ইনসাইড আর্টিকেল

আজ সংবিধান দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/11/2021


Thumbnail

আজ সংবিধান দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়। সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন। 

গত ৪৮ বছরে নানা প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংশোধনও হয়েছে ১৬ বার। তবে সংবিধানে উল্লেখ থাকা সুনির্দিষ্ট অনেক আইন প্রণয়নের নির্দেশনা এখনও কার্যকর হয়নি। ফলে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগ, ন্যায়পাল নিয়োগ, মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় নিম্ন আদালতকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইনে এখনও শূন্যতা রয়েছে।

আইনজ্ঞরা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকে সব সরকারের আমলেই সংবিধানে উল্লেখিত কিছু কিছু আইনের শূন্যতা পূরণের জন্য সুপারিশসহ দাবি উঠেছে। তবে সংশ্নিষ্ট বিষয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা খর্ব হওয়ার শঙ্কা থেকে কোনো সরকারই আইনগুলো প্রণয়ন করেনি। তা ছাড়া জনগণও সংবিধানের প্রকৃত উদ্দেশ্য আত্মস্থ করতে পারেনি। জনদাবি জোরালো হলে সরকারও সংবিধানে উল্লেখিত বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য হতো। এ সংকট নিরসনে সংবিধান সংশোধনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা যেতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সংবিধানের ৯৫(৩) অনুচ্ছেদে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য যোগ্যতর ব্যক্তি বাছাইয়ে আইন প্রণয়নের কথা বলা আছে। এ প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০১২ সালের ৩ জুলাই সংসদ ও ২০১৪ সালের ১৯ আগস্ট আইন কমিশন থেকেও বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের একাধিক রায়েও বিচারপতি নিয়োগে আইন প্রণয়নের জন্য কয়েক দফা নির্দেশনা রয়েছে। এর পরও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অন্যদিকে সংবিধানের ৪৪ (২) অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিম্ন আদালতকে সংবিধান ও মৌলিক অধিকার প্রশ্নে শুনানির এখতিয়ার প্রদান, ৭৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ন্যায়পাল নিয়োগ, ১১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগসহ বেশ কিছু আলোচিত বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার।

গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।’ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে রকমারি বল্লমের অজস্র খোঁচায়। চেষ্টা করা হয়েছে সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূল চরিত্র পাল্টে দেওয়ার। সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন রায় প্রদানের মাধ্যমে সচেষ্ট থেকেছেন এবং আছেন সংবিধানের মূল চরিত্র ও কাঠামোকে রক্ষা করতে। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালনকারী সরকার ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় `৭২-এর সংবিধানে বহুলাংশে ফিরে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭