ইনসাইড থট

মানবতার বিশ্বনেত্রী বদান্যতার দূত শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/09/2021


Thumbnail

দিন যত যাচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সময়ের পরিক্রমায় শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা যেন অনন্য উচ্চতায় উঠেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের রক্ত যার শরীরের বইছে সেই তো অনন্য মানুষ। সারাবিশ্বের নিপীড়িত জনতার সংগ্রামী নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান আমলে ভারত উপ মহাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আলোর দিশারী হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ বিভাগোত্তর সময়কাল থেকে বাংলাদেশে স্বাধীনতা উত্তর সময়ে বঙ্গবন্ধুর জীবন প্রবাহের প্রতিটি পরতে পরতে ছিল অসহায় নিপীড়িত জনতার নেতা শেখ মুজিব। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, পাক ভারত পৃথকীকরণ ও বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রতিটি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর একক আদর্শ ছিল দুস্থদের সেবা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার জীবন প্রবাহ একই সরল রেখায় চলমান।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পশ্চিম পাকিস্তানীদের অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের প্রথমদিকে পাকিস্তানীরা ভেবেছিল মানুষ হত্যার মধ্যে দিয়েই তারা বর্তমান বাংলাদেশ অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে পারবে। কিন্তু যুদ্ধের তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যখন পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আসেনি তখন তারা যুদ্ধের নীতি হিসেবে নারীদের ধর্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রতিদিন মানুষ হত্যা, গ্রামের পর গ্রাম আগুন লাগিয়ে শেষ করা যেমন পশ্চিম পাকিস্তানীদের বর্বরতার প্রতিদিনকার অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছিল, তেমনি আরেকটি বর্বরতা ছিল নারীদের ধর্ষণ করা। পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশকে জাতিগতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া, নারীদের ধর্ষণের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের জনগণের মনোবল ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ধর্ষণকে বেছে নেওয়া হয়। আর এ কারণেই পরিবারের সবার সামনেই নারীদের আক্রমণ করা হতো। পশ্চিম পাকিস্তানীদের ক্যাম্পে প্রতিদিন গাড়ি বোঝাই করে মেয়েদের ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। কমান্ডারদের জন্য নতুন নতুন মেয়ের ব্যবস্থা করা হতো। সাধারণ সৈনিকেরা একই নারীকে ঢালাওভাবে ধর্ষণ করতো। নানা রকম নির্যাতনের পরেও তাদের বাঁচিয়ে রাখা হতো যেন তারা সন্তান জন্ম দিতে পারে।

নয় মাসের যুদ্ধে বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী ৪ লক্ষ নারী ধর্ষণের শিকার হয়। সঠিক সংখ্যা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। যুদ্ধ শেষে এই নারীদের যখন ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করা হয়, তখন তাদেরকে ধর্ষিতা নামে ডাকাসহ বিভিন্ন অপমান করা হতো। বঙ্গবন্ধু এই ভাগ্যহত নারীদের নিজের মেয়ের স্বীকৃতি দেন এবং তাদের বীরাঙ্গনা উপাধিতে ভূষিত করেন। বীরাঙ্গনা শব্দের অর্থ বীর নারী। আসলেই তো তারা বীর ছিলেন, তাদের সম্ভ্রমের বিনিময়েই তো পেয়েছি এই স্বাধীন দেশ।

যুদ্ধ শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীরাঙ্গনাদের পুনর্বাসনের জন্য অনেকগুলো কেন্দ্র খোলেন যুদ্ধোত্তর দেশে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত মা বোনদের  পরিবার গ্রহণ করে নি, সমাজ থেকে  বিতাড়িত হয় তাইদের ঠাই হয় এসব পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

এসকল মা বোনদের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে নিজেকে মেলে ধরলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত মা বোনদের ঠিকানা হল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি। নীলিমা ইব্রাহিমের ‘ আমি বীরাঙ্গনা বলছি’প্রবন্ধে গ্রন্থে  এমন সব ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর মত কোমল হৃদয়ের অধিকারী একজন মানুষকে সপরিবারে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে ক্ষমতা লোভী খন্দকার মোশতাক ও জিয়ারা। নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন জনতার রায়ে দেশে মাতৃকাকে স্বৈরশাসকদের হাত থেকে ক্ষমতা নেন। শুরু হয় পঁচাত্তর পরিবর্তী মৃত্যু উপত্যকা বাংলাদেশে বিনির্মাণের কাজ । শেখ হাসিনা বাবার মত দক্ষ নেতৃত্বে মানবিক গুণ নিয়ে দেশ পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন।পিতা বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ রেখে জননেত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র,বৃদ্ধ, দুঃস্থ, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের দিকে বিশেষ নজর দেন। শেখ হাসিনা পিতাকে দেখেছেন সমাজের অর্থহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে। পিতার মতই বর্ণিত জনতার কাছে গেলেন । তাদের দুঃখের কথা শুনলেন। এসব সুবিধা বঞ্চিতদের কথা মাথায় রেখে হাসিনা যুগান্তকারী মানবিক কর্মসূচী চালু করলেন। দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে ও পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে  ‘বয়স্ক ভাতা’কর্মসূচি প্রবর্তন  করা হয়। প্রাথমিকভাবে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়। পরবর্তীতে দেশের সকল পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হয়।

যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের নারীদের প্রতি জাতির পিতার  সম্মানের দেখতে জননেত্রী শেখ হাসিনাও  অসহায় নারীদের প্রতি মমত্ব জন্ম নিয়েছে । শেখ হাসিনা চালু করলেন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত মহিলা ভাতা। প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত মহিলাদের ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করেন। ঐ অর্থ বছরে ৪ লক্ষ ৩ হাজার ১১০ জনকে এককালীন মাসিক ১০০ টাকা হারে  ভাতা প্রদান করা হয়। ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে এ কর্মসূচিটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত মহিলা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের জন্য বর্তমান সরকার পুনরায় ২০১০-১১ অর্থ বছরে এ কর্মসূচি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে প্রবর্তিত এ কর্মসূচি সমাজসেবা অধিদফতর সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে। এ কর্মসূচির আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার জন ভাতা ভোগীর জন্য জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে মোট ১৪৯৫.৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত হওয়ার পর এ কর্মসূচিতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য  শেখ হাসিনার নির্দেশে বিগত ৬ বছরে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যসহ  অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ, ডাটাবেইজ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ। এ ছাড়া ১০ টাকার বিনিময়ে সকল ভাতা ভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ভাতা ভোগীদের অনলাইন মাধ্যমে G2P বা গভর্নমেন্ট টু পারসন পদ্ধতিতে ভাতা প্রদান চালু করা হয়েছে।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের অঙ্গিকার হিসেবে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স্কভাতা ভোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ক্ষমতা গ্রহণোত্তর ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বয়স্কভাতাভোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ জন থেকে বৃদ্ধি করে ২২ লক্ষ ৫০ হাজার জনে এবং জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার ২৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকায় উন্নীত করা হয়।  ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৫৭ লক্ষ ০১ হাজার বয়স্ক ব্যক্তিকে জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৪৪৪.৫৪ কোটি টাকা। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিবিড় তদারকি এবং সমাজসেবা অধিদফতরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে বিগত ৪ বছরে বয়স্ক ভাতা বিতরণে প্রায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ১০ টাকার বিনিময়ে সকল ভাতা ভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর শেখ হাসিনা যেন আরো মানবিক মহীয়সী হয়ে ওঠেন। ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীর ৪৩/১, নবাব কাটরা ৫তলা বাড়িতে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৩ জন মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন কয়েকশ’ মানুষ। ঘটনার পর চরম ক্ষতিগ্রস্ত স্বজন হারানো রুনা, রত্না ও শান্তা। এদের মধ্যে রুনা ও রত্না আপন দুই বোন। শান্তা পাশের বাসার মেয়ে। রত্নার আগেই বিয়ে ঠিক হয়েছিলো। রুনার বিয়ের `পানচিনি` অনুষ্ঠানের দিন এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের পর পরিবার-পরিজন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া রুনা, রত্না ও শান্তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুকে টেনে নেন। নিজের সন্তান পরিচয় দিয়ে ঘোষণা দেন তারা তার নিজের সন্তান। সৃষ্টি করেন এক নতুন ইতিহাস। প্রধানমন্ত্রীর তদারকিতে গণভবনে ধুমধাম করে তিন কন্যার বিয়েও দেওয়া হয়। তাদের স্বামীদের দেওয়া হয় চাকরি।

খুব ছোট সময় থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন পরোপকারী ও  কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তাঁর মতোই করে বড়ো হয়েছেন বর্তমান দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই প্রতিফলন আমরা নিত্য শেখ হাসিনার জীবনাচারে দেখতে পায় । সমাজের অবহেলিত ও দুস্থ মানুষের খবর যখনই শেখ হাসিনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম  কিংবা পত্রপত্রিকায় দেখতে পান তখনই তিনিই উদ্যোগ নিয়ে সেসবের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করেন। তাঁর এসব উদ্যোগের মধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতা অন্যতম। বর্তমান সরকার প্রধান শেখের বেটি শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রদানে বদ্ধপরিকর।  প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের সুরক্ষা প্রদানের অনন্য দলিল। শুরুতে ১,০৪,১৬৬ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে জনপ্রতি মাসিক ২০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ জন এবং জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার ২৫০ হিসেবে বার্ষিক বরাদ্দ ছিল ৬০.০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয়বার শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ২০০৯-১০ অর্থ বছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৬০ হাজার জনে, মাসিক ভাতার হার ৩০০ টাকায় এবং বার্ষিক বরাদ্দ ৯৩.৬০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। ২০১০-১১ অর্থ বছরে উপকারভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৮৬ হাজার জনে উন্নীত করা হয় এবং মাথাপিছু মাসিক ভাতা ৩০০ টাকা টাকা হিসেবে বার্ষিক বরাদ্দ ১০২.৯৬ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ২০ লক্ষ ০৮ হাজার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মাসিক ৭৫০ টাকা হিসেবে ১৮২০ কোটি টাকা প্রদান করা হচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নিবিড় তদারকিতে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণে প্রায় শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এদেরও  ১০ টাকার বিনিময়ে সকল ভাতা ভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে জিটুপি পদ্ধতিতে ভাতার অর্থ পরিশোধ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

এছাড়ায় বিভিন্ন পত্রপিত্রকায় বিরল রোগীদের খবর শেখ হাসিনার চোখে পড়লেই তাদের চিকিৎসার দায় দায়িত্ব নিজেই থাকেন।

সম্প্রতি বছরে বৃক্ষ মানব আবুল বাছানদারের কথা নিশ্চয় আমরা ভুলে যাই। ভুলে যাইনি সাতক্ষীরায় মুক্তামনির কথা। সচেতন নাগরিক হিসেবে মহীয়সী নারী শেখ হাসিনার এসব বদান্যতামূলক কর্মকাণ্ড পাঠক সমাজে তুলে ধরায় দায়িত্ব এড়িয়ে যাবার সুযোগ নেই। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখে শেখ হাসিনা খুলনার বৃক্ষমানব হিসেবে পরিচিত আবুল বাজানাদারের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৬ সালে বৃক্ষমানব আবুল বাছানদেরকে খুলনা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আড়াই বছর এখানেই তারা চিকিৎসা দেয় হয়।এখানকার চিকিৎসকরা তার হাতে ও পায়ে ২৫টি অস্ত্রোপচার করে।  আবুল বাজানদার ১০ বছর ধরে হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছিলেন।

২০১৭ সালেরে জুলাই মাসে সাতক্ষীরার বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির সংবাদ শেখ হাসিনা দেখতে পান। সেই সংবাদের ভিত্তিতে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির চিকিৎসার দায় দায়িত্বও শেখ হাসিনা নেন। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় মুক্তামনিকে। সেখানে মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত হয় বোর্ড। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তারপর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড। সেখানে পচে দুর্গন্ধ ছড়াতো।  কয়েক দফা অস্ত্রোপচার শেষে ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি নেওয়া হয় মুক্তামনিকে। এরপর আর ঢামেকে যেতে রাজি হয়নি মুক্তামনি। বাড়িতেই চলছিলো তার চিকিৎসা। সেখানেই মুক্তামিন শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।

জন্মের পর থেকে জোড়া লাগা অবস্থায় ১০ মাস একসঙ্গে বড় হয়েছে তোফা-তহুরা। তাদের পিঠের কাছ থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত পরস্পর যুক্ত ছিল। পরে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই জোড়া লাগা শিশু তোফা ও তহুরাকে পৃথক করেন চিকিৎসকরা। দেশে এ ধরনের অস্ত্রোপচার এটিই প্রথম। বর্তমানে ভালো আছে তারা। তাদের থাকার ঘরও নির্মাণ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

সময়ের প্রবাহে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পাশাপাশি মানবতার হাত যেন প্রসারিত হচ্ছে। বিশ্ব মানবতার নেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার প্রশংসা বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বারংবার বিশ্ব দরবারে পৌঁছে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার হৃদয়ের বদান্যতার কারণে বিশ্ববাসী আজ তাকে মাদার অব হিউম্যানটির মত হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার উচ্চাসনে বসিয়েছেন। যার প্রতিদান শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে বহুবার বিশ্ববাসীকে দিয়েছেন।

লেখক পরিচিতি: সাবেক সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭