছিল না। ফলে ভোক্তারা অভিযোগ করতে শুরু করে এবং এন্ডি সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের ওয়েবসাইট সাময়িক সময়ের জন্য নামিয়ে নিতে বাধ্য হয়। 
এই গল্পটির মূল কথা হচ্ছে, যতটুকু খেতে পারবেন, ঠিক ততটুকুই মুখে তুলুন। 

জেক নিকেল 
দিন বদলাবার সাথে বদলাতে শুরু করে প্রযুক্তি। আর ব্যবসা করতে চাইলে নতুনকে গ্রহণ করাই বাঞ্ছনীয়। আর সেটি যদি প্রযুক্তি হয়, তাহলে তো কথাই নেই। নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করার এই মূলমন্ত্র জেক নিকেল, থ্রেডলেসের মালিক খুব ভালোভাবেই টের পেয়েছিল। 
একটি সাক্ষাৎকারে নিকেল বলেছিলেন যে তিনি টুইটারের ১৫০০তম রেজিস্টার্ড ব্যবহারকারী এবং থ্রেডলেস হচ্ছে এমন একটি ব্র্যান্ড যারা ইন্সটাগ্রামে খুব দ্রুত এক লক্ষ ফলোয়ার পেয়েছেন। নিকেল এবং তার পার্টনার জ্যাকব ডেহার্ট একটি অনলাইন প্রতিযোগিতায় যোগদান করেছিলেন যেখানে টি-শার্টের ডিজাইন জমা দেয়ার কথা ছিল। প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল ড্রিমলেস ডট অর্গ। দুজন মিলে তাদের করা সব ডিজাইন ভোক্তাদের সাথে শেয়ার করা শুরু করলেন এবং ভোক্তাদের কাছে শার্ট বিক্রি করা শুরু করলেন। 
কাজটি এত সহজ ছিল যে প্রথম ব্যাচের টিশার্ট বিক্রি হবার পরই নিকেল এবং ডেহার্ট থ্রেডলেস নামের একটি ওয়েবসাইট চালু করেন। স্বাধীন ডিজাইনাররা তাদের শার্টের ডিজাইন এই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে এবং ভোক্তারাই ঠিক করে কোন শার্টটি তারা চাইছে। প্রতি পিস শার্ট বিক্রি হবার সাথে সাথে মূল ডিজাইনার লভ্যাংশের একটি অংশ পান। 
বেশ সহজ একটি উদ্যোগ কিন্তু কত লাভজনক, তাই না?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭