ইনসাইড ইকোনমি

মুনাফার আরেক ধাপ ডিবেঞ্চার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/11/2017


Thumbnail

সুরক্ষিত ভবিষ্যতের আশায় সঞ্চয় নিয়ে আমরা সবাই কম বেশি চিন্তা করি। সঞ্চয় নিয়ে কথা উঠলেই সবার আগে ব্যাংকের কথা মাথায় আসে। কিন্তু সেখানে তো সুদের হার এখন অনেক কম। তাহলে? ঝুঁকি থাকলেও বেশি লাভের আশায় ছুটে যাই শেয়ারবাজারে। অথচ অনেক কম ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বন্ড বা ডিবেঞ্চারে আগ্রহ নেই আমাদের। প্রচার কিংবা পরিচিত না থাকায় সাধারণ মানুষ জানেই না নিরাপদ এই বিনিয়োগের কথা।এর আগে বন্ড নিয়ে আমরা বিস্তর কথা বলেছি। আজ জানব ডিবেঞ্চার সম্পর্কে।

ডিবেঞ্চারও বন্ডের মতই এক ধরণের ঋণপত্র।শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহে এক সময়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ছিল এটি। নব্বইয়ের দশকে ১৪টি কোম্পানি ডিবঞ্চোর ইস্যু করে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে ৮টি ডিবেঞ্চার তালিকাভুক্ত আছে। প্রায় সবগুলোর অবসায়ন সময় অনেক আগে পেরিয়ে গেছে। আবার বন্ড ইস্যুকারী চারটি কোম্পানি নিজেরাই স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুতও হয়ে গেছে।

ডিবেঞ্চার কি?
সাধারণত বড় স্বনামধন্য কোম্পানি মূলধন সংগ্রহে এটি ইস্যু করে। ডিবেঞ্চারে নির্দিষ্ট হারে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বিনিয়োগেকারীদের সুদও দেওয়া হয় ।তবে ডিবেঞ্চারের বিপরীতে সাধারণত সম্পদ বন্ধক বা অন্য কোন জামানত থাকে না। ইস্যুকারী কোম্পানির প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসই একজন বিনিয়োগকারীর প্রধান ভরসা। প্রতিটি ডিবেঞ্চারের একটি ট্রাস্টি থাকে। কোনো কারণে ইস্যুকারী কোম্পানি ডিবেঞ্চারের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ট্রাস্টি সে দায় বহন করে থাকে।

ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিধিবদ্ধ যে কোনো কোম্পানি বা সংস্থা এসইসির অনুমোদনক্রমে বাজারে ঋণপত্র ছেড়ে তার বিপরীতে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। তবে ব্যাংকের বেলায় এসইসি ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।এতে সুদের হার উল্লেখ করা থাকে। সে অনুসারে নির্দিষ্ট সময় পর পর বন্ডের মতোই ডিবেঞ্চারের বিপরীতে সুদ দেওয়া হয়। সুদের সঙ্গে মূলধনের কিছু অর্থও দেওয়া হয়। তবে এটি ডিবেঞ্চারের ধরনের উপর নির্ভর করে। ডিবেঞ্চার দুই ধরনের হতে পারে- কনভার্টেবল এবং রিডেমেবল। কনভার্টেবল ডিবেঞ্চারের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে ওই সিকিউরিটিজের একটি অংশ, ক্ষেত্র বিশেষে পুরোটা শেয়ারে পরিণত হয়। অন্যদিকে রিডেমেবল ডিবেঞ্চার হচ্ছে এমন একটি ঋণপত্র নির্দিষ্ট সময় পর যার পূর্ণ অবসান ঘটে।

বন্ড ও ডিবেঞ্চারের মধ্যে পার্থক্য
ডিবেঞ্চার সাধারণত স্বল্প মেয়াদী হয়। কিন্তু বন্ড স্বল্প এবং দীর্ঘ-উভয় ধরনের হতে পারে। তবে ডিবেঞ্চারের তুলনায় বন্ড বেশি সুরক্ষিত। কারণ বেশিরভাগ বন্ডই সরকারি সংস্থা জারি করে।তবে এতে সুদের হার কম থাকে।বিপরীতে ডিবেঞ্চারগুলি কিছুটা অরক্ষিত ঋণ হলেও উচ্চ হারের সুদ পাওয়া যায়।কোম্পানি দেউলিয়া হলেও, বন্ডহোল্ডারদের প্রথম অর্থ দিতে হয়।কিন্তু ডিবেঞ্চার হোল্ডারদের প্রতি দায়বদ্ধতা কম থাকে।ডিবেঞ্চারের হোল্ডারদের পর্যায়ক্রমে সুদ দেওয়া হয়।

বন্ড বা ডিবেঞ্চারে কেন বিনিয়োগ করবেন?
কারণ এতে আকর্ষণীয় সুদ থাকে। সরকারি বন্ডে উঁচু দরের সুরক্ষা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে করছাড়ের সুবিধাও পাওয়া যায়। ফেস ভ্যালুর তুলনায় কম দামে কেনার সুযোগ থাকে। কিনতে পারলে, প্রকৃত আয় ছাপিয়ে যাবে ঘোষিত সুদকেও।

কী দেখে কিনবেন?
কেনার আগে অবশ্যই সংস্থার সুনাম, নির্ভরযোগ্যতা ও অতীত সাফল্য সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে হবে। কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং ‘এএএ’হলে ভাল, ‘এএ+’ হলেও চলতে পারে। সুদের হার বাজারের তুলনায় বেশি কি-না যাচাই করে নিন। আগে বন্ড বা ডিবেঞ্চার ইস্যু করে থাকলে, সময় মতো টাকা মেটানোর নজির আছে কিনা দেখে নিন। বন্ড বা ডিবেঞ্চারটির মেয়াদ কত? আগে ভাঙানোর সুবিধা কেমন? এছাড়া বন্ড বা ডিবেঞ্চার ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে কি না সেটা যাচাই করে তবেই বিনিয়োগ করুন।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭