ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছে পাকিস্তান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 28/10/2021


Thumbnail

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন করে নাক গলানো শুরু করেছে পাকিস্তান। একাধিক দ্বায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত কিছুদিন ধরেই পাকিস্তান বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করছে। তবে এবার শুধুমাত্র যে ধর্মান্ধ, মৌলবাদী, উগ্র সাম্প্রদায়িক দলগুলোর সাথেই পাকিস্তান দূতাবাস বৈঠক করছে তা না। মূলধারার কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সাথেও পাকিস্তান বৈঠক করেছে। বিশেষ করে ২০ দলীয় জোটের অন্তত তিনটি সংগঠনের সাথে পাকিস্তান দূতাবাসের বৈঠকের খবর পাওয়া যাচ্ছে। একই সাথে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটেরও কয়েকটি দলের সঙ্গে পাকিস্তান দূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তার বৈঠকের তথ্য পাওয়া গেছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পাকিস্তান নতুন করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে গত কিছুদিন ধরে আইএস এর তৎপরতা বেড়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এই খবরের রেশ কাটতে না কাটতেই পাকিস্তান দুতাবাসের রাজনৈতিক অঙ্গনে দৌড় ঝাঁপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কুটনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন বড় ধরনের কোন ঘটনা নেই, কোন উত্তেজনাও নেই। বরং বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটি স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এর মধ্যেই পাকিস্তান দূতাবাস কেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করছে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। 

পাকিস্তান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করেছেন এমন একজন বিএনপির নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এটি একটি রুটিন বৈঠক। বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি, বিএনপির ভুমিকা ও অবস্থান এবং রাজনীতি নিয়ে আমাদের ভাবনাগুলো জানার চেষ্টা করেন। এজন্য তারা কখনো চা চক্রে, কখনো নৈশভোজে বা কখনো মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন। তেমনি একটি রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তার সাথে তিনজন বিএনপি নেতার বৈঠক হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন। তবে এ বৈঠকে বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলনের এজেন্ডা, নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির ভাবনা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিএনপি কিভাবে চায় ইত্যাদি নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এলডিপির নেতা কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমেদ এবং কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের সঙ্গেও পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। এই বৈঠকে পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে কি বলা হয়েছে সে সম্পর্কে কোন মন্তব্য কোন পক্ষ থেকেই পাওয়া যায়নি।

তবে পাকিস্তান যখনই বাংলাদেশের রাজনীতির ব্যাপারে নাক গলায়, তখনই বাংলাদেশে নানা রকম অঘটন ঘটে। পাকিস্তান বাংলাদেশে সবসময় প্রতিক্রিয়াশীল সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠিকে মদদ দেয় এবং পৃষ্ঠপোষকতা করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগেও পাকিস্তান বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ব্যাপক তৎপর ছিল এবং সেই সময় বাংলাদেশে যেন দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ভালো করে সেজন্য আইএসআই চেষ্টা করেছিল বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ এর পর আস্তে আস্তে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের শীতলতা শুরু হতে থাকে এবং এসময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ সংকুচিত হতে থাকে। ২০১৩-১৪ তে বাংলাদেশ-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক তিক্ততার পর্যায়ে চলে যায়। সেসময় বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতার অভিযোগে পাকিস্তানি একজন কুটনীতিককে বাংলাদেশে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয় এবং এরপর নতুন রাষ্ট্রদূতকে গ্রহণেও বাংলাদেশ অসম্মতি জানায়। কিন্তু এতকিছুর পর আবার পাকিস্তান যখন নতুন করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মাঠে নামছে তখন অনেকেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭