ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি কী সত্যি সত্যি আন্দোলন করতে পারবে? 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/09/2021


Thumbnail

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র দ্বিতীয় দফা সিরিজ বৈঠক আজ থেকে শুরু হচ্ছে। বিকেল সাড়ে তিনটায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হবে। এর আগে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে দলটি। এবার ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিএনপি। এ বৈঠকের পর দলের অবস্থান তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু প্রশ্ন হলো এতসব বৈঠক করে কি বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে?

২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। গত ১৫ বছরে বিএনপি বড় ধরণের কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় দলটি। সেই ​আন্দোলনটি সহিংস রূপ নেয়। ঐ সময়ে বিএনপি-জামায়াতের দুই মাসের টানা অবরোধে নিহত হয়েছিলেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে ৯০ জনই ছিল সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬২ জন। ফলে মানুষ এ সহিংস অবরোধকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের এ সহিংস অবরোধ কার্যক্রম থেকে সরে আসতে হয়। সে অবরোধ কবে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেয়া হবে তা দলটির কোনো নেতারই জানা নেই। এরপর টানা ছয় বছরেও আর কোনো আন্দোলন করতে পারেনি দলটি। এখন বিএনপি নতুন করে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আন্দোলন করতে যে ধরণের সাংগঠনিক সক্ষমতা, নেতৃত্ব দরকার হয় তা কি বিএনপির মধ্যে অবশিষ্ট আছে?

একদিকে বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সংখ্যা অনেক। ৮০ ভাগ কমিটিরই মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ২০০৯ সালের পর অধিকাংশ জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি তারা। দলের কাউন্সিল হয় না দীর্ঘদিন। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অর্ধেকেরও বেশি অসুস্থ। অনেকে আবার নিষ্ক্রিয়। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সমন্বয়হীনতা চরমে। এ ছাড়া কেন্দ্রের নির্দেশও মানছে না তৃণমূল। আবার কেন্দ্র থেকেই পকেট কমিটি করে ক্যাঙ্গারো নেতা নির্বাচন করা হয়। এতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল যে কোনো
সময়ের চেয়ে বেশি। ভার্চুয়াল মিটিং ছাড়া দলটির কোনো কার্যক্রম নেই। ফলে দলটির সাংগঠনিক সক্ষমতাও জ্যামিতিক হারে কমছে। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে একটি রাজনৈতিক দলকে আন্দোলন করতে গেলে দলের ভেতরে যে ধরণের ঐক্যের দরকার, সে ঐক্য বিএনপির মধ্যে অনুপস্থিত দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। 

একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, এক দিকে বিএনপির নেতারা বলছে সরকার পতনের আন্দোলনে যাবে। আবার আমরা দেখছি দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুচলেকা দিয়ে জামিনের মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়েছে। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর আন্দোলন তো দূরে, ১০ জনের একটি মিছিলও বের করতে পারেনি। তারা হঠাৎ পাচঁ-সাত দিনের বৈঠক করে কিভাবে আন্দোলন করবে? আবার আন্দোলনে নামলে খালেদা জিয়ার জামিনেরই বা কি হবে? আগের মতো 
রাস্তায় সহিংসতা করলে সরকার তার নির্বাহী আদেশে দেয়া জামিন বহাল রাখবে না বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

ফলে এত সব চিন্তা নিয়ে বিএনপি মাঠের আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে কি না সে দিকেই চোখ রাখছেন রাজনৈতিক সচেতন মহল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭