ইনসাইড আর্টিকেল

রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের সাথে যেমন আচরণ করবেন 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/09/2021


Thumbnail

রেস্টুরেন্টে যারা কাজ করেন, তাদেরকে হরহামেশাই কিছু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। কোনো খদ্দেরের ব্যবহার খুব ভালো তো কোনো খদ্দেরের ব্যবহার খুবই খারাপ। কোনো খদ্দেরের ফরমায়েশের শেষ নেই, আবার কোনো খদ্দের কী খেতে এসেছেন, বুঝতে পারছেন না। আবার কোনো কোনো খদ্দের এমন কিছু ঘটনা সৃষ্টি করে যান যে ওয়েটাররা মনে মনে প্রার্থনা করেন যে এমন খদ্দের যেন প্রতিদিন আসে। এর উল্টোটাও আবার ঘটতে দেখা যায়। নিউইয়র্কের কিছু শিক্ষার্থীরা একটি মজার গবেষণা করেছে। সে গবেষণায় উঠে এসেছে যে কী কী কারণে একজন খদ্দের তার ওয়েটারকে চটিয়ে থাকেন। দেশ ভিন্ন হলে কী হবে, আমাদের দেশেও কিন্তু এমন ঘটনা ঘটতে পারে। আসুন, মজার এই গবেষণা অনুসারে দেখে নেয়া যাক কোন কারণে রেস্টুরেন্টে ওয়েটাররা খদ্দেরদের ওপর চটে যান।

১) আঙুল উঁচিয়ে ডাক দেয়াঃ
ওয়েটাররা এধরনের কাজ একেবারেই পছন্দ করেন না। আমাদের মাঝে কিছু স্বভাব রয়েছে যে শিস দেয়ে, তুড়ি মেরে কিংবা অঙ্গুলির হেলনে রেস্টুরেন্টের ওয়েটারদের ডেকে এনে খাবারের অর্ডার দিই। এধরনের কাজে ওয়েটাররা যেমন মনে কষ্ট পায়, ঠিক তেমনি যিনি খেতে এসেছেন, তার ওপর একধরনের বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি হয়।

২) রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাবার আগ মূহুর্তে খেতে চাওয়াঃ
রেস্টুরেন্টে যারা খাবার সার্ভ করেন, মনে রাখতে হবে যে তারাও মানুষ। উদয়াস্ত খেটে তারা যখন বাড়ির দিকে ফেরার জন্য ব্যাগেজ গোছাতে শুরু করেন, ঠিক তখনই কিছু কিছু খদ্দের শেষ মূহুর্তে এসে এমন হম্বিতম্বি শুরু করে যে তখনই তাদের খাবার দিতে বাধ্য হতে হয়। ওয়েটাররা দীর্ঘ এই প্রলম্বিত সময় এবং যিনি এর সূচনা করলেন- দুটিকেই চরম মাত্রায় ঘৃণা করে।

৩) টিপ দেয়া নিয়ে গড়িমসিঃ
আমাদের দেশে হয়ত এটার খুব একটি চল নেই তবে বাইরের দেশে খদ্দের কে কত টাকা টিপ দিচ্ছেন, সেটি নিয়ে বিশাল গবেষণা হয়ে থাকে। কিছু কিছু ওয়েটার তো এটিও বলে ফেলেন যে কে কত টাকা টিপ দিচ্ছে, তার ওপরই ব্যক্তিত্বের প্রকাশ পায়। স্যাম নামক এক ওয়েটার এ বিষয়ে বলেন, “আমার কাছে একবার একজন খদ্দের এল। তিনি এমন ভাব করতে লাগলেন যেন পুরো রেস্তোরাঁটিই খেয়ে ফেলবেন। তাকে সার্ভ করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। আর কোনো দিকে নজর দিতে পারছিলাম না। তবুও খুশি মনেই কাজটি করছিলাম কারণ ভেবেছিলাম যে মোটা টাকা টিপ পাওয়া যাবে। কিন্তু কিসের কী! যাবার সময় তিনি এমন ভাব করলেন যেন আমি তার কেনা গোলাম। আমার দিকে একবার ফিরেও চাইলেন না!”

৪) কী খাবেন, সেটি বুঝতে না পারাঃ
এমন অনেক খদ্দের রয়েছেন যারা একটি অর্ডার দেবার পর হঠাৎ করেই বুঝতে পারেন যে এই খাবারটি অর্ডার দেয়া তার ঠিক হয়নি। ওয়েটারকে ডেকে পুরো খাবারটিই বাতিল করতে বলেন। রাঁধুনি কিন্তু ততক্ষণে খাবারটি রেঁধে ফেলেছে। এটি যেমন বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে, আবার একইসাথে সৃষ্টি করে বিরক্তির উদ্রেকও। তাই রেস্তোরাঁয় বসে প্রথমেই মেনু ঠিক করে নিন যে কী খাবেন, তা সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত কিনা।

৫) ওয়েটারের সাথে কথার আগেই ম্যানেজারকে ডাক দেয়াঃ
এটি কিন্তু আমাদের দেশেও রয়েছে। ওয়েটার কোনো একটি ভুল করে ফেলল। আমরা তার সাথে বিষয়টি ঠিক না করেই বলে ফেলি যে মালিককে ডেকে নিয়ে আসতে। এটি একধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। ওয়েটারও একজন মানুষ। এই সার্ভিং করার টাকা দিয়েই হয়তো সে তার পুরো সংসার চালায়। তাই আমাদের একটু বিবেকবান হওয়া উচিত। যদি তার কোনো ধরনের ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ওয়েটারের সাথেই বিষয়টি ভালোভাবে কথা বলে মীমাংসা করে ফেলা উচিত। তা না হলে হয়ত নিজের কারণেই একজন মানুষের চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যেতে পারে।
রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে ওয়েটারের সাথে কেমন ব্যবহার করবেন, সেটিও কিন্তু একধরনের এটিকেট। মানুষের সামনে এটিও আপনাকে একজন বিবেকবান ও আদর্শ খদ্দের হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। তাই ওপরের কথাগুলো মনে রাখুন। দেখবেন, খাবার যেমন সুস্বাদু লাগছে, ঠিক তেমনি ওয়েটারের ব্যবহারও হয়ে উঠছে মধুর।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭