ইনসাইড থট

আরো দশ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশকে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে


প্রকাশ: 12/11/2021


Thumbnail

মেজর জিয়াউর রহমান বাংলা বলতেন অবাঙ্গালিদের মতো। তিনি বাংলা লিখতেও পারতেন না, পড়তেও পারতেন না। সুতরাং তিনি হচ্ছেন আসলে অবাঙ্গালি। তার প্রথম ষড়যন্ত্র সফল হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতাসহ তার পরিবার এবং নিকট আত্মীয়দের হত্যার মাধ্যমে। আর তার দ্বিতীয় ষড়যন্ত্রে সফলতা আসে সাত নভেম্বর, ১৯৭৫। এই দুটি ষড়যন্ত্রেই জাসদের সরাসরি ভূমিকা ছিল। অনেকে হয়ত ভুলে গেছেন জাসদ সংগঠিত হওয়ার প্রথম বক্তব্যেই তারা বলেন, তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে যে কোনো প্রকারেই হোক না কেন, বঙ্গবন্ধুর সরকারের পতন ঘটাবে এবং তারা এ কথা ভালোভাবেই জানতো যে, বঙ্গবন্ধুর সরকারকে পতন ঘটাতে হলে তাকে হত্যা করার কোনো বিকল্প নাই। কারণ, বঙ্গবন্ধুকে জীবিত রেখে তারা বহুদিন ধরে, অন্তত ষাটের দশকে জাসদের নেতা কর্মীদের সঙ্গে আমরা যারা ছাত্র রাজনীতি করেছি, সকলেই জানতাম যে, বঙ্গবন্ধু এমন একটি পর্যায়ে তখন পৌঁছেছেন যে শুধু দেশেই না, বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুকে রেখে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হওয়া সম্ভব না। সুতরাং বলা চলে যে, তখন থেকেই জাসদ ইলেক্টেড এমপি থেকে শুরু করে যত রকম কাজ জাসদ করেছে সবই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরিবেশ সৃষ্টি করা। 

এখানে আমি একটি কথা উল্লেখ করতে চাই, তখনকার দিনে সম্ভবত জাসদই একটি সাড়া জাগানো রাজনৈতিক দল, যার কোনো রকম সফলতার ইতিহাস নেই। রাজনৈতিকভাবে তারা কোনো দিনই সফল হয়নি। তারা সফল হয়েছে একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বদৌলতে এমপি থেকে মন্ত্রী হওয়া। এটা দয়ায় হয়েছে। ভিক্ষুকরা যেমন ভিক্ষা করে, এবং আমরা তাদেরকে ভিক্ষা দেই, তেমনি আমি বলতে চাই শেখ হাসিনাও তাদেরকে ভিক্ষা দিয়েছেন। তারা ভিক্ষা করে সফল হয়েছে, রাজনীতি করে নয়। তখন নেত্রীর প্রয়োজন ছিল, তাই তাদের ব্যবহার করেছে। আমি তাদের মূল্য দেই টিস্যুর মতো। যেমন আমরা প্রয়োজন হলে টিস্যু ব্যবহার করি, আবার প্রয়োজন শেষে ফেলে দেই, তাদের ক্ষেত্রেও তাই।

এখন যদিও তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে আছে, ভবিষ্যতে যে তারা ষড়যন্ত্র করবে না, তার গ্যারান্টি নেই। একবার যে ষড়যন্ত্রকারী, সে আজীবনের জন্য ষড়যন্ত্রকারী। তারা বঙ্গবন্ধুর যে কথা বলে, এটা সত্য বলে। কারণ মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তাদের যে রুল, তা সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই ছিল। তারা আশা করেছিল, তাদের ষাটের দশক থেকে শুরু করা ষড়যন্ত্রের বীজ, যেটাকে তারা নিউক্লিয়াস বলে। তারা সেইভাবেই অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে এই, তারা তখন সেটিকে ভুলে যায়নি। কারণ যেহেতু তারা আগের থেকেই প্রস্তুত ছিল এবং এই কারণেই তারা রাতারাতি জাসদ ফ্রন্ট করতে পেরেছে। এই যে আজকের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তার লেখা পড়ে দেখেন। তৎকালীন জণকণ্ঠে তার লেখাগুলো যে কেউ পড়লেই বুঝবেন যে তিনি কি লিখতেন। এই যে মান্নান, মন্ত্রী ছিলেন, কি লিখেছিল? এগুলোতো সব ইতিহাস।

এখন অনেকেই বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রী সামনের নির্বাচনের পর অবসরে যাবেন। কিন্তু আমি বলতে চাই এটা যারা বলছে তারা আসলে ষড়যন্ত্রকারী। অনবড়ত ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছেন। তারা চাচ্ছেন কোনোভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যদি রাজনীতি থেকে দূরে রাখা যায়, তাহলে পরে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু এখন তো এসব প্রশ্নের সময় নয়। এসব প্রশ্নের জন্য অনেক সময় পরে আছে। আমি যখন প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনি কেন অবসরে যেতে চান, তিনি বলেছিলেন, আমার আর ভালো লাগছে না। আমি জীবনের বাকীটা সময় টুঙ্গিপাড়ায় কাটাতে চাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের রেখে যেতে পারেন না। তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন জনগণের ইচ্ছায়। এতো বছর জনগণের রাজনীতি করেছেন। জনগণই ঠিক করে দেবে ওনি কবে বিদায় নিবেন। আরো অন্তত ১০ বছর দেশকে সেবা দেওয়ার সক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আছে বলেই আমি মনে করি। তার পর দেখা যাবে ওনি কি করবেন।

আমার জানা মতে, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের লোকজন এমনিতেই দীর্ঘায়ু পান। তাদের বংশের মোটামুটি সব লোকই সাধারণ বাঙ্গালির তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন এবং কর্মক্ষমতাও তাদের তুলনামূলকভাবে বেশি। সুতরাং এত কর্মক্ষম একজন নেত্রীর অবসরের কথা যারা ইনিয়ে বিনিয়ে বাস্তবায়ন চাচ্ছেন, তারা শ্রেফ ষড়যন্ত্রকারী বৈকি কিছু নয়। এখন নেত্রীকে তার কাজ করার জন্য যে মনের জোর এবং তিনি যাতে উৎফুল্ল ভাবে আরো কাজ করে যেতে পারেন তার জন্য যে ফুয়েল এর প্রয়োজন সেই ফুয়েল তো দিতে হবে আমাদেরকে, জনগণকে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদেরকে। জনগণ তাদের কাজ ঠিকই করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, এমনকি ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে অনেকেই সেই ভাবে করেনা। আমি একটি জায়গায় আমি দায়িত্ব পালন করি, যেখানে প্রাক্তন ছাত্রলীগারদের নিয়ে আমার কাজ করতে হয়।

আমার খুব অবাক লাগে যে, এদের অনেকের ভিতরই ন্যূনতম নৈতিক বোধ নাই। তারা একসময় ছাত্রলীগ করেছেন। সুতরাং তাদের জন্য সব প্রাপ্য। আমি বলছি না যে আমি শতভাগ কাজ নিশ্চিত করতে পারি। বাট কমপক্ষে ৯০ শতাংশ সাকসেস রেট তো থাকতে হবে। অনেকেই না জেনে বলে থাকেন যে, প্রধানমন্ত্রী কাজে হস্তক্ষেপ করেন। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি, আপনি যদি আপনার কাজটি ঠিক করে করতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী কোনোদিনই আপনাকে বাধা দিবে না। বরঞ্চ যদি দরকার হয় সহযোগিতা করবে। এখন আপনাকে কাজ দেওয়া হল একটা, আপনি করলেন আরেকটা, তখন তো হস্তক্ষেপ করতেই হয়।

এই যে পরিবহন ধর্মঘট হলো, জনগণ ভোগান্তিতে পড়লো, শাহজাহান খান চাইলে এক মিনিটে এসব বন্ধ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নাই। করবেন কি করে? তিনি তো একসময় জাসদ করতেন। তার বিরুদ্ধে অন্তত এক হাজার নিরপরাধ মানুষকে মেরে ফেলার অভিযোগ আছে। আমার মামার বাড়িও মাদারিপুর। আমার দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি অন্তত ৭০ জনকে হত্যা করেছিলেন। পরবর্তীতে তাকেও মেরে ফেলা হয় অবশ্য। তো এই হচ্ছে জাসদ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭