ইনসাইড গ্রাউন্ড

ক্রিকেটে আর কত দুঃসপ্ন সঙ্গী হবে বাংলাদেশের?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/10/2021


Thumbnail

মাঠ ও মাঠের বাইরের সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশ দলের। বাইশ-গজের যুদ্ধে যেমন পরাস্ত হচ্ছেন সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমরা, তেমনই মাঠের বাইরেও দুয়ো শুনতে হচ্ছে সমর্থকদের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর ওমান ও পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে সুপার টুয়েলভে পা রাখে বাংলাদেশ। এরপরে র সুপার টুয়েলভে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে দারুণ করেও শেষ পর্যন্ত বোলিংয়ে গিয়ে খেই হারিয়েছিল বাংলাদেশ, সেদিন ম্যাচটা হেরে গিয়েছিল ৫ উইকেটে। গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিং বিভাগের জন্য কাজটা আরও কঠিন করে রেখে গেছেন ব্যাটসম্যানরা। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ‘মাত্র’ ১২৪ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড ম্যাচটা ৩৫ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতে নিয়েছে। 

ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে কম রানের পুঁজি নিয়েও জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে আজ দুবাইয়ে ১২৫ রানের লক্ষ্য ইংল্যান্ড পেরিয়েছি অনায়াসে। অল্প রানের এই পুঁজি এই উইকেটে কাজেই দেয়নি। স্পিনার নাসুম বলেন, ‘এই উইকেটটা দেশের মতো নয়। স্পিনাররা টার্ন পাচ্ছিল না। আমরা চেষ্টা করেছি যেন ভালো করা যায়। এই রানেই আমরা লড়াইয়ের চেষ্টা করেছি। তবে সেটা আমাদের দ্বারা হয়নি।’ 

আগে ব্যাট করে কম রানের এই সংগ্রহ নিয়েও জেতার পরিকল্পনায় ফিল্ডিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। এই প্রসঙ্গে নাসুম বলেছেন, ‘নামার আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল এই রানেই যেন ইংল্যান্ডকে আটকাতে পারি। সেভাবেই বল করার চেষ্টা করেছি। বাইরে থেকে অনেক কিছু বোঝা যায়, কিন্তু ভেতরের ব্যাপারটা আলাদা।’ তবে এই ইংল্যান্ডকে বেশি রানের লক্ষ্য না দিতে পারার কারণ হিসেবে নাসুম মনে করছেন নিজেদের পাওয়ার প্লের দুর্বলতা। প্রথমে রান করতে না পারা এবং দ্রুত উইকেট হারানোই দল পিছিয়ে পড়ছে। গতকালও প্রথম ৬ ওভারে ২৭ রান তুলতেই বাংলাদেশ হারিয়েছে ৩ টপ অর্ডারকে। সংবাদ সম্মেলনে নাসুমও একই কথা বললেন, ‘প্রথম ৬ ওভারে আমরা রান করতে পারছি না বলে পিছিয়ে যাচ্ছি। রানও তুলতে পারছি না আবার উইকেটও পড়ে যাচ্ছে। তবে এসব নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়। সবাই চেষ্টা করছে ভালো কিছু করার, কিন্তু কিছুই সেভাবে হচ্ছে না।’

ক্রিকইনফোর হিসাব, আবুধাবির এই মাঠে বিশ্বকাপের আগপর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ওভারপ্রতি গড়ে ৭.১ করে রান উঠেছে। সে হিসাবে বাংলাদেশের জন্য ‘পার স্কোর’ ছিল ১৪২। এরই মধ্যে ১৮ রান কম নিয়ে বোলিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ দল। দল হেরে গেলে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে ‘আমরা আরও ১০-১৫টি রান করতে পারলে ম্যাচটা অন্য রকম হতো’–জাতীয় কথা শোনার প্রস্তুতি নিতে পারেন।

আরও ১০-১৫ রান যে হয়নি, সেটি বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের ধরনের দায়। এই ব্যাটিং যে টি-টোয়েন্টির সঙ্গেই কোনোভাবে যায় না। টি-টোয়েন্টি মানে তো চার-ছক্কার বিজ্ঞাপনই। বাংলাদেশ ইনিংসে ছক্কা তো ইনিংসের ১৯তম ওভারের আগপর্যন্ত দেখাই যায়নি, ১৯তম ওভারে ৯–এ নামা নাসুম আহমেদ টানা দুটি ছক্কা মেরেছেন বলে রক্ষা! পুরো ইনিংসে চারই দেখা গেছে সাকল্যে ১০টি। প্রতি দুই ওভারে একটি করে চার! ছক্কা প্রতি দশ ওভারে একটি করে। ৯ বলে ১৯ রান করা নাসুম আহমেদের। সত্যি বলতে ১৯তম ওভারে আদিল রশিদকে নাসুমের দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকানোর বাইরে পুরো ইনিংসে একবারও মনে হয়নি, বাংলাদেশ ‘টি-টোয়েন্টি’ খেলছে। বিস্ময়কর হলেও সত্য ১২০ বলের ইনিংসে ৫১ বলে রান পায়নি বাংলাদেশ! এরপর আর টি-টোয়েন্টিতে জয় প্রত্যাশা করা যায়? দুই হারে বিশ্বকাপের সেমি۔ফাইনালে খেলার স্বপ্নটাও এখন ধূসর! আর কত দুঃসপ্ন সঙ্গী হবে বাংলাদেশের?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭