ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আবার অশান্তির আশঙ্কা কাশ্মীরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/10/2021


Thumbnail

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর প্রথম কাশ্মীর সফর শেষ হতে না হতেই দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাশ্মীর উপত্যকা আবার অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। যা আপাত দৃষ্টিতে বেশ অস্বস্তির কারণ ভারত সরকারের জন্য।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্তায় বলা হয়েছে, শ্রীনগরের ডাক্তারি পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএলএফ) উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে ভারতের লজ্জাজনক হারের পর ভারতের কোনো কোনো শহরে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করা হয়। অভিযোগ, তাঁরা পাকিস্তানের জয়ে উল্লসিত হয়েছিলেন। শ্রীনগরের দুটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা পাকিস্তানপন্থী স্লোগান দিতে দিতে সেদিন উল্লাস করেন বলে অভিযোগ।

উল্লাস প্রকাশের সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। এরপর পরই জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ শ্রীনগরের গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের হোস্টেল ওয়ার্ডেন, কলেজ দুটির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের পাশাপাশি বেশ কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করে।

সন্ত্রাসী সংগঠন ইউএলএফ হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। যাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তারা জানিয়েছে। এই সংগঠন সম্প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকসহ বেশ কয়েকজন হিন্দু-শিখকে হত্যার দায় নিয়েছে।

এদিকে ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হয়েছেন দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি।

ছাত্রদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনে মামলা করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের কথায়, পুলিশি তদন্ত চলছে। কাউকে এখনো আটক করা হয়নি। সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকার দেশবিরোধী শক্তির মোকাবিলা কড়া হাতে করবে।

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগের খবর জানাজানি হতেই কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনায় মুখর হয়েছেন ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি। ফারুক বলেছেন, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সময় থেকে ধীরে ধীরে কাশ্মীরে একটা আগ্নেয়গিরি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের জয়ে উল্লাস দেখানোর উদ্দেশ্য বিজেপিকে প্ররোচিত করা। এই ঘটনায় বিজেপির চোখ খুলে যাওয়া উচিত। বোঝা উচিত কেন ছোট ছেলেরা এমন করছে।

সরকারকে সতর্ক করে মেহবুবা বলেছেন, সরকারের আদৌ প্রতিশোধপরায়ণ হওয়া উচিত নয়। পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলে তাদের আরও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। বরং সরকারের দেখা উচিত কেন এই সব অল্পবয়সী পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছে। মেহবুবা বলেন, দুর্ভাগ্য এটাই যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কাশ্মীরিদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলবেন বলার পরই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে ইউএপিএর মতো কালাকানুনে অভিযোগ দায়ের করা হলো।

বিজেপির প্রদেশ নেতৃত্ব অবশ্য শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষপাতী। মেহবুবার সমালোচনা করে জম্মু-কাশ্মীরের বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়না বলেছেন, ওঁদের এই তালেবানি মনোবৃত্তি ঝেড়ে ফেলা উচিত। তিনি বলেন, যারা পাকিস্তানের জয়ে নাচ-গান করেছে, প্রত্যেককে দেশের বিরুদ্ধাচরণ ও ষড়যন্ত্রের অপরাধে জেলে পোরা দরকার।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭