ইনসাইড থট

একটা ঘটনা তৈরি করার আশংকাই সত্যি হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/10/2021


Thumbnail

জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকা `বাংলা ইনসাইডার` নয় অক্টোবর একটি শিরোনাম করেছিল। শিরোনাম "একটা ঘটনার অপেক্ষায় বিএনপি"।  খবরটিতে বলা হয়েছিল, বিএনপি সপ্তাহখানেকের ধারাবাহিক বৈঠক শেষে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। বর্তমানে আন্দোলন করার মত পরিবেশ পরিস্থিতি না থাকায় একটা ঘটনা তৈরি করার প্রস্তাব উঠেছিল ওই বৈঠকে। বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন আইনজীবী এমনটাই বলেছিলেন বলে খবরটিতে বলা হয়েছে।

গত এক দশকে দল বা জোটটির ইতিহাস ঘাঁটলে `ঘটনা` তৈরি করার অনেক নজির রয়েছে। আগুন সন্ত্রাস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার পরিকল্পনার কথা জনগণ এখনো ভুলেনি।  নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল আন্দোলন, হেফাজতের আন্দোলন, সাঈদীকে চাঁদে দেখা আন্দোলন- সবখানে দলটির `হাওয়া` দেয়ার নজির রয়েছে।  

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনের পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করতে দুর্গাপূজা বা কোন পূজামণ্ডপকে টার্গেট করা একটা সহজসাধ্য ব্যাপার। অতি সহজে `প্রস্তুত` ধর্মান্ধ বাহিনীকে মাঠে নামানো যায় । একটা কিছু  ঘটানো যায় । একটা হুলস্থূল বা তাণ্ডব ঘটানো যায় । তাতে কি সাধারণ মানুষের মন জয় করা সম্ভব ? ২০১৫ সালের আগুন সন্ত্রাস থেকে দল বা জোটটির অর্জন কি ? সেসময় দেশব্যাপী তারা তাণ্ডব চালিয়েছিল, কিন্তু গণমানুষের মন কি জয় করতে পেরেছিল ? ওই ঘটনার পর  থেকে দেশের রাজনীতিতে বিএনপি যে অনেকখানি পিছিয়ে গেছে, তা তাদের পরম বন্ধুরাও স্বীকার করবে।

আগুন সন্ত্রাসের মত ধ্বংসাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পূজামণ্ডপের `কুপরিকল্পনা`টি করা হয়েছিল বলে অনেকে মনে করছেন | ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে। পরদিন শুক্রবার। জুম্মাবাদ আগুনে ঘি ঢালার ষড়যন্ত্র। খুবই সুন্দর `কুপরিকল্পনা`। কিন্তু সরকারের তড়িৎ ও কার্যকরী পদক্ষেপে সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে | বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ এমন পরিকল্পনা করতে পারে, বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন কোন মানুষ এটি আদৌ বিশ্বাস করে না। কোন ঈমানদার মুসলিম এটি করতে পারে তাও কোন বিবেকবান মানুষ বিশ্বাস করে না। কারা করতে পারে, কেন করতে পারে -তা দেশ ও বিদেশে সবাই ইতিমধ্যে বুঝে গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের তড়িৎ পদক্ষেপ ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসমূহ ইতিমধ্যে দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।

`ঘটনা` তৈরি করতে পূজামণ্ডপের ওপর `আছর` করা ইস্যুবিহীন দলগুলোর একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এটি বন্ধ করতে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এখন একটা গণদাবী।  পাশাপাশি  মাঠপর্যায়ে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। পাড়ায় মহল্লায় `সম্প্রীতি রক্ষা` কমিটি করে তাঁরা সামাজিক নজরদারি বাড়াতে পারে। এছাড়া দেশের সব উপাসনালয়, নিদেনপক্ষে সংখ্যালঘুদের সব উপাসনালয় সিসিটিভির আওতায় আনার চিন্তা করা যেতে পারে। পল্লী এলাকার উপাসনালয়ে সোলার চালিত সিসিটিভি লাগানো যায়। ধর্ম মন্ত্রণালয় সিসিটিভি বিষয়ক  প্রস্তাবনাটির সম্ভাব্যতা নিয়ে আই টি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে পারে |  ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ও সকল ধর্মের মানুষের নির্বিঘ্নে ধর্ম পালনে বদ্ধপরিকর এই সরকারই পারে এমন ধরণের একটা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে।

লেখক: প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭