ইনসাইড বাংলাদেশ

সুশীলদের আসল রূপ দেখালেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/10/2021


Thumbnail

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, দারিদ্র্যকে গ্রামীণ ব্যাংক জাদুঘরের পাঠাতে পারেনি বরং গ্রামীণ ব্যাংকই এখন জাদুঘরে যাওয়ার পরিস্থিতিতে গেছে। ২০০৬ সালে তার নোবেল প্রাপ্তির পর যারা উচ্ছ্বসিত হয়েছিল, যারা বাংলাদেশের যে সমস্ত নাগরিকরা নিজেদেরকে সম্মানিত বোধ করেছিলেন তাদের বিস্ময়ের ঘোর কাটতে বেশি সময় লাগেনি। নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পরপরই ড. মুহাম্মদ ইউনুস একটি রাজনৈতিক দল গড়ার ঘোষণা দেন এবং এই রাজনৈতিক দলের মহাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের একটি বড় অংশ। এরপর রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে সরে আসেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

ওয়ান-ইলেভেনে অনির্বাচিত সরকার প্রধান হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আমন্ত্রণ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন এই যুক্তিতে যে, মাত্র ২-৩ বছরের জন্য ক্ষমতায় থেকে তার হবে না, তিনি আরও দীর্ঘ সময় ক্ষমতা চান। এরপর বাংলাদেশ নিয়ে এক ধরনের বিতৃষ্ণায় ভুগতে শুরু করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই বাঙালি। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্ভাসিত হতে থাকেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বক্তৃতা, পুরস্কার অর্জন তার প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায়। এর মধ্যে শুরু হয় সামাজিক ব্যবসা। সামাজিক ব্যবসা কার্যক্রম নিয়েই তিনি বিশ্বে ব্যস্ত হয়ে যান। কিন্তু বাংলাদেশের কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাক, সঙ্কট, ক্রান্তিকাল বা সমস্যায় এদেশের জনগণ তাকে পাশে পায়নি। বাংলাদেশের দারিদ্রতা, বাংলাদেশের বন্যা, বাংলাদেশের ক্ষুধা, বাংলাদেশের মানুষের যাপিত জীবনের কষ্ট, কোন কিছুই ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পর্শ করেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে যাওয়ার আশা করছেন। একাধিক মামলায় আদালত থেকে তাকে জামিন নিতে হচ্ছে। এই মামলাগুলো বিচিত্র। মামলাগুলো সোজাসাপ্টা ভাষায় শ্রমিকদেরকে ঠকানো।

আজ একটি মামলায় আবার জামিন নিয়েছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে তিনি জামিন নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ শ্রমিক ঠকানোর। তিনি তার গ্রামীণ টেলিকম নামে প্রতিষ্ঠানের ১০১ জন কর্মচারীকে চাকরিতে স্থায়ীকরণের কথা দিয়েও অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন। শ্রমিকদের অংশগ্রহণে তহবিল এবং কল্যাণ তহবিল গঠন করেননি। কোম্পানির লভ্যাংশ এর ৫ শতাংশে শ্রমিকদের কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। ড. মাহমুদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেছিলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক হলেন গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতা নারীরা। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতার নারীরা আসলে গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক কিনা এই প্রশ্নের উত্তর কেউ খুঁজেনি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের ঠকানো এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা, কথায় কথায় যেকোন কর্মচারী ছাঁটাই করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গ্রামীণ ব্যাংকের যে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেখানেও তার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ উঠেছিল শেষ পর্যন্ত।

এখন প্রশ্ন হলো, ইউনূস কেন এসব করছেন? ড. ইউনূস সাহেবের কর্মকাণ্ডগুলো, কর্মচারীদের ঠকানো, তাদের ন্যায্য হিস্যা না দেওয়া ইত্যাদি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের চরিত্র। বাংলাদেশের সুশীল নিয়ন্ত্রিত যে সমস্ত এনজিও, উন্নয়ন সংস্থা গুলো আছে সেগুলোর যদি ভেতরের চিত্র দেখা যায় সবগুলোতে একই অবস্থা। কিন্তু অত্যাচারিত, নিপীড়িত কর্মচারীরা পেটের তাগিদে বা নানারকম বাস্তবতার কারণে এটা প্রকাশ করেনা। প্রকাশ করলেও সুশীল সমাজ নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো বেমালুম চেপে যায়। বাংলাদেশ ড. ইউনূস ছাড়াও সুশীল সমাজ যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো চালাচ্ছে সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে হরহামেশাই এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে বিপুলসংখ্যক ছাঁটাই হলো। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কিভাবে লোক নিয়োগ হয়, কিভাবে ছাঁটাই হয় কেউ জানেনা। বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে বড় বড় ধরনের কথা বলেন যারা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর চালচিত্র এ রকমই প্রতারণাপূর্ণ। ড. মুহাম্মদ ইউনুস আসলে সুশীল সমাজের যে আসল রূপ সে রূপটি দেখাচ্ছেন। তারা যেটা বলেন বাস্তবে করেন তার উল্টো, সেটি ড. ইউনূসকে দিয়ে যেন প্রতিভাত হচ্ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭