কালার ইনসাইড

চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত ‘চন্দ্রাবতী কথা’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/10/2021


Thumbnail

শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) দেশের চারটি সিনেপ্লেক্স এ মুক্তি পেয়েছে এন রাশেদ চৌধুরী পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘চন্দ্রাবতী কথা’। চারদিকে যখন নকল ছবির ছয়লাম তখন শতভাগ খাটি বাংলা চলচ্চিত্র হিসেবে দর্শকদের মন জয় করছে ‘চন্দ্রাবতী কথা’। ছবিটি বাংলাদেশে মুক্তির আগে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি প্রদর্শনী হয়েছে। ছবিটি দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসাও পেয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরেও পাচ্ছে দর্শকের সমান প্রশংসা। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপেও সিনেমাটি নিয়ে কথা বলছেন অনেকে।  

শুক্রবার ছবিটি মুক্তির পর ছবিটি দেখে  সরোজমি্নে দর্শকদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা বেশ  তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন ছবিটি দেখে। এবার দেখে নেয়া কারণে ছবিটি মুক্তির পর পরই  প্রশংসায় ভাসছে। 

বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবি: কবি চন্দ্রাবতীকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবি। মলুয়া, দস্যু কেনারামের পালা এবং রামায়ণ তার অন্যতম সৃষ্টি। তবে তার সৃষ্টির চেয়ে ঢের বেশি নাটকীয় এবং একইসঙ্গে বিয়োগান্তক তার নিজের জীবন। সিনেমায় তার সৃষ্টির সাথে সাথে পোট্রে করা হয়েছে তার নিজের জীবনকেও।

এদিকে বাংলা সিনেমায় পিরিওডিক্যাল সিনেমা নির্মাণ হলেও ষোড়শ শতকের সময়কাল নিয়ে সিনেমা বিরল। একবিংশ শতকে এসে প্রায় চারশো বছর আগের সময়কালকে ধারণ করেছে ‘চন্দ্রাবতী কথা’ সিনেমাটি।

ছবিটিতে  চন্দ্রাবতী কিংবা তার সৃষ্টি ফোকাস হলেও পাশাপাশি চারশো বছর আগের সমাজবাস্তবতা সম্পর্কেও দর্শক ধারণা পাচ্ছেন। কেমন ছিলো সেই সময়ের বাংলা। সেই সময়ের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সহ ধর্ম, রাজনৈতিক অবস্থান- সম্পর্কেও ধারণা  পাচ্ছে বর্তমান সময়ের দর্শকরা।

১ ঘন্টা ৪৪ মিনিটের এই সিনেমাটিতে অনেকদিন পর কাঁসার থালা দেখানো হয়েছে যা কিনা বর্তমান সময়ের ছবিতে দেখাই যায় না বললে চলে। ছবিটি দেখার পর অনেকেই বলছেন, ছবিটির নির্মাণশৈলী, গল্প, অতীতের পটভূমি, নাটকীয় উপস্থাপনা সকল কিছুই ছিল চিত্তাকর্ষক। এমন ভালো ছবি দেশে নিয়মিতভাবে তৈরি হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ছবির মুখ উজ্জ্বল হবে। চন্দ্রাবতীর জীবনী দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে সিনেমাতে ওই সময়ের সামাজিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপট, ঘটনা এবং পারফরম্যান্স স্টাইলও উঠে এসেছে।

চন্দ্রাবতীর জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের পাতুয়ারীতে হয়েছে ছবির বেশির ভাগ দৃশ্যের শুটিং। সে গ্রামের সাধারণ মানুষও ছবিতে অভিনয় করেছে। বিশেষ করে পালাকার বা বয়াতি চরিত্রগুলোতে সেখানকার মানুষই অভিনয় করেছেন। অংশ নিয়েছেন খোকন বয়াতি ও তার দল, শংকর গায়েন, লাল মাহামুদ ও তাঁর জারির দল। নির্মাতা রাশেদ চৌধুরী জানান, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চন্দ্রাবতীর জন্মস্থান ছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোনার অন্যান্য এলাকায় বিভিন্ন ঋতুতে শুটিং হয়। ভারতে হয়েছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। গবেষণা, শুটিং পূর্বপ্রস্তুতি, শুটিং, পোস্ট প্রোডাকশন—সব মিলিয়ে ছবিটি শেষ করতে পাঁচ বছরের মতো সময় লেগেছে।

ভিন্ন কিছু দেখার ইচ্ছে থাকলে, ভিন্ন কিছুর স্বাদ গ্রহণের ইচ্ছে থাকলে, চন্দ্রাবতী কথা দেখতে পারেন। আজ থেকে ৪০০ বছর আগের সময়কে যেভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তা বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাস হয়ে থাকবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭