নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 18/10/2021
আজমেরী হক বাঁধন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথম নায়িকা হিসেবে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করার কারণে অনেক নামি নির্মাতার কানেই পৌঁছে যায় বাঁধনের নাম। আর তাই তো এবার ডাক পেলেন বলিউড থেকে। বর্তমানে নেটফ্লিক্সের প্রযোজনায় বলিউড নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’ বলিউডের চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন এই অভিনেত্রী। গত ১১ই অক্টোবর থেকে সিনেমাটির শুটিং শুরু করেছেন। এ কারণে বাঁধন এখন দিল্লিতে অবস্থান করছেন।
দিল্লি থেকে মুঠোফোনে বাংলা ইনসাইডারের কথা হয় বাঁধনের। জানালেন ‘খুফিয়া’ চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়ার পেছনের গল্প সহ শুটিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা।
বাংলা ইনসাইডার: ‘খুফিয়া’ সিনেমায় যুক্ত হওয়ার পেছনের গল্পটি জানতে চাই
বাঁধন: আমি যখন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার জন্য কান উৎসবে ছিলাম তখন অনুরাগ কাশ্যপের সাথে দেখা হয়। পরদিন একজনের মাধ্যমে আমাকে নক করে বিশাল ভরদ্বাজের সিনেমার জন্য। তখন ব্যস্ততার কারণে অডিশনের সময় পাইনি। জানিয়েছিলাম- দেশে ফিরে যোগাযোগ করব। দেশে ফিরে ঈদের পর যোগাযোগ হয়। তারা আমাকে স্ক্রিপ্ট পাঠায়। এরপর সিনেমাটির জন্য রিহার্সেল করি। রিহার্সেল করে অডিশন ক্লিপটা তাদের পাঠালে সেটি দেখে নেটফ্লিক্স ও বিশাল ভরদ্বাজ আমাকে চূড়ান্ত করেন। আমাকে যেদিন চূড়ান্ত করা হয় এরপরের দিন সকালে আমার সাথে প্রথম বিশাল ভরদ্বাজের জুম মিটিং হয়। এভাবেই যুক্ত হওয়া।
বাংলা ইনসাইডার: চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি কেমন ছিল?
বাঁধন: আসলে আমি যেহেতু অনেক কম কাজ করি সেক্ষেত্রে এখন আমার একটি চরিত্র থেকে অন্য একটি চরিত্রের জন্য প্রস্তুতিটা ভিন্ন। আগে এমন ছিলো না। এখন সময় নিয়েই একটি চরিত্র ধারণ করতে চাই। সেক্ষেত্রে বেশ একটা লম্বা গ্যাপ ছিলো। তাছাড়া পরিচালক যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করেছি।
বাংলা ইনসাইডার: নির্মাতা হিসেবে বিশাল ভরদ্বাজকে কেমন লাগছে?
বাঁধন: তার কাজ আগে থেকেই ভীষণ পছন্দ! বলিউডের সব ধরণের কাজই আমার পছন্দ। কিন্তু তার কাজ আলাদা- এটা সবাই জানে। ভালো কাজ করেন এমন মানুষের কাছে এলে মানুষটাকে খারাপ লাগে- আমার ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। ধরুন, আপনার কারো অভিনয়, নির্মাণ ভালো লাগে। কিন্তু তার কাছে যাওয়ার পর তার প্রতি ভালো লাগা বা ওই মুগ্ধতা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বিশাল ভরদ্বাজ অন্যরকম। মানুষ হিসেবে এত ভালো, এত সিম্পল যে, বলে বুঝাতে পারব না। তাকে আমার খুব ভালো লেগেছে। তার স্ত্রী, ছেলের ব্যবহারও অমায়িক। আমি সত্যি খুব লাকি যে তার মতো একজন পরিচালকের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছি।
বাংলা ইনসাইডার: সহ শিল্পীরা কতটা হেল্প করছেন?
বাঁধন: সব থেকে মজার বিষয় হলো তারা পুরো টিমটাই খুব কো-অপারেট করছেন। উনারা অনেক বেশী প্রফেশনাল। আমাদের সাধারণত এই ভাবে কাজ করার সুযোগ হয়না। আমাদের এখানে আসলে এই বিষয়টা এখনো গড়ে উঠেনি। মোট কথা টিমের সবাই সম্ভব ভালো।
বাংলা ইনসাইডার: সম্প্রতি এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস এর ১৪তম আসরে সেরা অভিনেত্রীর তালিকায় মনোনয়ন পেয়েছেন। অনুভূতি কেমন?
বাঁধন: যেকোনো সম্মাননা প্রাপ্তি একজন শিল্পীর জন্য অনেক বেশী আনন্দের। এমন একটা জায়গায় মনোনয়ন পাওয়া তাও আবার বেস্ট অভিনেত্রীর তালিকায় এত এত বড় মাপের অভিনেত্রীদের সাথে। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম কোন অভিনেত্রী এমন একটি জায়গায় মনোনয়ন পেয়েছে সেটিও একটি বিশাল ব্যাপার। তবে আমি কিছুই করিনি শুধু মাত্র পরিশ্রম ছাড়া। যা করার করেছেন সিনেমাটির পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। তাকে বিশ্বাস করে শুধু অনুসরণ করেছি। যাদের সাথে প্রতিযোগিতা হচ্ছে এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোনো অভিনেত্রী হিসেবে আমি এমন সুযোগ পেয়েছি। এটি ভাবতেই অন্যরকম লাগছে। এটি চিন্তা করার ক্ষমতাই আমার নেই।
বাংলা ইনসাইডার: সিনেমাটি নিয়ে কতটা আশাবাদী?
বাঁধন: সিনেমাটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে। যাদের ভালো লাগবে তারা সিনেমাটি দেখবেন, যাদের ভালো লাগবে না তারা দেখবেন না। আমি মনে করি না, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সবাই দেখবেন, সবার ভালো লাগবে। সবার একই রকম ভালো লাগবে এমনটা আমি প্রত্যাশা করি না। কারণ আমার সবাইকে একই রকম ভালো লাগে না। সুতরাং আরেকজনের উপর এটা আমি চাপিয়ে দিতে পারি না। আমার মনে হয়, এই প্র্যাকটিস যত দ্রুত শুরু হবে ততই ভালো হবে। কারণ আমরা খুবই কুৎসিত একটা চর্চার ভেতরে ঢুকে গেছি, যেটা ঠিক না।
নভেম্বরে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ মুক্তি পাবে। দেশে ফিরেই ছবিটির প্রচারণায় অংশ নেবেন এই অভিনেত্রী।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭